শিক্ষক শব্দটার সংগেই সম্মান,শ্রদ্ধা,ভক্তি আর নৈতিকতার বিরাট সংযোগ রয়েছে। আর তার সাথে যদি বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটা যোগ হয়, তবে তার ওজন আরো অনেক বেড়ে যায় নিঃসন্দেহে। কিন্তু সব সম্ভবের এই দেশে "বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক" শব্দটার মানে দিনে দিনে পরিবর্তিত হয়ে রাস্তার মাস্তান বা ক্যাডারের দিকে দ্রুত ধাবমান। সেই দিনটা বোধ হয় খুব বেশী দূরে নয়, যেদিন আমাদের সম্মানিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা রাস্তায় নেমে কামড়া-কামড়ি শুরু করে দিবে, হয়তো রক্তের নেশায় হাত রাংগাতেও দ্বিধা করবে না !!!
কিন্তু কেন? কেন এমনটা হচ্ছে? জাবি, বুয়েট রংপুর,কুমিল্লা,চট্টগ্রাম,রাজশাহী.... প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই ভিসি/প্রো ভিসি, প্রক্টর, রেজিষ্টার.... সাহেবদের নিয়ে চলছে দারুন সব খেলা। শিক্ষক জীবনের প্রশাসনিক দায়িত্বে যারা সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়ে , সর্বোচ্চ সম্মান আর দায়িত্বে থাকার কথা, তারাই আজ নিজ অফিসে কিংবা বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন কিংবা পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে বটতালায় বা তালতলায় বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন!!!
আরেকদল শিক্ষক ক্লাস -পরীক্ষা বন্ধ রেখে ভিসি সাহেবদের গায়ের চামড়া দিয়ে জুতা বানানোর শ্লোগান দিতে দিতে হয়রান হয়ে যাচ্ছেন! অবাক হয়ে যাচ্ছেন? অবাক হওয়ার কিছু নাই জনাব।
এখন যে এটাই উনাদের ভাষা!!!
ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ যেভাবে কুকুরের মতো একদল আরেক দলের উপর হামলে পড়ে ক্যাম্পাসে বা হলে আধিপত্য বজায় রাখার জন্য , ঠিক সেভাবেই সম্মানিত শিক্ষকেরা হামলে পড়ছেন বিরুধী মতের শিক্ষকদের উপর ।
কিন্তু কেন?
কারন একটাই, ক্ষমতার মসনদ চাই। ভিসি সাহেবদের কাজ হওয়া উচিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কাজে গতিশীলতা আনা, গবেষনার মানকে বাড়ানো, সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌছে দেয়া। অথচ উনারা ভিসি নামক চেয়ারটাতে বসেই নিয়োগ,বদলি,পদোন্নতি,টেন্ডারের কমিশন, বিরুধী মতের শিক্ষকদের শায়েস্তা করার সব অপ কৌশলের প্রয়োগ শুরু করেন। পক্ষান্তরে বিরুধী পক্ষও সমানতালে চালিয়ে যায় তাদের অপকর্ম।
কখনো সাদা, নীল, রুপালী বা বেগুনী রং ধরে উনারা অভির্ভূত হন। এ যেন আরেক আলীগ/বিএনপি খেলা। আলীগ বিএনপি খেলে দেশের ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে আর উনারা খেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী নিয়ে।
কিন্তু এমনটা হওয়ার তো কথা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের চমৎকার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকে ।
ব্যাচের সবচেয়ে ভাল রেজাল্টের অধিকারী ছেলেটি বা মেয়েটিই শিক্ষক হন ( ব্যতিক্রম ২ / ১ টা থাকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সবচেয়ে ভালো রেজাল্টধারীরাই শিক্ষক হন) । তারপর সেই ভালো রেজাল্টের অধিকারী ছাত্রটিই লেকচারার, এসিস্টান্ট প্রফেসর, এসোসিয়েট প্রফেসর, প্রফেসর,ডীন,প্রক্টর,ভিসি ইত্যাদি নানা পদে অধিষ্ঠিত হন। কি এমন ব্ল্যাক ম্যাজিকের পাল্লায় পড়ে ওরা নীতি-নৈতিকতা-দায়িত্ব ভুলে রাজনীতির কুটিল পথে ধাবিত হয়? নিজেকে নোংরামির আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ফেলে???
-------------------------------------------------------------------------------
(লেখাটা বড় হয়ে যাচ্ছে, ১ম পর্ব এখানেই শেষ করছি। ২য় পর্বে খুঁজে বের করবো কিভাবে উনারা বদলে যান। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।