ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমন্তবর্তী গ্রামের 18 যুবক বাংলাদেশী পাসপোর্টে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েছে। তারা কিভাবে বাংলাদেশী পাসপোর্ট পেল তা নিয়ে ত্রিপুরার গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের মধ্যে তোলপাড় চলছে। ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ঐসব যুবকের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছেন। এদিকে ত্রিপুরার আঠারো যুবকের বাংলাদেশী পাসপোর্ট সম্পর্কে ঢাকায় খবর আসার পর পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও গোয়েন্দারা অনুসন্ধানে নেমেছে। পাসপোর্টগুলো ইসু্য হয়েছে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে।
তারা জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয়ে মধ্যপ্রাচ্যের আবুধাবী ও দুবাইতে গিয়েছে।
কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের মতে, বাংলাদেশী নাগরিক যে কেউ আবেদন করলেই আগের মত সহজে পাসপোর্ট পাওয়া যায়না। গত অর্থবছর থেকে পাসপোর্ট ইসু্যর ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। আর এসব নিয়মের ভেতরেই স্পেশাল ব্রাঞ্চের পাসপোর্ট শাখা অনুসন্ধান করে রিপোর্ট প্রদান করে। রিপোর্ট পজেটিভ হলে পাসপোর্ট দ্রুত ইসু্য করা হয়।
আর নেগেটিভ রিপোর্ট হলে আবেদনকারীর পাসপোর্ট পাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। কিন্তু ভারতীয় নাগরিকরা ঢাকার পাসপোর্ট অফিস থেকে সহজেই পাসপোর্ট পেল কি করে তা তদন্ত করা প্রয়োজন বলে একাধিক কর্মকর্তা জানান।
পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করা হলে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ তদন্ত করে। আবেদনকারীকে স্থায়ী ঠিকানার ব্যাপারে প্রমাণপত্র দাখিল করতে হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে ভোটার আইডি কার্ড, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্স প্রদানের রশিদ, বিদু্যৎ, গ্যাস, টেলিফোন বিলের কপি, চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কমিশনার কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারের সনদপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, ব্যবসায়ী হলে ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য প্রমাণপত্র জমা দেয়া বাধ্যতামূলক।
এতো কড়াকড়ির পরও ত্রিপুরার আগরতলা সীমান্তবর্তী গ্রামের 18 যুবক চোরাই পথে কুমিলস্নার কসবা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে ত্রিপুরা পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
ঢাকায় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ত্রিপুরার 18 যুবককে সীমান্তপথে বাংলাদেশে প্রবেশের ব্যাপারে কারা সহায়তা দিয়েছে এবং তাদেরকে রাজধানীতে এনে পাসপোর্ট ইসু্য করানোর নেপথ্যে কারা ছিল সেসব উদঘাটন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন নতুন পাসপোর্ট নেয়ার জন্যে ভিড় হয়। আর সেখানেই লোকজন পুলিশী হয়রানির বিবরণ দেয়। এতোসব ঝক্কি ঝামেলা থাকার পরও ত্রিপুরার 18 যুবকের নামে বাংলাদেশী পাসপোর্ট ইসু্য হয়েছে কিভাবে সে প্রশ্নই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের নিকট বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
গত সপ্তাহে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, 18 ত্রিপুরার যুবকের মধ্যে 14 জনের বিসত্দারিত পরিচয় ত্রিপুরার গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ জানতে পেরেছে। অপরদিকে এদের ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খোঁজ নেয়া শুরু করেছে।
ঃঃ দৈনিক ইত্তেফাক ঃ 08.12.2006 ঃঃ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।