আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গনতান্ত্রিক ভোটপ্রথা, তুলনামূলক বিচারে বাংলাদেশ ও জার্মানী

সময়, কবিতা, ছোটগল্প, দেশ, দেশাচার

প্রতিটি গনতান্ত্রিক দেশেই ভোটাভোটর মাধ্যমে সরকার নির্বাচন করা হয়। তবে এই ভোটাভোটির পদ্ধতি সব দেশে এক নয়। জার্মানীর ভোটপদ্ধতি আমাদের দেশের চেয়ে বেশ অন্যরকম। তবে আমার কাছে এ পদ্ধতি বেশ যুক্তিসঙ্গত মনে হয়। আগ্রগী হলে পড়ে দেখতে পারেন।

আপনাদের কাছেও হয়তো ভালোই মনে হবে। ধরুন একটি দেশে পার্লামেন্টে 600 আসন রয়েছে। রাজনৈতিক দল রয়েছে তিনটি। দল ক, দল খ ও দল গ। সে দেশটি বাংলাদেশ হলে দেশটিকে 600 ভোট এলাকায় ভাগ করা হতো।

প্রতিটি এলাকা থেকে প্রতি দলের একজন করে প্রার্থী জনগনের ভোটপ্রার্খী। ভোটাভোটি শেষ হলো কোন একদিন। ক দল পেলো 420 টা আসন। খ দল পেলো বাকী 180 টি আসন। গ দল কোন আসনই পেলো না।

কিন্তু দেশে প্রদত্ত সমস্ত ভেটের হার (পাওয়া আসনের হার নয়) হিসেব করে দেখা গেল যে ক দল পেয়েছে 50%, খ দল পেয়েছে 30%, গ দল পেয়েছে 20%। অর্খ দাড়াচ্ছে এই যে গ দলকে যে 20% জনগন ভোট দিলেন, তাদের কোন কথাই পার্লামেন্টে পেঁৗছাবে না। বিরোধী দল হিসেবেও নয়। এবার তুলনামূলক বিচারের জন্যে ধরে নিই দেশটা হলো জার্মানী। সেখানেও তিনটি রাজনৈতিক দল, ক, খ ও গ ও পার্লামেন্টে 600 আসন।

এক্ষেত্রে দেশটিকে ভাগ করা হবে 300 ভোট এলাকায়। প্রতি এলাকা থেকে একজন প্রার্থী এখানেও জনগনের ভোটপ্রার্থী, তাদেরকে সরাসরি প্রার্খী বলা যেতে পারে। তাহলে বাকী 300 আসন কাদেরকে দিয়ে পূর্ন করা হবে ? মজাটা সেখানেই। সরাসরি প্রার্থী ছাড়াও প্রতিটি দলেও সম্ভাব্য সাংসদের একটি তালিকা করা হয় । প্রতিটি ভোটারের দুটি করে ভোট থাকে।

প্রখম ভোট এলাকার সরাসরি প্রার্থীর জন্যে, দ্বিতীয় ভোট কোন একটি পছন্দসই দলের জন্যে। সরাসরি প্রার্থীরা প্রথম ভোটে নির্বাচিত হবার পর পছন্দসই দলের প্রাপ্ত দ্বিতীয় ভোটকে শতকরা হিসেবে প্রতিটি দলের জন্যে ভাগ করা হয়। সে অনুযায়ী সরাসরি প্রাপ্ত আসনের পাশাপাশি বাকী তিনশো আসন সে শতকরা হারে তিনটি দলের মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়। সম্ভাব্য সাংসদের তালিকা থেকে ক্রমানুযায়ী দল তাদের সাংসদ নির্বাচন করে। লাভ হলো এই যে, বাংলাদেশের নির্বাচনে যে দল 20% ভোট পেয়েও সংসদে কোন আসন পেলোনা, জার্মানী হলে তারাও বেশ কয়েকটি আসন পেয়ে যেত।

জনগনের যে অংশ তাদেরকে ভোট দিলেন, তাদের সিদ্ধান্তও পুরোপুরি অগ্রাহ্য রইল না। তারা হয়তো অন্য একটি দলের সাথে কোয়ালিশন করে সরকার গঠনেও অংশ নিতে পারে। জনগনের দেয়া ভোট অনুযায়ী আসনের ভাগাভাগিও অনেকটা সুসম। তবে 5% এর নীচে কোন দল দ্বিতীয় ভোট পেলে তাদেরকে কোন আসন দেয়া হয় না। গতবছরের নির্বাচনে ছোট দলগুলো প্রাপ্ত ভোটের প্রভাবেই এখানকার বড় দুটো দল কোয়ালিশন করতে বাধ্য হয়েছে।

তারা তাদের পারস্পরিক বিরুদ্ধ মতামতে সমঝোতা করতে বাধ্য হয়েছে ও একটি এ অবধি সফল সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের বি এন পি ও আওয়ামী লীগ কোয়ালিশন করে সরকার গঠন করেছে, এমন কিছু আমরা কল্পনা করতে পাবি কি?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.