হঠাৎ করেই তুফান উঠলো। বৈশাখ মাসে প্রায়ই এইরকম ঝড় উঠে। সে ঝড়ের কি দাপট! যেন একটা পাগলা মহিষ! যতক্ষন থাকে, ততক্ষন চারপাশ লন্ডভন্ড করতে থাকে। ঝড় যাবার পরে দেখা যায় এখানে ওখানে গাছ উপড়ে পড়ে আছে। কারো বাড়ির টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে, তো কারও বাড়িই মাটিতে ধসিয়ে দিয়েছে।
আর বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনাতো খুবই সাধারণ ঘটনা। ক্ষেপাটে এই ঝড়ের নাম কাল বৈশাখী।
হাওয়ার তেজ যখন আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করেছে, জামিলা তখন উঠানে শুকাতে দেয়া কাপড় সামলাতে ব্যস্ত।
"ঐ সুমি! সুমি! কই গেলি?"
সুমি তখন নিজের ঘরের ভিতরে কুপির আলোয় ফুল সেলাই করছে। চারদিক অন্ধকার হয়ে গেছে।
তাই দিনের বেলাতেই কুপি জ্বালাতে হয়েছে। মায়ের ডাক শুনে সে বলল, "কী?"
"চউখে দেখস না? তুফান আইতাছে! কাপড় উড়ায়া নিয়া গেলে পিন্দবি কি?"
অনিচ্ছা স্বত্বেও সুমি বাইরে ছুটে আসে। দড়িতে টাঙানো মায়ের ভেজা শাড়ি হাতে নিতে নিতে দেখে তার গালে একটা দুটা করে বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে শুরু করেছে। আজকে সারাদিন প্রচন্ড গরম গিয়েছে। এই সময় ঠান্ডা পানির ফোঁটা গালে মাখতে বেশ লাগছে।
"মা! আইজকা বিষ্টিত ভিজি?"
"খবরদার কইতাছি! তুফানের সময় যদি তোরে বাইরে দেখি, তাইলে দাও দিয়া তোর ঠ্যাং কাইটা দিমু! ঠ্যাং বেশি লম্বা হইছে, না?"
সুমি মায়ের কোথায় হেসে দেয়। মায়ের এই এক মুদ্রাদোষ। কিছু হলেই তিনি দা দিয়ে ঠ্যাং কেটে ফেলেন।
"জলদি জলদি কাপড় লইয়া ঘরে যা। "
জামিলা উঠানের কাপড়ের বোঝা নিয়ে ঘরে ঢোকার আগে আগে একবার গোয়াল ঘরে উঁকি দিয়ে দেখে ফেলে লালী ঠিকঠাক মত বাঁধা আছে কিনা।
ঝড়ের সময়ে বাইরে থাকলে বিপদ।
সুমি এসে আবার সেলাইয়ে মন দিল। বাইরে বাতাসের বেগ বাড়ছে। বাতাসের ঝাপটা বন্ধ জানালায় আছড়ে পড়ছে। বাতাসের এমনই তেজ, সে ঠিকই ফুটো ফাটা দিয়ে বাড়িতে ঢুকে এসে কুপির আগুনের সাথে ঝামেলা পাকাচ্ছে।
সুমি দুহাত দিয়ে বাতিকে ঢেকে দিল। প্রবল বাতাসের সাথে দূর্বল বাতি লড়তে লড়তে যাতে নিভে না যায়।
জামিলা বাড়ির ভিতরে এসে দেখে মেয়ে দুহাতে বাতি ঘিরে রেখেছে। সে রসকষহীন গলায় বলল, "সেলাই মেলাই ফালায়া থুয়া আল্লা আল্লা কর! তুফানের সময় আল্লার নাম নিতে হয়। "
"তুমিতো নিতেছই।
আমার না নিলেও চলবো। "
জামিলা বিস্মিত গলায় বলল, "কস কি তুই? আল্লার সাথে নাফরমানি হয়, খবরদার এমন কথা কইবি না!"
সুমি হাসতে হাসতে বলে, "আইচ্ছা। "
"যা, অযু কইরা আয়। আমার লগে কুরআন পড়বি। "
"আমার অযু কইরা লাভ নাই মা।
আমি নাপাক আছি। "
জামিলা আর কথা বাড়ায় না। মেয়ে বড় হচ্ছে, সেটা তার খেয়াল থাকে না। সংসারের খরচ তুলতে তুলতেই তার আয়ু শেষ হয়ে যাচ্ছে। মেয়ের দিকে ভাল ভাবে তাকাবে এমন সময় কই?
সুমির বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো এমনটা হত না।
তখন লোকটা ক্ষেতে কাজ করতো, সে ঘর সামলাতো।
জামিলার মনে পড়ে একসময়ে তারও সুখের সংসার ছিল। স্বামী তাকে দারুন ভালবাসতো। সকাল সকাল ক্ষেতে যেত হাল বাইতে। দুপুরে সে খাবার নিয়ে গেলে গাছের ছায়ায় বসে চুক চুক করে ভাত খেত।
সে পাশে বসে থেকে বাতাস করে দিত। লোকটা প্রায়ই এক দুই লোকমা নিজের হাতে করে তাকে খাইয়ে দিত। তার সে কি লজ্জা! লোকটা বলতো, "আমার বউরে আমি খাওয়ায়তেছি, কার কি কওনের আছে?"
একদিন ছোট ভাবিসাব দূর থেকে দেখে ফেলেছিলেন। তাই নিয়ে কত রঙ্গতামাশাই না করতেন! লজ্জায় জমিলার মাথা কাটা যেত!
ঝড়ের দাপট বাড়ছে। বাইরে তার হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে।
মাঝে মাঝে বজ্রপাতেরও শব্দ আসছে। জামিলা মনে মনে জপতে লাগলো।
"আস্তাগফিরুআল্লাহ, ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রহিম!"
"আস্তাগফিরুআল্লাহ, ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রহিম!"
"আস্তাগফিরুআল্লাহ, ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রহিম!"
হঠাৎই দরজা ধাক্কানোর শব্দ হলো। বাতাস নয়, মানুষের ধাক্কার শব্দ। সুমি মায়ের কাছে ঘেষে এলো।
সময় খারাপ। দেশে নাকি যুদ্ধ লেগে গেছে। দলে দলে মিলিটারী বড় বড় শহর দখল করে ফেলেছে। এখন যে কোন সময়ে গ্রামের দিকেও চলে আসতে পারে। জামিলার মনে হয়না তাদের গ্রামে মিলিটারী আসবে।
তাদের গ্রামে কোন "জয় বাংলার" লোক নাই। খেতেই পারেনা মানুষ, "জয় বাংলা" করবে কখন? মিলিটারির সব রাগতো ঐ জয় বাংলার লোকেদের উপরই।
"কে?"
"কবিরের বউ! আমি মেছের মন্ডল। তুমি একটু দরজাটা খোল। "
জামিলা চোখের ইশারায় মেয়েকে খাটের নিচে রাখা দাটা দেখিয়ে দিল।
মেয়ে হয়ে জন্মালে নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হয়।
"তাড়াতাড়ি কর। তুফানে উড়ায়া নিয়া যাইবো তো!"
জামিলা দরজা খুলে দেয়। মেছের মন্ডলের সাথে আরও দুজন অচেনা লোক বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে।
"আপনে এই তুফানের সময় কি মনে কইরা আইছেন?"
মেছের মন্ডলের বয়স ষাটের কাছাকাছি।
মুখ ভর্তি পাকা দাড়ি। মাথায় সবসময়েই নামাজের টুপি। গ্রামে প্রবাদ আছে, "মসজিদের ঈমামেরও নামাজ কাজা হতে পারে, তবু মেছের মন্ডলের এক ওয়াক্ত নামাজও কাজা হয়না। "
বুড়ো মেছের মন্ডল হেসে বলে, "মসজিদ থেইকা বাড়িত ফিরতে আছিলাম। এই সময়ে তুফান উঠলো।
তাই তোমার বাড়িত আইসা পড়লাম। তুফান থামলে বাইরায়া যামুনে। ডরায়ও না। "
জামিলা কিছু বলে না।
মেছের মন্ডল মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ভারী চশমার ওপার থেকে ঘর দেখতে থাকে।
"বাড়ির অবস্থাতো ভাল না দেখতাছি। "
জামিলা হতাশ স্বরে বলে, "বাইচা আছি, এইটাই আল্লার দরবারে শুকরিয়া। বাড়ি সাজানোর সুযোগ কই?"
মেছের মন্ডল চুপ করে থাকে। বাইরে ঝড়ের বেগ বাড়ছে। মনে হচ্ছে না এ ঝড় সহজে থামবে।
"গেরামে মিলিটারী আইছে, এই খবর শুনছো?"
মেছের মন্ডলের কোথায় জামিলা চমকে উঠে।
"আমগো গেরামে মিলিটারী আইবো ক্যান?"
"তাগো ইচ্ছা হইছে, তারা আইছে। তারাতো আর কারও দাওয়াতের লাইগা বইসা থাকেনা। যখন ইচ্ছা, যেখানে ইচ্ছা যাইতে পারে। "
"মিলিটারী আওয়াতো একটা বিপদের ঘটনা।
"
"বিপদ কিসের? তুমি কি হিন্দু? না জয়বাংলা? তুমি কোনটাই না, তাই তোমার কোনই বিপদ নাই। "
জামিলা কিছু বলে না। তার কপালে চিন্তার ভাজ। বুক অজানা কারনে দুরু দুরু করে কাঁপছে। বাইরে থেকে লালীর ডাক শোনা যাচ্ছে।
বেচারী ঝড় দেখে খুব ভয় পেয়েছে।
"শোন কবিরের বউ। মিলিটারী যখন আইসা পড়ছে, তখন আমাগো উচিৎ তাগোরে ভাওয়ে ভাওয়ে রাখা। কোন মতেই তাগোরে অখুশি করণ যাইবো না। তারা রাগলেই সর্বনাশ! ধুমাধুম গুল্লি! গ্রামের পর গ্রাম আগুনে জ্বালায়া দিব।
একটা কথা মনে রাখবা। জান বাঁচানো ফরজ। "
জামিলা শুধু 'হু' শব্দ করে।
মেছের মন্ডল অন্যদিকে ফিরে বলল, "মিলিটারীরে ভয়ের কিছু নাই। ঘিন্নারও কিছু নাই।
তারাও মুসলমান, আমরাও মুসলমান। মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই। "
জমিলা আবারও শব্দ করে, 'হু। '
"এইযে এতগুলান জওয়ান জওয়ান ব্যাটা ছেলে, দ্যাশের থেইকা এত দূরে আইসা যুদ্ধ করতাছে, দ্যাশরে ভালবাসে বইলাই করতাছে। এরা দেশপ্রেমিক।
আর দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ। বিধায় তারাও ঈমানদার। ঠিক কিনা কও?"
'হু। '
মেছের মন্ডলের সাথের দুইজন একসাথে বলে, "ঠিক ঠিক!"
"কিন্তুক তাগো হাতে আছে বন্দুক। আর বন্দুক হাতে থাকলে মাইনষের মাথা ঠান্ডা থাকেনা।
কথায় কথায় মাথা হয় গরম। ধুমাধুম গুল্লি! দুই চাইরটা লাশ পইরা যায়। "
জামিলা নিশ্চুপ। বুড়োর সাথের দুই সঙ্গী খুব মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনছে।
"আল্লাহ পাক পুরুষেরে রাগ বেশি দিছেন।
আবার সেই রাগ ঠান্ডা করনেরও ব্যবস্থা করছেন। কি ব্যবস্থা? নারী! নারী আল্লাহ পাকের এক আজিব সৃষ্টি! মহিষের মতন জোয়ানেরেও একটা সুন্দরী নারী নাকে দড়ি বাইন্ধা ঘুরাইতে পারে। ঠিক কি না কও?"
জামিলা কিছু বলেনা। দুই সঙ্গী মাথা নাড়ে। বুড়োর সাথে তারা সহমত।
"তাই আমি চিন্তা ভাবনা কইরা ঠিক করছি, মিলিটারী যতদিন আমাগো গেরামে থাকবো, আমি তাগোরে শান্ত রাখার ব্যবস্থা করবো। এই কাজের লাইগা আমার কিছু মেয়ে ছেলের বড়ই প্রয়োজন। তারা মিলিটারির লগে একটু রংঢং করবো। হাসি তামাশা দিয়া ভুলায়া ভালায়া রাখবো আর কি। গেরামে কিছু মালাউন মেয়েছেলে আছে, কিন্তু সব বুড়ি বুড়ি।
জওয়ান মেয়ে বলতে তোমার মাইয়া, উত্তর পাড়ার আকবর মিস্তিরির মাইয়া আর কদমতলীর হানিফের তিন মাইয়া। ব্যস! আর নাই! আমার এখন এগোরে দিয়াই কাম সারতে হইবো, কি আর করা!"
জামিলা তেজী গলায় বলল, "এইসব আপনে কি বলতাছেন?"
মেছের মন্ডল বিস্মিত হয়ে বলল, "তোমারে এতক্ষন কি বুঝাইলাম? তারা মিলিটারী মানুষ। তাগোরে শান্ত রাখতে হইবো। "
"আপনে এক্ষনি আমার বাসা থেইকা যান। "
"কেমনে যামু? বাইরে তো তুফান হইতাছে।
"
"বাইরে কেয়ামত হইলেও এখনই বাইর হন। "
"আহা! মেয়ে ছেলেরে নিয়া এইটাই মুশকিল। কোন কিছু চিন্তা ভাবনা করে না। তোমার মাইয়ারে আমার লগে দাও, মিলিটারীরাতো জানোয়ার না। তারা আদর সোহাগ কইরাই রাখব।
ভাগ্য ভালা হইলে কোন জোয়ানের হয়তো তোমার মাইয়ারে পছন্দও হইয়া যাইতে পারে। তখন নিকাহ করায়া দিবা। তোমার মাইয়ার কপাল খুইলা যাইব!"
"শুয়োরের বাচ্চা বুইড়া! তুই বাইর হ কইলাম!"
জামিলা হাতে দা উঁচিয়ে রাগে থরথর করে কাঁপতে থাকে।
মেছের মন্ডল বলে, "তোমারও দেখি স্বামী নাই বইলা কথায় কথায় মাথা গরম হয়! দাও নামাও। তুফান থামলেই আমরা যাইতেছি, জবান দিলাম।
"
"শুয়ারের বাচ্চা! তুই অখনই বাইরাবি! অখনই!"
খুব হতাশ চেহারায় মেছের মন্ডল উঠে দাঁড়ায়। কাঁধ ঝুলিয়ে সে দরজার সামনে যায়। জামিলা থর থর করে কাঁপছে। সুমি এসে মায়ের ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়েছে। সেও কাঁপছে।
ভয়ে। এইমাত্র শোনা কথাবার্তাগুলো এখনও সে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না। যে লোকটাকে জন্মের পর থেকেই সে 'দাদা' বলে ডাকে, যার বউকে সে সবসময়ে ভর্তা খাওয়ার জন্য গাছ থেকে কাঁচা আম পেড়ে দেয়, সেই লোকটা তাকে নিয়ে এত কুত্সিত পরিকল্পনা করে কি করে?
মেছের মন্ডল দরজার কাছে পৌছুতেই তার সাথের দুজন হঠাৎ করেই জামিলার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। দু দুজন মস্ত জওয়ান পুরুষের সাথে দূর্বল জামিলা পেড়ে উঠে না। তার হাত থেকে দা কেড়ে নেয়া হয়।
সুমির হাতের মুঠিও ছুটে যায়। তাদের দাপাদাপিতে, বাতাসের ঝাপটায় নাকি অন্য কোন কারনে জানিনা কুপি বাতিটা নিভে যায়। অন্ধকার ঘরে কিছু হিংস্র পশুর গর্জন, দুটি দূর্বল নারীর আর্তনাদ ছাড়া আর কিছুই শোনা যায় না।
বাইরে ঝড়ের তখন তুমূল দাপট। কান পাতলে বাতাসের শব্দের সাথে লালীর চিত্কারও শোনা যায়।
বেশ কয়েক মাস পড়ে এক শীতের দিনের দুপুরে জামিলা যখন আবারও তার বাড়ির উঠানে কাপড় শুকাতে দেয় তখন হঠাৎই একটি শাড়িতে সেলাই করা অর্ধেক ফুলের দিকে তার নজর এটকে যায়। সুমি বেচারী! শখ করে নিজের শাড়িতে ফুল সেলাই করছিল। কাজটা সম্পূর্ন করতে পারল না।
কাপড় টাঙ্গানো শেষে ভাতের মাড় গেলে জামিলা থালায় খানিকটা ভাত, ডাল, আর আলু নিয়ে বাড়ির ভিতরে চলে আসে। সুমি আপন মনে খেলা করছে।
পায়ে বাঁধা শিকল তার খেলনা।
মেয়েটিকে ভাত খাওয়াতে খাওয়াতে জামিলা কাঁদতে থাকে। মিলিটারী ক্যাম্প থেকে উদ্ধারের পর তার সুমি আর কখনই পুরনো সুমি হতে পারেনি। কথায় কথায় সে আত্মহত্যা করতে চায়। কখনও পুকুরে ঝাপিয়ে পড়ে, তো কখনও গাছের ডালে ফাসীতে ঝুলার চেষ্টা করে।
মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখতে তাই তাকে সবসময়ে শিকল পড়িয়ে রাখতে হয়। এভাবে আর কতদিন? তারও তো বয়স হচ্ছে।
দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। তবে গ্রামের অবস্থা এখনও লন্ডভন্ড। যেসব বাড়ি থেকে জওয়ান ছেলেদের ধরে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তারা কেউই বাড়ি ফিরে আসেনি।
যুবতী মেয়েদের খবরও কেউ জানেনা। যেসব বাড়ি পোড়ানো হয়েছে, সেগুলো এখনো গড়া হয়নি। অনেক বাড়ি আছে যার শুন্য ভিটায় শিয়াল বসত গড়েছে।
শুধু ভাল আছে মেছের মন্ডল। এক দুমাস পালিয়ে থাকার পড়ে সে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছিল।
তারপর থেকে সেই আগের মতই দাপটে গ্রামে হেঁটে বেড়ায়। মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। প্রতি শুক্রবার আছরের নামাজ শেষে হাদিস পাঠ করে শোনায়। মোনাজাতের সময়ে কাঁদতে কাঁদতে গাল ভিজিয়ে ফেলে। 'বয়স্ক মুরুব্বি' বলে গ্রামের সবাই তার অপরাধের কথা ভুলে যায়।
গাল ভিজে যায় জামিলারও। দুচোখ বেয়ে অশ্রুর বন্যা ছুটে। সুমি তার হাত দিয়ে মায়ের চোখের পানি মুছে দেয়। পাগল মেয়েটা কি বুঝতে পারে মায়ের কান্না কিসের জন্য? জামিলা আরও হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।