কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...
স্বাধীনতাকামী বাঙালীর বিরুদ্ধে পাকিস্তানীগো অভিযোগ ছিলো, তারা ইসলাম চায় না...আর তাই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীতায় আমরা এই দেশের একটা বড় অংশের ইসলামী চেতনায় উদ্্বুদ্ধ মানুষের অংশগ্রহণ দেখতে পাই...ইসলামের জন্য এরা অকাতরে জীবন দিতে পারে(?)...রাষ্ট্রীয় শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করনের চাইতে এরা ইসলামের বাতাবরনে থাকতে আগ্রহী হয়! ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে থাইকা শোষিত হওনের আকাঙ্খাও তাগো কাছে অনেক বড় হয়, জাতিগত মুক্তির আকাঙ্খার চাইতে।
আসলে সমস্যাটা এইখানেই বিংশ শতাব্দিতে একটা রাষ্ট্র যখন ভাঙা অথবা গড়া কিম্বা টিকাইয়া রাখনের প্রশ্ন আসে তখন এই জাতি কাহিনীটাই প্রধান হয়। জাতি রাষ্ট্রেরই স্বপ্ন দেখে মানুষ, তাইলে সে নিরাপদ বোধ করে...সংস্কৃতির বন্ধকী টাইপ নিরাপত্তা! আর তাই বাঙালীগো সাথে আরেকটা জাতিরই যুদ্ধ হইছিলো 71'এ। পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী, যারা ধর্মের নামে একটা দেশের মালিকানা লইছিলো! আর তাগো লগে মিত্র ভাবাপন্ন ছিলো এই দেশের সেইসব মানুষ যারা ঐ একই ধর্ম ভিত্তিক রাষ্ট্রের আনুগত্য চাইতো। কিন্তু ধর্মভিত্তিক কি জাতি হয়? জাতির যেই সব আভিধানিক শব্দ আমরা জানি তাতে কি ধর্মকেন্দ্রীক জাতি হওনের কোন স্কোপ আছে? কে জানে! আমার জ্ঞান কম বিধায় হয়তো আমি জানি না। যারা জানেন তারা আওয়াজ দিলে খুশি হমু।
তারমানে বাঙালী আসলে ভাষার ভিত্তিতে গইড়া উঠা একটা জাতি। এই খানে ধর্মের নিরপেক্ষতা ছিলো, এইখানে ধর্মের সহাবস্থান ছিলো...এই খানে ধর্মের বাধ্যবাধকতা ছিলো না, ছিলো স্বাধীনতা। এই কনসেপ্টের পক্ষেই লড়ছে বাঙালীরা...তাগো ইসলাম বিরোধী কইয়া মারছে পাকিস্তানীরা, রাজাকার, আল-বদর, আল শামসরা! তখন কি কোন বাঙালী কত বড় মুসলিম এই ব্যখ্যা দিতে গেছে!? নাকি তার ব্যক্তিগত অনুভূতি হিসাবে ধর্মরে উহ্য রাইখা যুদ্ধের তাড়নাতেই থাকছে? আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিলো একটা ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা ভাষাভিত্তিক জাতির যুদ্ধ...যেই জাতি নতুন বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখে...যারা বিশ্বের সকল জাতির সমান্তরালে দাঁড়াইতে চায় নিজের গৌরবেই!!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।