এ ব্লগে আর কোন মৌলিক লেখার দরকার নেই, যেহেতু আমি আমার নিকৃষ্টতম লেখার স্বত্ব ও কাউকে দিতে রাজী নই
আমার পড়াশোনার আগ্রহ প্রবল নয় কখনোই । একটানা লেগে থাকা হয়ে উঠেনা ।
এর মাঝে ও একেবারে নিজের আগ্রহে যা কিছু নিয়ে পড়াশোনা করেছি , তার ভেতর দাসপ্রথা অন্যতম ।
মানুষ কি করে মানুষের দাস হলো, কতটুকু নির্মম এই দাসত্ব, এই বর্বরতা র বিরুদ্ধে মানুষের দীর্ঘ সংগ্রাম --এ সব টানে আমাকে ।
এই ব্লগে আসার পর দেখলাম এখানে সব থেকে বেশী যা নিয়ে আলোচনা হয় তা হলো ধর্ম।
ধর্ম বিষয়ে নিজের আগ্রহের ঘাটতি , কম পড়াশোনা, ধর্মের বাস্তবতায় বিরক্তি... সব মিলিয়ে এসব আলোচনায় তেমন জড়াতে পারিনা ।
তবু হঠাৎ ইচ্ছে হলো পড়ে দেখি যা নিয়ে আমার আগ্রহ সেই দাসপ্রথা --- তার প্রয়োগে বা বিলোপে ধর্ম গুলোর ভূমিকা কি ছিলো ?
কদিন ধরে ভাবলাম , পড়লাম ।
দেখলাম এর ব্যপকতা কম নয় । খুব ছোট করে কিছু বলার নয়।
ইচ্ছে হয়েছিল একটা ধারাবাহিক লিখি ।
দাস প্রথায় প্রত্যেকটাঐশী ধর্মের ভূমিকা , আলাদা আলাদা করে ।
না অতো ধৈর্য্য আমার জন্য নয় ।
শুরু করেছিলাম ইহুদীদের তোরা ( কোরানে উল্লেখিত তাওরাত) দিয়ে । একটা মজার ঘটনা পাই ।
মহাপ্লাবনের পর নুহ নবী তখন চাষাবাদ শুরু করেছেন বন্যার পলি জমা উর্বর মাটিতে ।
আংগুরের ব্যাপক ফলন হলো । একদিন দ্্রাক্ষা রস খেয়ে দিলেন ঘুম পুরো ন গ্ন হয়ে । পিতার ঘুমন্ত ন গ্ন শরীর দেখে ফেলল পুত্র হেম এবং ঘটনার বর্ননা দিল অপর দু ভাই শেম ও জাফেত কে । দ্্রাক্ষার নেশা কাটিয়ে ঘুম থেকে উঠার পর নবী নুহ জানলেন সব ।
রাগান্বিত নুহ অভিশাপ দিলেন হেমকে।
হেমের পুত্র কেনান ও তার বংশধর দাস হবে শেম ও জাফেতের এবং তাদের বংশধরদের ।
ইতিহাস বলে এই কেনানের বংশধরই আফ্রিকার কালো মানুষ ।
হায় কালো মানুষের দল , ঐশী ধর্মই যখন দাসপ্রথাকে জাস্টিফাই করে তখন আর কি করা ? তোমাদের দাস থাকতে হবে আরো হাজার বছর
.......................................................................................
নাজারাতের যীশু একটা বাউন্ডুলে ছিলো । বাপের ঠিক নেই । ইহুদী হলে ও প্রার্থনা সভায় মন নেই ।
সংগী সাথী জেলে আর ধোপাদের নিয়ে যত আকাজ কুকাজ। মানুষের উপকার করে বেড়ানো ।
ও হ্যাঁওই ছোকরা আবার ভালো ম্যাজিক জানে । মাটির পাখীেেক ফুঁ দিয়ে আকাশে উড়িয়ে দেয়, হাত বোলিয়ে অন্ধের চোখ ভালো করে দেয় , এমনকি মৃতকে ও জীবিত করে ফেলে ।
নাজারাথের ইহুদীরা প্রার্থনা সভার বদলে যীশুর আড্ডায় জোট বাঁধে ।
যীশু ধর্মের নামে রাবি্বদের শোষনের বিরুদ্ধে কথা বলে । সাধারনরা আদর করে তার নাম দেয় 'ইহুদীদের রাজা' । হায় এই রাজাকে ধর্মের বিরুদ্ধাচারনের অভিযোগে ক্রুশকাঠে বিদ্ধ করে ধার্মিকেরা ।
আমি গসপেলগুলো পড়ি । ম্যাথিউ , মার্ক, জন, লুক ।
আমি খুঁজি যীশুকি কোথা ও স্পষ্ট করে দাস প্রথা নিষিদ্ধ করে গেছেন ? না পাইনা । তবে কি তার সময় দাসত্ব ছিলোনা? তাতো নয় ! তার ব হু আগে থেকেই তো এই আমানবিকতার শুরু ।
ইউসুফ নবী দাস হিসেবে বিক্রী হয়েছিলেন । মুসা নবী মুক্ত করে নিয়ে আসার আগে বনী ইসরাইলরা তো দাস ছিলো ফেরাউনদের সাম্রাজ্যে ।
আর যীশুর সমসাময়িক সময়ে ই তো চলছে রোমানদের দাসত্ব আর দাসদের দিয়ে গ্লাডিয়েটর খেলা ।
অতো যে মানবিক যীশু, কই দাসত্বকে নিষেধ করে যাননি তো ?
জাহাজ ভরে ভরে কালো দাস নিয়ে আসলো যারা আমেরিকায় , ইংল্যান্ডে তারা তো যীশুর অনুসারী । তারা তো গীজর্ায় যায় । আমেন বলে প্রার্থনা করে যীশুর শান্তির বানীতে । দাস প্রথার হাজার বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে ও তো কোনো পাদ্্রীর নাম দেখিনা যিনি বলেছেন --- মানুষের মানুষের দাস , এর চেয়ে বড় কোনো পাপ নেই ।
অথচ যীশুর জন্মের পাঁচশো বছর আগে স্পার্টাকাস দাস বিদ্্রোহ করেছেন ।
দাসদের সংগঠিত করে মহাশক্তিশালী রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন কয়েক বছর । স্বপ্ন দেখেছেন একটা স্বাধীন ভূ-খন্ডের যেখানে কেউ দাস থাকবেনা ।
ক্রীস্টানরা যীশুর ক্রুশিফিকেশনকে নিয়ে গেছে একবারে অলৌকিকতায় । অথচ তার ব হু আগে স্পাটর্াকাসের 1200 দাস যোদ্ধাকে রোমানরা ক্রুশিফাইড করেছে নিষ্ঠুর ভাবে ।
........................................................................................
মানুষের দুভর্াগ্য মানুষ কখনোই মুল্যায়ন করেনি তার আসল নায়কদের ।
আসল নায়কেরা কখনোই অলৌকিকতার আশ্রয় নেয়নি, ছড়ায়নি ধুম্রজাল, সব ফলাফল রেখে দেয়নি পরকালে স্বপ্নময়তায় ।
মানুষ তার প্রকৃত মুক্তিদাতাদের বদলে রহস্যে রোমাঞ্চে ভরপুর , অলৌকিকতার ধোঁয়া ছড়ানোদের আরাধ্য ভেবেছে সবসময় ।
তাই কালো মানুষেরা ও স্পার্টাকাসের বদলে যীশুকেই ত্রাতা ভাবে যেমন বাংগালী হিন্দু মেয়েরা রামকৃষঞ পরমহংসের পুেেজা করে অথচ বিদ্যাসাগর , রামমোহন রায়রা যখন জঘন্য সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে লড়ছেন ,এই ধর্মীয় পুরুষ তখন ব্যস্ত তার ধ্যানে ।
কে জানে হয়তো আগামী দিনের মানুষ ঠিকই চিনে নেবে তার আসল নায়কদের ।
মানুষের চুড়ান্ত মুক্তির জন্য এই চিনে নেয়া বড় প্রয়োজনীয় ।
[আমি ইচ্ছে করেই এই পোস্টে দাসপ্রথায় ইসলামের ভূমিকা নিয়ে কিছু লিখিনি । পোষ্টটা বড় হয়ে যাবে সে জন্য । আর কিছু নয় । হয়তো অন্য কোনো পোস্টে লিখবো । যদি ধৈর্য্যটুকু না হারাই ।
তবে লিখাটা দরকার । ব্যাপার আছে অনেক ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।