গত চার মাসে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ২২টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন হাজার ৮০০ শতক জমি ও সম্পত্তি নিলামে উঠেছে। এক হাজার ১৮৯ কোটি টাকার ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে সরকারি-বেসরকারি ১২টি ব্যাংক এসব সম্পত্তি নিলামে তুলেছে। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সূত্রগুলো বলছে, ব্যাংকের টাকায় ভোগ্যপণ্য আমদানির পর ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানগুলো। ভোগ্যপণ্য আমদানি করে কেউ কেউ লোকসান দিয়েছে। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ শোধ না করে জমি ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছিল।
শেয়ারবাজারে দরপতন এবং জমির দাম কমে যাওয়ায় ঋণের চক্রে পড়ে গেছে তারা। চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ীদের জমি, ভবন ও ফ্ল্যাট নিলামে উঠলেও এর আগে একসঙ্গে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি নিলামে ওঠেনি। নিলামের তালিকায় ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক নুরজাহান গ্রুপ, মোস্তফা গ্রুপ, এমইবি গ্রুপ, সিদ্দিক ট্রেডার্সের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। নিলামের তালিকায় থাকা ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে হারুন ট্রেডিং, রুমানা এন্টারপ্রাইজ, মনোয়ারা ট্রেডিং, আইমান এন্টারপ্রাইজ, মইনুদ্দিন করপোরেশন, এস এস ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মইনুল ইসলাম মনে করেন, ব্যাংকগুলো ব্যবসার জন্য যাচাই-বাছাই না করে বেশি ঋণ দেওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তা ছাড়া হল-মার্কের মতো বড় বড় কেলেঙ্কারির পর ব্যাংকও পণ্য আমদানির অর্থায়নে কঠোর হয়েছে। এ কারণে অনেকেরই এখন খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি নিলামে উঠেছে নুরজাহান গ্রুপের। ন্যাশনাল ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা ৫৯৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকার সম্পত্তি নিলামে তোলে এ গ্রুপের। দুই বছর আগেও এ গ্রুপ ভোজ্যতেলের চাহিদার ২৩ শতাংশ আমদানি করত।
গত বছর কোম্পানিটি ৪৩৮ কোটি টাকার ৫১ হাজার টন পামতেল আমদানি করে, যা মোট আমদানির সাড়ে ৩ শতাংশ। জানতে চাইলে নুরজাহান গ্রুপের পরিচালক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায় লোকসান হওয়ার পর ব্যাংকগুলো সহযোগিতা না করায় লোকসান পুষিয়ে আনা যায়নি। এ কারণে ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে দেরি হচ্ছে। এর পরও যেহেতু আমাদের অনেকগুলো পরিশোধন কারখানা রয়েছে, সে জন্য বিশেষ করে ভোজ্যতেল আমদানি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কয়েকটি ব্যাংক সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে।
’।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।