বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্খিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা জোরদার হয়েছে। এই প্রচারণায় পশ্চিমবঙ্গের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারও নেমে পড়েছে। এসব পত্রিকা অনেকটা মনগড়া সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করছে। গত ১২ ডিসেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকা ্তুঅস্ত্র ঢুকছে বাংলাদেশে, উদ্বিগ্ন মনমোহন সিং্থ এ মর্মে খবর ছেপেছে। কিন্তু রিপোর্টটির কোথাও এ কথা বলা হয়নি, মনমোহন সিং কবে, কখন ও কোন বৈঠকে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আনন্দবাজার তার রিপোর্টে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে বলে মন্তব্য করলেও কোন দেশ থেকে কোন পথ দিয়ে এসব অস্ত্র ঢুকছে এবং কারা এর যোগানদাতা্ল সে ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ করেনি। পত্রিকাটিতে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশে যেসব অস্ত্র ঢুকছে তা নাকি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। এমন হাস্যকর লেখা থেকেই এসব প্রচারণার লক্ষ্য স্পষ্ট। আনন্দবাজারসহ ভারতীয় প্রচার মাধ্যমে বাংলাদেশে সেনা মোতায়েন নিয়ে নানা বিরূপ মন্তব্য করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষক মহল এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছে, এর আগেও নির্বাচনের সময় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে বাংলাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে।
সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা সব রাজনৈতিক দলই সমর্থন করেছে ও স্বাগত জানিয়েছে। নিজ দেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর উপস্খিতি নিয়ে ভারতের কেন দুশ্চিন্তা হবে তা বোঝা মুশকিল। বাংলাদেশে সেনাবাহিনী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে যেখানে অতীতে সুনাম কুড়িয়েছে, সেখানে এবার তারা কেন রাজনৈতিক শিবিরে অস্ত্র সরবরাহ শুরু করেছে তারও কোনো ব্যাখ্যা নেই। ভারতের আসাম, মনিপুর বা কাশ্মীরে নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী তলব করা হয় এবং সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীনেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়। ভারতীয় গণতন্ত্র তাতে রসাতলে গেছে এমন অভিযোগ কেউ করেনি।
এমনকি পশ্চিমবাংলাতেও নির্বাচনে প্রায় লাখসংখ্যক আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়ে থাকে।
এদিকে ভারতের একটি টিভি চ্যানেল ্তুতারা নিউজ্থ বাংলাদেশের নির্বাচন এবং অস্খির রাজনৈতিক পরিস্খিতি নিয়ে তাদের ২৪ ঘন্টার সম্প্রচারের এক বড় অংশ নিয়োজিত করেছে। ্তুতারা নিউজ্থ-এ বাংলাদেশ পরিস্খিতি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের মতামত দিচ্ছেন সাংবাদিক হিরন্ময় কার্লেকর। তিনি সম্প্রতি একটি পুস্তক লিখেছেন, যার নাম বাংলাদেশ দ্য নেক্সট আফগানিস্তান। বইটিতে নানা অলীক তথ্য তুলে ধরে হিরন্ময় বলতে চেয়েছেন, আলকায়দা এবং তালিবান গোষ্ঠীর এখন প্রধান ঘাঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ইসলামি গোষ্ঠীগুলো ভারত ও আমেরিকাসহ সমগ্র বিশ্বের পক্ষে এক বিরাট বিপদ।
হিরন্ময় তারা নিউজে একের পর এক সাক্ষাৎকার দিয়ে চলেছেন। গত দু দিনের সাক্ষাৎকারে হিরন্ময় কার্লেকরের বক্তব্য হচ্ছে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সেনা অভ্যুথান হতে যাচ্ছিল। আর তা আঁচ করতে পেরেই এই অভ্যুথানকে রোখার জন্য রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন সেনাবাহিনীকে আগাম মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। অবশ্য কেন বাংলাদেশে নেপালের মতো গণঅভ্যুথান হবে বা এ খবর তিনি কী করে পেলেন্ল হিরন্ময় তা পরিষ্কার জানাননি।
এদিকে ভারতের আরেকটি দৈনিক বাংলা স্টেটসম্যান ১৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত তাদের প্রথম পাতার এক খবরে বলেছে, ্তুদিল্লির ধারণা, বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের মতো গৃহযুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। বাংলা স্টেটসম্যান পত্রিকা জানিয়েছে, ভারত সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামরিক উথান-পতনের প্রতিক্রিয়া যদি দেখা দেয় ভারতে, তবে এবার দিল্লি তা কিছুতেই মেনে নেবে না। বাংলাদেশের উথান-পতনের কি প্রতিক্রিয়া ভারতে হবে, কাদের মধ্যে এই প্রতিক্রিয়া হবে এবং কেন তা ভারত মেনে নেবে না্ল এ সম্পর্কে স্টেটসম্যান পত্রিকার প্রথম পাতার ওই রিপোর্টে তেমন কিছু জানানো হয়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।