যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
জীবন কখনও রঙ বদলায়। বর্ষাকালের আকাশের মত। ঝুপ করে নামলো বৃষ্টি আবার কখনও বা খরখরে রৌদ্দুর। জিহবায় লবণ মেশা তালমিস্রির স্বাদ আবার কখনও বা তা তেঁতো। পোড়ার দেহ পুড়ে কালসিটে হয় আবার কখনও একদম থিতু।
রবার্ট হায়ম্যান ইন্ডিয়ান বৃটিশ। সংক্ষেপে নিজেকে রব বলে। দাদার দাদা হিযরত করেছিলেন ইংলন্ডে। আমি বলি বিয়ে করো না কেন? সে বলে শতবর্ষেও আমি ইন্ডিয়াকে ভুলতে পারি নাই। রঙতো সাদা হয়নি সেই সাথে রক্তও বৃটিশ হতে পারলো না এখনও।
গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে বিয়েতে পরিবারের আপত্তি আছে। ফলে জ্যামাইকান হেলেনের সাথে দীর্ঘদিনের একত্রবাসে জুনিয়র রব এখন স্কুলে যায়।
আমাদের অফিসে তখন সিকিউরিটি নিয়ে কড়াকড়ি। বিদেশীদের জন্য বিশাল গাইডলাইন। কোথায় যাওয়া যাবে আর কোথায় যাওয়া যাবে না তার লম্বা ফিরিস্তি।
মদ আর বিয়ার খাওয়ার জন্য আমরা যাই জ্যাকে (জাকারিয়া)। ঢাকায় তখন সবচেয়ে সসত্দা বার। যে পর্যনত্দ না খেলে মাতাল হওয়া যায় না সে পর্যনত্দ গিলে ওর গেস্ট হাউসে গিয়ে পুল খেলি। আমাদের অন্য একজন কলিগ সাদা চামড়ায় ডেবি যোগ দেয় - সহচার্য চায় পুরুষের। সেও থাকে ঐ গেস্ট হাউসে।
রাত কাটাতে কালো হলেও তার চলবে। আমি আবার এসব বুঝি না। হোয়াট আর ইউ ডুইং দিস্ ইভিনিং? জিজ্ঞেস করলে বলি নাক টেনে ঘুমুবো। আর রব বলে, নাথিং - হোয়াট ইউ আর ডুইং? ডেবি তখন বলে, চল লং ড্রাইভে যাই। আমার মাতাল শরার কিছু বুঝে ওঠে না।
একদিন আমিও ফেঁসে গিয়েছিলাম নাথিং বলে। আশুলিয়া ঘুরে এসে হলিউডের ছবির মত মনে হলো - রুম পর্যনত্দ এগিয়ে দিয়ে আসা ভদ্রতা। দরজার সামনে থেকে বলি, তাহলে বাই, সে বলে, ফ্রিজে বিয়ার আছে, আমি ঘড়ি দেখি রাত্র একটা। খালি বাসায় ফিরতে অবশ্য ব্যাচেলরের কোন অসুবিধা থাকে না। যতরাতেই ফিরি রাজত্ব আমার।
কিন্তু সকালে তো অফিস করতে হবে।
তারপরও রুমে ঢুকি। ঠান্ডা বিয়ারের ক্যানের টিনের ওয়াল ঘেসে ফোটা ফোটা জমে থাকা পানি গড়িয়ে পরে। ডেবি ফ্রেশরুমে। বিয়ার যখন খালি হয়ে আসে - আমার চোখের রঙ তখন কিছুটা ঘোলাটে।
সামনে দাড়ানো ডেবি। ভিন্ন পোষাকে। যে পোষাক মানুষকে লোভাতুর করে।
ডেবিকে বলি বাংলায় তোমার নাম দেবীর মত শোনায়। দেবী মানে ইশ্বরী।
ইশ্বরীতো ভীষণ বিউটিফুল-এফ্রোদিতির মত। ডেবি বলে আমাকে কি তেমন মনে হয়? আমি তার শরীর চুইয়ে পরা জলকনা দেখি। সোজা করে টানা চুল দেখি। আর বক্ষ দেখে বলি - শুধু্ ওদুটোই ইশ্বরীর মত নয়। দেবীদের বক্ষ থাকে উন্নত।
ডেবির চোখেও নেশা। সে কেবল ওয়াইন সামলাতে পারে। বিয়ার কদাচিত। বিদেশ বিভূয়ে বিয়ার একটু বেশী টানা হয়ে গেছে। আর আমিতো কিছুদিন যাবত ভাবছিলাম বিয়ে নয় - লিভিং টুগেদারই আমার গনত্দব্য।
মনের মত পার্টনার না পাওয়াতে তাও হচ্ছে না। এমন সময় সাদা চামড়ার শরীরী সমর্পন! তাও আমরা এখন স্পর্শের সীমারেখায়। ভাবছি কে আগে ছুইবো পানি।
সনাতনী শরীর তেতে ওঠে কিন্তু গতিতে সে পশ্চিমের সাথে পাল্লা দিতে পারে না। ডেবি টিভির সুইচ অন করে।
সাথে সাথে বিবিসির ডকুমেন্টারীও অন হয়ে যায়। বিয়ার খোলে আরেকটা। আমি আধেক চোখের পাপাচার করি। বলে তোমার কি গার্লফ্রেন্ড আছে? আমি বলি ভ্যাকেণ্ট আপাতত। সে উৎসুক কেন? বলি বিরহকাল চলছে - কিছুদিন আগে ব্রোকেন।
সে বলে, আহা হা! বেচারা!
আমি সময় গুনি একটা কিছু ঘটবে বলে। কখন ঘটবে। অপেক্ষার পোষাক কেমন যেন শরীরে অসহ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু কিভাবে শুরু করবো, পাশে গিয়ে বসবো! নাকি শরীরের প্রশংসা শুরু করবো। কিন্তু ৩০ বছরে পিএইচডি অর্জিত তার শরীরে মাঝে মাঝে প্রজ্ঞার বিবৃতি বেশী ঝংকৃত হয়।
আমি এমন কিছু আয়েশী সামঞ্জস্য পাই না আমার এপ্রোচে। সে বলে দারফুরে কি তুমি যেতে চাও? আমি বলি না - এ্যাপ্লাইতো করিনি! সে বলে বিদেশে কোথাও কাজ করলে তোমার কেরিয়ারের জন্য প্লাস পয়েন্ট হবে। আমি বলি অন্য কথা কিন্তু বলতে চাই - মাদক শরীরে উদ্দীপনার শব্দ। জিজ্ঞেস করি, তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে? সে বলে তোমার তো ভ্যাকেণ্ট - আর আমার উপচিয়ে পরে। যখন কাজের সময় তখন কথার চেয়ে কাজে তারা বেশী আগ্রহী।
আমরা আগাই কথা বলে, রয়ে সয়ে - চায়ের শেষ চুমুকটাও তাড়িয়ে তাড়িয়ে পানের মত। আমি বুঝতে পারি। প্রথমেই যে গরম ঠান্ডা করার বাসনাটা তার ছিল - আমার স্লো এন্ড স্টিডি মতলবে তা ভেসত্দে গেছে। এখন আবেগ ভর করেছে তার কথায়। বলে আমার প্রেম ট্রেম ভালো লাগে না।
স্কুলে যে ছেলেটার জন্য ঘর ছেড়েছিলাম - এ্যাজহোল ডায়েড ইন এন এক্সিডেন্ট! আমি ভিমড়ী খাই। চোখে তার ঘুমেদের রাজত্ব - পুরাতন প্রেমের স্মৃতিকনা বিয়ারের সাথে মিশে গেছে বলে।
কোন কথা নেই হঠাৎ বৃষ্টির মত ঝুপঝাপ কান্না। মনে হলো স্বপ্নে বিকারগ্রস্থতা। আমি তার কাধ স্পর্শ করি।
কান্নার ধমকে আমার উত্তেজনা প্রশমিত। অশ্রু কখনও সাধারণ পানি হতে পারে না; আমার মনে হয় এটা অন্য ধরণের কোন এক লিকুইড। একটা নেশার বস্তু। এতেও মাতাল হতে পারে মানুষ। জিজ্ঞেস করি, হেই হোয়াটস্ আপ? - দেবী কথা বলতে পারে না।
তাকে দেবীর মতই লাগছিল আমার। উন্মুক্ত পোষাকও যে অশ্লীল হয় না সেদিন আমি প্রথম বুঝতে পারি।
দেবীর শরীরে ক্লানত্দির ছাপ স্পস্ট হয়। টুপ করে ঘুমিয়ে যায়। আমি নির্বানপ্রাপ্তের মত বটবৃক্ষ হয়ে যাই।
একসময় এলিয়ে দেই নিজের ক্লানত্দিও। তলিয়ে যাই ঘুমে। যুগপৎ উদ্দীপনা আর স্মৃতির রোমান্থনে মাদকিত রাত ভোর হয়ে যায় অফিস টাইম ছাড়িয়ে। দৌড়ে ঢুকি বাথরুমে, আমার দরকার শরীর ভেজানো, দেবীও এসে ঢোকে। একই বাথরুমে আমি টাওয়াল জরিয়ে ঝরনার নিচে আর সে বাথটাবে শরীরের সুতো ছেড়ে - রাতের হঠাৎ সন্যাসময় আদ্রতা এখন অনেক উষ্ণ - চোখের ইশারায় নিরাভরণ - কিন্তু বিরস সময় অফিসের ঘন্টাধ্বনি দেয়।
চোখের রঙ্গময়তা বাদ দিয়ে আমরা অফিসে পৌঁছে যাই। রব - বারান্দায় - বিড়ি ফোঁকে, আমাকে দেখে টিটকারি মারে - তোমার ভার্জিনিটি তাহলে আ্যাসাসিনেটেড! দেবী পাশ কাটায় - ভ্রু কুঁচকে বলে- নট লাইক ইউ বিচ, ডিজলয়াল টু পার্টনার! আমি বলি ওয়াক! আই কান্ট থিংক টু বি লাইক আনফেইথফুল টু মাই চাইল্ডস মম! রব বলে, লিভ ইট নাও।
দুপূরে দেবীর এঙ্টেনশন থেকে আমার ফোনে কল বাজে। হট ব্রেডে যাবে? আমি বলি চলো। হেটে হেটে হটব্রেড।
পাশাপাশি কিছুটা হয় হটব্রেনও। পরেরদিন ব্রাকের বিসিডিএম তিন দিনের ট্রেনিং প্রোগ্রাম অথচ দেবী প্রোগ্রামে নেই। যে দেখবে বিসিডিএম এর চমৎকার আয়োজন সাথে সংগী আসবাব নিতে চাইবে নারীদেহ; তারপর যদি থাকে এমন সদ্য প্রসূত উত্তেজনা তবে তো উৎসবে মাতাবে রক্ত - অন্যথায় নপুংসকের শতরঞ্জিতে স্বমেহনে ঘুমুতে হবে । ফাক দ্যা বস। সে বলে আপত্তিজণক! তোমার বস উইমেন, দাড়াও তাকে আমি বলছি! আমি উড়িয়ে দেই হাত নেড়ে বলি, ডু সামথিং, জায়গাটা ভালো লাগবে তোমার, তুমি মান্ডিকে জানাও যে এই ট্রেনিংটা তোমারও জরুরী।
আগের সব ভুলে গেছো! সে বলে, কি ব্যাপার, তুমি দেখি এখনও ভোলনি! আমার কিন্তু প্রতিদিন সকাল নতুন জীবন উপহার দেয়।
আমার উচ্ছাস চুপসে যায়। বড্ড বাড়াবাড়ী। আমার নেমতন্ন ছিল নাকি! লাঞ্চের জন্য ফাস্ট ফুড দুচোখে দেখতে পারি না। অগ্রাহ্য করে ভাবা শুরু করেছিলাম, ফ্রাইড ঠ্যাং চিবানো সুস্বাদুই হবে।
রেস আবার প্রথম থেকে শুরু করতে বলায় আমার এখন এই ঠ্যাং চেবোতে ভাল লাগছে না। ভালো করে আবার দেবীকে দেখি। এটা কোন সৌন্দর্য্য হলো! টিশার্টের উপরাংশ যতটুকু সত্দন্য উপহার দেয় তার কোল ঘেসেই একটা ঠোটে কাটা চিহ্ন - একদম টাটকা। আমি চমকে উঠি।
নিজেকে শুধরে দেই তুমি ঘুমিয়েছিলে।
নির্ভেজাল। এ দাগ অন্যকিছুর, অন্যকেহর। ঠ্যাং ছেড়ে কফি। আমার হার্টে ডিপ ডিপ বিট। ছেলেদের ভার্জিনিটি হরণ নিরূপনে কোন টেস্ট আছে কি? তারপর উইদাউট প্রটেকশন, মাই গড! কিছুদিন আগে আফ্রিকা থেকে ফিরেছে ডেবি।
ডেবির ইংরেজী আমার কাছে এখন আর বোধগম্য মনে হয় না। স্কটিসরা ইংরেজী জানে নাকি! আমার কাছে চাটগাঁইয়া ল্যাংগুয়েজের মত। বার বার বলি সরি। আর ও বলে, হোয়াটস্ রঙ।
আমার তো রাইট রঙ বিরাট ব্যাপার।
সনাতনী ঘরের মফস্বলের ছেলে ইংরেজীতে পড়েছি বটে কিন্তু এখনও জীবিকার জন্য একসেন্ট রপ্ত করতে হয়। আলট্রা মডার্ন বাতাস কিনে মার্কেটে ঘুরে এমটিভির সাথে ড্রেস ম্যাচ করি। নব্যতার ধুসর মোহ আমার অতীত ভুলানো মন্ত্রে দীক্ষা নেয় প্রতিদিন পাঁচটা করে নতুন ইংরেজী ওয়ার্ড। ফাহিম ঘুরে কিনি ইংরেজী ক্লাসিক মুভি আর নাম মুখসত্দ করি কান্ট্রি মিউজিসিয়ানদের। আমার কোনটা রাইট আর কোনটা রঙ বুঝতে সময় লাগবে আরো বিসত্দর।
ঘুমের মধ্যে তুমি কি আর উঠেছিলে? তাকে আমার করা প্রশ্নটা সে বিলের মত দিয়ে দেয় দোকানের ম্যানেজারকে। রাসত্দায় বেড়িয়ে ধুলো ওড়া গাড়ির দিকে তাকিয়ে বলে, রব ওয়ান্ট মি টু বি উইথ হিম টুনাইট। আমি শরীর ঝাঁকাই। এমনইতো হওয়ার কথা। ট্রেনিং নিয়ে কথা বলি।
কলিগতো - সন্ধার পূর্ব পর্যনত্দ। বিকালে রব বলে - বিসিডিএমে তিনদিনের জন্য পর্যাপ্ত বিয়ার নিতে হবে না! আমার কাছে ভোদকা আছে দুই লিটার। আমি ওর পাসপোর্টসহ ড্রাইভার পাঠাই কবির ব্রাদার্সে। এক কার্টন - ২৪টাতে দুজনের তিন দিন হয়ে যাবে। তুমি আজ রাতে আমার সাথে থাকবে? কাল দুপূরেতো অফিস থেকেই সোজা যাওয়া হবে।
আমাকে রব জিঞ্জেস করে। আমি অবাক হই। তুমি আজ ডেবিকে সময় দেবে কথা দিয়েছো। রব ততোধিক অবাক। না তো! আমি বলি ডেবিইতো আমাকে বললো।
সি লাইকড্ ইউর লেনথ! রব চ্যাচায়, ফাক ইউ! সি ডাজ নট কোঅপারেট। তোমাকে কি বুকে তোলে নাই? আমি গাট্টা মারি মাথায় রবের। আই ডোন্ট ফাক হার।
রব বলে হেলেনের সাথে আমার আন্ডাস্টান্ডিং অন্যরকমের। আট বছর একসাথে আছি।
প্রথম চারবছর কখনও অন্য কোন মেয়ের সাথে আমি শুই নাই। পরে একদিন দেখলাম আমাদের বেডরুমে সামবডি প্রিকড হার ফ্রম ব্যাক। মাথা ঠিক থাকে না। আসত্দে আসত্দে পেছনে গিয়ে টেলিফোনের সেট দিয়ে ব্যটার মাথায় জোরে ঠুকে দিলাম। প্রিকড অবস্থায় ব্যাটা হেলেনের গায়ে আছরে পরে।
হেলেন মাথা ঘুরিয়ে আমাকে দেখে চিৎকার করে - ইউ কিলড্ হিম! আমার অবাক লাগে এমন অবস্থায় সে বিব্রত অথবা সংকুচিত না হয়ে বিচটার কথা ভাবছে। য়া-ম নট ইউর ওয়াইফ! - তার পরবর্তী বিস্ফোরণ।
ছো্ট্ট একটা মেইল করলাম ডেবিকে। তার ঘটে যাওয়া জীবনের জন্য আমার কস্ট হচ্ছে। ইন্টারনেট খুঁজে একটা লাইন ভালো লেগেছিল।
জুরে দিলাম। সেকেন্ডের ভংগ্নাংশে রিপ্লাই, ডু ইউ লাভ মি? ভেবেছিলাম ডেবিকে মেইল পাঠিয়ে আমি পিসি বন্ধ করে রবকে নিয়ে জ্যাকে ঢুকবো। কিন্তু ডেবির রেসপন্স এত দ্রুততর হলো যে আমি বসে রইলাম চলতশক্তিহীন। ভাবছি আদ্যোপানত্দ। আমি ভালোবাসায় সর্বদা সফটলাইনার।
সদ্য অতীত হওয়া প্রেমিকা পহেলা বৈশাখে যখন কারণ বলতে চাইলো না সমাপ্তির, তখন শুধু বলেছিলাম, ওকে। উই আর ফ্রেন্ডস। পরে অবশ্য মোবাইলের সিম চেইঞ্জ করে, ঠিকানা পরিবর্তন করে ধরাছোয়ার বাইরে চলে গিয়েছিলাম; বন্ধু থাকা সম্ভব নয়। অনেকদিন পরে পুরানো অফিসে গিয়ে দেখি একটা চিঠি এসে তাদের মেইল বক্সে ধুলো জমাচ্ছে - তাতে লেখা, তোমাকে আমি ভালবাসি সেকথা সত্যি নয়; তোমাকে আমি ভালবাসিনা সেকথাও সত্যি নয়। অর্ধেক ভালোবাসায় চলবে না ভেবে কোন জবাব দেইনি।
আর ডেবি! তার তো কেবল দেখেছি প্রায় উন্মুক্ত শরীর আর নির্ঝর কিছু অশ্রুবিন্দু। বৃটিশ সেতাঙ্গ ভার্সেস বাংগাল - ভালোবাসা বোধ হওয়ার মত বিনিময়ইতো এখনও হয়নি। আমি নিশ্চিত আমি ভালোবাসি না। কিন্তু হঠাৎ কেন এই প্রশ্ন - এত সরাসরি! একটা শিরশিরে শিহরণ - মিশ্র অনুভূতি - যদি আমাকে ভালবাসে - তবে আমিও ভালবেসে ফেলবো। মাথা কাজ করে না।
নাকি আমার উচ্ছাস দেখে তার শংকার কথা জানানো! আমি কাউকে না জানিয়ে রাসত্দায় নামি। টিএন্ডটি কলোনীর ভেতর দিয়ে মহাখালীর রাসত্দায়। রবের কথা মনে থাকে না। ফোন বাজে। ডেবির ফোন।
আমি শেষ রিংটা পর্যন্ত গুনি - ১১টা। এগারো বার রিঙ হয় তাহলে এক কলে! জানতাম না।
ফোন বন্ধ করে দেই। পাশে এসে থামে রবের গাড়ি। কি ব্যাপার! আমাকে না বলে চলে এসেছো যে! আমি বলি তোমার কি মনে হয়, ডেবি আমার প্রেমে পরতে পারে? রবের ঝটপট উত্তর, পারে! ওতো আমার প্রেমেও পড়েছে।
অবশ্য একদিনের বেশী থাকে না। আমরা পৌঁেছ যাই জ্যাকে। জিজ্ঞেস করি ডেবি তোমার সঙ্গ চায় নি? রব বলে চেয়েছিল - কিন্তু আমি না করে দিয়েছি। হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। ডেবির ভালোবাসার অর্থ উদ্ধারে নিশ্চিত হই।
ফোন তাহলে অন করা যায়। দেখি ডেবির একটা মেসেজ জমা রয়েছে ইনবক্সে- বিচ, কাম শার্প টু মাই রুম রাইট নাউ - অর আই মাস্ট টেল ইউর বস - ইউ রেপড্ মি!
কত পেগ হলো কে জানে! মাথায় ঘুরছে রেপ শালীন বাংলায় বলৎকার। চোখের সামনে পত্রিকার পৃষ্ঠা উড়ছে, শিরোনাম বিদেশী ধর্ষিত। গোয়ারগবিন্দের চেহাড়া ঝুলছে পাশে। বমি আসে।
আমি রবকে বলি, ফরওয়ার্ড মি টু ডেবি। রব বোঝে আমি মাতাল। আমি বুঝি আমি শুয়োপোকা। বিষ্ঠা চেটেছি। এ্যামাজন লিলি।
এর মাঝে ডেবি। গেস্ট হাউসে পৌঁছে রব বলে তুমি ডেবির রুমে যাও। মিট ইউ লেটার। আমি ডেবির দরজায় ধাক্কা মারি। দরজা খুলে যায়।
সহাস্যে ডেবি দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে - বলে তোমাকে ভয় দেখালাম। আমার মাথায় খুন চড়ে যায়, বলি, বি-য়া-চ, আজ তোর জরায়ুতে আমি বাদামী ঘোড়া চালান করবো । আমাকে ভয় দেখাস!
ডেবি আমাকে অবাক করে দেয়। সে আরো জোরে হেসে ওঠে। বলে ডোন্ট ওয়েট! আমার নেশাক্ত শরীর পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
তবে চিনত্দার মগজগুলো বুদবুদ করে। নিজের কন্ট্রোল ফিরে পেতে চেষ্টা করি। সে বলে আজকে না হয় তুমিই রেপ করলে! আমার মাথার কোষগুলো সজাগ হয়। বিশ্বাস করতে পারি না এর অর্থ কি! গতকাল তাহলে শেষ পর্যনত্দ ঘটনটা ঘটেছে। আমি চিৎকার করি হোয়াট ডিড ইউ ডু লাস্ট নাইট? ডেবি আমাকে গলার নিচে দাগ দেখায়।
বুকের দাগ দেখায়। পিঠে নখের আচড় দেখায়। আমার মাদকতা উন্নাসিক। শাক দিয়ে ঢেকেছিলাম কই মাছ। এখন বেড়িয়ে এসেছে ক্ষতসহ।
আমি হাত ছাড়িয়ে নেই। চোখের অশ্রু শুষ্ক হয়ে ধুয়ো বের হচ্ছে। সুতীব্র একটা ব্যাথা বিছিয়ে দিচ্ছে আমার দীর্ঘ ২৭ বছরের অতীতের জীবনে। আমি বধিয় হয়ে যাই। মিডলক্লাস সনাতনী বড়াইয়ের কৌমার্য্য আমার লুন্ঠিত হয়েছে - অথচ আমি জানি না! ডেবি আমাকে জরিয়ে ধরে।
হঠাৎ রাজ্যের সব রাগ এসে জমা হয় আমার শরীরে। আমি উম্মাদ হয়ে যাই। এবার সত্যিই ঘটনটা চিত্রিত হয়। না রেপ নয়! ঝড় থামার পরে আর কিছুই মনে থাকে না। সকাল বেলা রব এসে ঘুম থেকে জাগায়।
আমাকে বলে, তোমার জন্য একটা স্যাড নিউজ আছে। ভোররাতেই ডেবির ফ্লাইট ছিলো; তোমাকে জানায়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।