আজকে মানবজমিন পত্রিকা তাদের শিরোনাম করেছে 'অপরাধের নিবাসে বেসামাল মাঝি'। এই রিপোর্টের মাধ্যমে মূলত বর্তমান সিলেটের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহতার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনের প্রধান চরিত্র হলেন মাঝি। না না, ইনি সুরমা, কুশিয়ারা কিংবা পদ্মা নদীর মাঝি নন। তিনি আমাদের সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি।
এই নিবাস চন্দ্র মাঝি পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি ছিলেন। সিলেট মহানগরীর হাল ধরতে তিনি ফেব্রুয়ারীতে এসএমপি কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। তার যোগদানের পর থেকেই সিলেটের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে। তিনি এসেই পুলিশের বদলি বানিজ্য শুরু করেন। বদলি বাণিজ্য অনেকটা ভর্তি বাণিজ্যের মত।
পছন্দের থানায় বদলি হওয়ার জন্য ইন্সপেক্টর ও কনস্টেবলদের বড় অংকের ঘুষ দিতে হয়। ইন্সপেক্টরদের জন্য এর পরিমাণ ১ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা,, আর কনস্টেবলদের এর পরিমাণ ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। থানা ও ফাঁড়ি ভেদে এই অর্থের তারতম্য। থানার মধ্যে সবচেয়ে হাইরেটেড হল কোতয়ালি ও শাহপরাণ থানা আর ফাঁড়ির মধ্যে সবচেয়ে হাইরেটেড বন্দরবাজার ফাঁড়ি। এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, প্রমোশনের জন্যে ঘুষের পিছনে যৌক্তিকতা থাকলেও বদলির জন্যে ঘুষ দেয়ার মানে কী? (প্রমোশনের জন্যে যৌক্তিকতা আছে বলছি বলে ভাববেন না, আমি এর পক্ষ নিচ্ছি)
এর পিছনেও আছে আরেক দূর্নীতির রহস্য।
সিলেটের মধ্যে কোতয়ালি, শাহপরাণ থানায় বড় বড় কেইস আসে এবং এর প্রেক্ষিতে বেশ বড় অংকের রফা হয়,, বন্দরবাজার ফাঁড়ির ক্ষেত্রেও ঘটনা প্রায় একরকম। শহরের বিভিন্ন ধরণের লাইসেন্স বিহীন যানবাহন এই ফাঁড়িতে তোলা হয়, তাই ফাঁড়ির বাণিজ্য ও বিশাল। আর এসকল থানা ও ফাঁড়িতে যেসকল কর্মকর্তাগণ থাকেন, পদমর্যাদা অনুসারে তাদের ভাগ-বাটোয়ারার অংক ও বিশাল। আর এ কারণেই চলে এ বদলি বাণিজ্য।
এসকল বাণিজ্য চলাকালিন সময়ে সিলেটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যায়।
ঘটে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ও দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা। ৪ সেপ্টেম্বর নগরীর জিন্দাবাজারস্থ নেহার মার্কেটে ডাকাতির ঘটনায় খুন হয় একজন নৈশপ্রহরী, লুট হয় প্রায় ৬ কোটি টাকার স্বর্ণ। এজন্য প্রশাসনকেই দুষছেন সকলেই, অনেকের মতে প্রশাসনের সাথে রফা করেই ঘটেছে এ ভয়াবহ ডাকাতি। তাছাড়া গত ২৯ সেপ্টেম্বর ব্রাক ব্যাংকের কোটি টাকা লুট হয়। পুরো সেপ্টেম্বর মাস জুড়েই ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি লেগেই ছিল।
আর এ বিষয়ে উদাসীন ছিল মাঝির নেতৃত্বাধীন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এরকম মাঝির আর দরকার নেই আমাদের, সময় হয়েছে প্রশাসনের সকল দুর্নীতিবাজ অফিসারদের বিরুদ্ধে মাঠে নামবার। অবিলম্বে এই মাঝি কে প্রত্যাহার করা হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।