maanush84@yahoo.co.uk আপনি কি অবিয়াইত্যা? বাবা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের ছত্রতল হতে বহু দূরে যেখানে মাতৃ আঁচলের ছায়া পড়ে না, পোড়া কপাল নিয়ে সেইসব কোন এক জায়গায় পড়ে আছেন? অথবা আপনার বৌ কি ঝগড়া করে বাপের বাড়ি গেছে? ফ্রিজে কোন রান্না খাদ্য রেখে যান নাই| বুয়া আসে নাই? হোটেলের খাবার খেতে খেতে কি আপনার জিভে ঘা হয়ে গেছে? হ্যাঁ ভাই আপনাদের মতো হতভাগাদের তরেই আজকের এই নিবেদন।
রান্নার কথা উঠলেই লোকজনের মাথায় প্রথমে যেইটা আসে তা হল রান্নাঘরের চিত্র। এইটা ভুল। রান্নার উৎপত্তি তারও আগে, বহুদূরে যেখানে কৃষক শস্য ফলায়, মুরগীরা ডিম পাড়ে। আপনাকে অবশ্য অদ্দুর যেতে হবে না।
দয়া করে বাজার পর্যন্ত যান আর নিচের লিস্টি অনুযায়ী জিনিসপত্রের ইস্তেমাল করেন।
উপকরণ :-
১. চাল
২. ডাল
৩. তেল
৪. লবণ
৫. পেঁয়াজ
৬. কাঁচা মরিচ
৭. রসুন
৮. হলুদ
৯. ডিম
১০. ডিজিটাল ক্যামেরা
১১. পিসি
১২. ইন্টারনেট কানেকশন
১৩. পানি
১৪. সবজি
এত বড় লিস্টি দেখে ভড়কে গেছেন? সরি, আন্ডার খিচুড়ি বলে তাকে আন্ডার এস্টিমেট করার কোন সুযোগ নাই। তবে লিস্টি দেখে ঘাবড়ানোর কিছু নাই। বেশিরভাগ জিনিসই আপনার ফ্রিজ-টিজ ঘাঁটলে পাওয়া যাবে। তো আসেন শুরু করি।
প্রথমে পিসি অন্য করেন, ফেসবুকে লগ ইন করেন তারপর স্ট্যাটাস দেন “খিদা লাগছে”।
দেশি পেঁয়াজ হলে দুই তিনটা লাগবে আর ইন্ডিয়ান জাম্বো সাইজের পেঁয়াজ হলে একটাই যথেষ্ট। পেঁয়াজটাকে সরু সরু করে কাটেন। কুচিকুচি করে কাটার নিকুচি করি, বহুত টাফ কাজ সেইটা।
এইবার গোটা তিন চারেক কাঁচা মরিচ কেটে ফেলেন।
সবজি কি কি আছে? এখন শীতকাল সুতরাং ফুলকপি থাকার কথা। দুই তিন টুকরা ফুলকপি ছাড়েন। গোটা দুই টমেটো। সিম টিম থাকলে সেইটাও ইস্তেমাল করা যেতে পারে। আলু টালু কিছু হবে? মোদ্দা কথা সবজি জাতীয় যা যা আছে সব নিয়ে আসেন।
আপনার বাসায় নিশ্চয় কফির মগ আছে? চা কফি না খেলেও অন্তত সিগারেটের এ্যসট্রে হিসাবে এক আধটা মগ থাকার কথা। ঐ মগের আধা মগ চাল আর বাকি আধা মগ ডাল নেন। অতঃপর সেইটাকে পানিতে ধুয়ে সার্ফেস হইতে আপনার ডান হাতের মধ্যমার মধ্যভাগ পরিমাণ পানি রেখে চুলার উপর বসিয়ে দিন। এতক্ষণ যেসব সবজি টবজির সাথে কাটাকুটি খেলেছেন, সবটা ঢেলে দিন। তারপর চায়ের কাপের আধা-কাপ পরিমাণ তেল আর এক চা চামচ পরিমাণ লবণ (কম বেশি হলে লেখক দায়ী নয়) এবং ছিটেফোঁটা হলুদ ছেড়ে দিয়ে মারেন ঘুঁটা।
এইবার নিজের চুলায় আগুন দেন। সব শেষে গোটা তিনেক ডিম ভেঙে ছেড়ে দেন হবু খিচুড়ির বুকে, ভুলেও এখন আর ঘুঁটা দিবেন না। ডিম লেজে গোবরে হয়ে যাবে।
আবার ফেসবুকে যান এবং নতুন একটা স্ট্যটাস দেন br />
খর বায়ু বয় বেগে চারিদিক ছায় মেঘে ওগো মেয়ে তুমি চুলো পানে চাইও
তুমি ঢালো সরু চাল, আমি ঢালি মুগ ডাল তারপরে এ খিচুড়ি খাইও খাইও খাইও
দশ মিনিট অপেক্ষা করেন। দেখেন কেউ লাইক বা কমেন্ট করে কিনা আপনার স্ট্যাটাসে।
তারপর পুনরায় চুলো পানে প্রত্যাবর্তন করে টেস্ট করে দেখেন লবণ ঠিক হল কি না। কম হলে খানিক লবণ ঢেলে দেন। বেশি হয়ে গেলে গুড লাখ উইথ ইওর খিচুড়ি।
এরপর মোটামুটি আর কিছু করার নাই। মাঝেমাঝে ফেসবুক থেকে উঠে চুলার আশেপাশে ঘুরঘুর করবেন।
দেখবেন খিচুড়ি পুড়ে যেন না যায়। সব ঠিকঠাক থাকলে আধঘন্টার মধ্যে পাক প্রকৃয়া শেষ হবার কথা।
তারপর আর কি। রান্না শেষ হলে খানিকটা খিচুড়ি প্লেটে তুলে আপনার ক্যামেরা দিয়ে একটা ছবি তুলেন এবং ফেসবুকে শেয়ার দেন। আমার রান্না খিচুড়ির কোন ছবি দিতে পারছিনা কারণ সব খেয়ে ফেলেছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।