পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
[ ঘটনাটা 2003 সালের । বাংলাদেশের কোন এক বিখ্যাত মেডিকেল হাসপাতালে। চরিত্র ঠিক রেখে নাম গুলো বদলে দেওয়া]
উর্মির অজ্ঞান শরীরটার পাশে বসে আমরা তিনজনে মিলে হিসাব কষি। চামড়া লাগবে, অনেক অনেক চামড়া। স্কিন গ্রাফটিং করতে হবে মেয়েটার।
কিন্তু চামড়াটা নিব কোথা থেকে । ওর তো সারা শরীর পোড়া!!
আমরা আলোচনা করি আর্টিফিশিয়াল কি কি আছে? কতটাকা লাগবে। পুওর ফান্ডে তো হবে না, তাইলে? টাকার অংকটা এত বড়, হতাশ লাগে!!!
আমি রাজা ভাইয়ের হাত চেপে ধরি।
ঃ ভাইজান, গয়না গাটি বেইচা দিমু। ওর মারে কথা দিসি।
ওর মা কইসে- " আমি আমার মায়ের সমস্ত দাবী তুইলা নিলাম। আপনি ওর মা, ওরে বাঁচান".........রাজা ভাই , উর্মি এখন আমার মেয়ে........আমি থাকতে.....
রাজা ভাই ঝাপসা চোখ আস্তে করে দেয়ালে ফিরায় তারপর আমাকে গাইল দেয়।
ঃ উর্মিরে বাঁচাবি , ভালো কথা। তোর মরণ ঠেকাইবো কেডা?
মানুষরে এত ভালবাসতে নাইরে ইমন। একদিন এমন প্রিয় মানুষের কাছ থেইকা এমন আঘাত পাবি, স হ্য হইবো না ।
মরবি তুই। আমি দিব্য চোখে দেখতাসি, তুই মরবি। তুই মরবি!!!!
[ আমার মনের ঘরে ঠা ঠা হাসি তড়পায়। আমারে কেউ বাঁচায় নাই , রাজাভাই, আমারে বাঁচানোর জন্য কোন ইমন ছিল না ঐ দিন..............লাশের আবার মরার ভয়!!!!!!]
বাইরে হাসি না।
ঃ যা হওয়ার হইবো।
কে সেরা সেরা। এখন চলেন রিডিং নেই। অনেক্ষণ কোন উত্থান পতন নাই!!!
সব দেখে শুনে আমরা খুশি হই। শি ইজ নাও স্টেবল। আউট অফ ইমেডিয়েট ডেনজার।
নিজেদের কে আস্ত নেপোলিয়ান বোন -অ্যাপার্ট লাগে। ক্লান্তিতে হাড্ডি খসে পড়ার যোগাড়!!!!
তাও অযথাই হাসি- হা হা , হি হি। খিক খিক!!!
ও. টির মামা ছুটে আসে।
ঃ আপনেরা কি একজন দিয়েই বছর কাটাইবেন নাকি অন্য রোগীরাও চিকিৎসা কিসুপাইবো?!!
উর্মিকে ওয়ার্ডে রেখে আমরা নাস্তা করতে যাই। রাজা ভাই হাটতে গিয়ে টলতেসে ।
এক হাতে বর্ণা আর হাতে আমি- দুই খুঁটি- কি করবো বুঝি না!
ঃ আমারে রিকশায় উঠায় দে।
ঃ রাজা ভাই , িকছু খান আগে , আপনার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে গেসে। বাসা পর্যন্ত টিকবেন?
ঃ গা গুলায় বমি আসতেসে ইমন। উলটা পুলটা কিসু খামু না, আমারে রিকশায় উঠায় দে।
ঃ রাজা ভাই, আপনারে বাসায় দিয়ে আসি?
ঃ নাহ! খালি তোর ভাবিরে একটা খবর দে যে আমি আসতেসি।
ঃ জি।
আমি আর বর্ণা টলটলায়মান সিপাহসালার অলৌকিক ক্ষমতাধর রাজাভাইরে রিকশায় উঠায় হুড তুলে দেই।
ঃ ড্রাইভার সাহেব, দেইখেন একটু। পইড়া গেলে টেলে আমি বিধবা হমু!!
বর্ণা কয়,
ঃ আমিও।
এত কষ্টের মধ্যেও রাজাভাই ফিক করে হেসে ফেলে।
ঃ গিনি্নরা , নাস্তা খাইয়া ওয়ার্ডে যাও। শর্মির কি হইলো , আমারে একটা কল দিস। যদিও ছোটটার অবস্থা অত খারাপ ছিলো না। গেলাম, খোদা হাফেজ!
আমি আর বর্ণা,
ভয় করি না বুশ , ব্লেয়ার
বান্দ ী মোদের লরা , ক্লেয়ার
হাগা ধুইবো ".........." লিৎসা
ডোনালড বানায় লাঞ্চে পিৎসা
ছাই দে মাজে ক্রফট বাবু
মোদের ভয়ে সবাই কাবু.................।
ইত্যাদি ইত্যাদি ছড়া কাটতে কাটতে লেডিস হোস্টেলের ক্যান্টিনে ঢুকি!!!!
[চলবে]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।