তাঁর জীবনের ইনিংসটাই নতুন করে শুরু হয়েছে গত বছর। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে জেতার পর নতুন শুরু হয়েছিল ক্যারিয়ারেও। পরে ফিটনেস সমস্যা আর বাজে ফর্ম আবারও থামিয়ে দেয় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। তবে নতুন মৌসুমে আবার নতুন শুরুর আশায় বুক বাঁধছেন যুবরাজ সিং। আশার পালে জোর হাওয়া দিয়েছে মৌসুম শুরুর ম্যাচেই বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি।
পরশু বেঙ্গালুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে ভারত ‘এ’ অধিনায়ক করেছেন ৮৯ বলে ১২৩!
ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধে জিতে যুবরাজ ভারতীয় দলে ফেরেন গত সেপ্টেম্বরে, টি-টোয়েন্টি দিয়ে। এরপর টেস্ট দলে ফিরে প্রথম ইনিংসে ৭৪ করলেও পরের চার ইনিংসে ছুঁতে পারেননি ফিফটি। আটটি ওয়ানডে খেলেও ফিফটি মাত্র একটি। সঙ্গে ফিটনেসের ঘাটতিটাও চোখে পড়ছিল। প্রশ্ন উঠছিল তাঁকে তাড়াহুড়ো করে ফেরানো হয়েছে কি না।
সব মিলিয়ে জানুয়ারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের পর থেকে আর দলে নেই।
মৌসুমটা হতাশায় শেষ হলেও ভেঙে পড়েননি যুবরাজ। ফিটনেস ও ফর্মের সমস্যায় দল থেকে ছিটকে পড়া আরেকজন, জহির খানক নিয়ে চলে যান ফ্রান্সে। সেখানে ফিটনেস নিয়ে নিবিড় কাজ করেছেন বিশ্বখ্যাত ট্রেনার টিম এক্সেটারের সঙ্গে। ওই ঘাম ঝরানোরই ফসল মেদহীন, সুপারফিট ও চনমনে যুবরাজ।
ফিটনেসের প্রমাণ মিলল চার মাস পর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচের ব্যাটিং পারফরম্যান্সেও। এ যেন সেরা সময়ের সেই প্রতাপশালী যুবরাজ। শুরুতে একটু সতর্ক হয়ে খেলেছেন, প্রথম ৩৮ বলে রান ছিল ২০। ৩৯তম বলে মেরেছেন প্রথম চার, ফিফটি ছুঁয়েছেন ৬০ বলে। পরের ফিফটি মাত্র ২০ বলে! নিকিতা মিলারের চার বলে নিয়েছেন ২২, রন্সফোর্ড বিটনের ৫ বলে ২৪।
শেষ পর্যন্ত ৮ চার ও ৭ ছক্কায় ৮৯ বলে ১২৩।
ম্যাচ শেষে জানালেন ফর্ম আর ফিটনেসের যোগসূত্র, ‘আমার সব সময়ই বিশ্বাস ছিল, ভেতর থেকে ভালো অনুভব করলে, মানসিকভাবে ভালো বোধ করলে আমার পারফরম্যান্সও ভালো হবে। ফিটনেস পুরোপুরি ফিরে পেতে অনেকটা সময় লেগেছে, কারণ শরীরের ওপর ঝড় তো কম যায়নি! ক্যানসারের মতো একটা রোগ কাটিয়ে এসেই বলা যায় না, “ওকে, আমি শতভাগ ফিট হয়ে উঠব। ”
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর আইপিএল খেলেছেন। খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি সেখানেও।
নিজেকে ফিরে পাওয়ার ক্ষুধাটা এতে তীব্র হয়েছে আরও। এ জন্যই মৌসুমের বিরতিতে প্রচণ্ড খেটেছেন ফিটনেস নিয়ে, ‘ক্রিকেট খেলাটার প্রতি আমার আবেগ তীব্র। আইপিএলে পিঠের চোটে ভুগতে হয়েছে, এ জন্য খুব বেশি ভালো করতে পারিনি। ফিটনেস নিয়ে তাই অনেক খাটতে চেয়েছিলাম। ক্যানসার থেকে ফিরেছি বলে শতভাগ ফিট হতে সময় লেগেছে।
চিকিৎসকেরা বলেছিলেন পুরোপুরি ফিট হতে বছর খানেক লাগবে। এখন শারীরিক অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। ওজন কমেছে কয়েক কেজি, মাঠে ক্ষুরধার হয়েছি। নিজেই অনুভব করতে পারছি আরও সবল ও ক্ষিপ্র হয়েছি। ’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে সীমিত ওভারের ম্যাচে ভারত ‘এ’ দলের অধিনায়ক হলেও চার দিনের ম্যাচের দলে তিনি নেই।
টেস্ট দলে ফেরা আপাতত তাই সহজ হবে না। তবে ওসব ভাবছেনও না যুবরাজ, ‘খেলার একটা সুযোগ পেয়েছি, খেলছি। চার দিনের ম্যাচ বা টেস্ট ম্যাচ জানি না, খেলতে পেরেই খুশি আমি। ’
যুবরাজ আবার উপভোগ করতে শুরু করেছেন, বোলারদের জন্য এটা বড় এক দুঃসংবাদ! ওয়েবসাইট। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।