আজকে অন্যরকম একটি পোস্ট লিখব। আমি সবসময় একটু বেশি ডিজিটাল। কাউকে গিফট দেওয়ার ক্ষেত্রেও আমি যথেষ্ট ডিজিটাল কিছু চিন্তা করি। তেমনি একটি নমুনা নিয়েই মুলত আজকের আমার এই লেখা। গিফট হিসেবে ওয়েবসাইট হয়ত অনেকেই এখনও চিন্তা করতে পারেনি এখনও।
গিফট হিসেবে আমার তৈরি কয়েকটি পার্সোনাল ওয়েবসাইটের সাথে আজকের পোস্টে সবাইকে পরিচিত করে দিব।
আমার খুব আদরের ফুফাতো বোন নিপা। আইটি সম্পর্কিত আমার সকল কাজের সহকারী সে। খুব ট্যালেন্টেড এবং ইংরেজীতে খুবই দক্ষ হওয়ার কারনে আমি তাকে আমার সহকারী হিসেবে ব্যবহার করি। গত বছর অর্থাৎ ২০১২ সালে তার জন্মদিনে আমি তাকে অন্যরকম একটি গিফট দিয়ে চমকে দেই।
তাকে উপহার দেই ডিজিটাল গিফট, একটি সুন্দর অ্যানিমেটেড ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণ ফ্লাশ দিয়ে তৈরি। আগে একসময়, এনিমেশনের কাজের প্রতি খুব ঝোক ছিল। অনেকদিন পর, প্রায় ৩বছর পর গত বছর আবার সেই এ্যানিমেশনের বিখ্যাত সফটওয়্যার ফ্লাশ ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিপাকে গিফট দেই। ওয়েবসাইটটির ঠিকানাঃ http://www.nicenipa.com/
ওয়েবসাইটটির বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য
- এটি ফ্লাশ হওয়ার কারনে কেউ এখান থেকে কোন ছবি ডাউনলোড করতে পারবেনা।
- যারা পিসির সাউন্ড অফ করে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করেছেন ,তারা হয়ত খেয়াল করেননি যে এখানে খুব শ্রুতিমধুর একটি মিউজিক রয়েছে।
- এখানে ফেসবুক সিস্টেমের চ্যাটিং সিস্টেম রয়েছে। একদম নিচে ডানদিকে offline send mail লিখা আছে। চ্যাটিংয়ে কেউ না থাকলে, সেটি অফলাইন হয়ে থাকে।
- আপনার পিসির স্ক্রীনের ডানদিকে থাকা contact লিখাতে ক্লিক করে সরাসরি নিপার সাথে মেইলে যোগাযোগ করা যাবে।
আকর্ষণীয় এ ওয়েবসাইটটি গিফট দিয়ে নিপাকে অনেক চমকে দিতে পেরেছিলাম। নিপাকে নিয়ে যেহেতু কথা হচ্ছে, সেহেতু আরেকটি বিষয় জানানো দরকার। গতবছর নিপাকে নিয়ে অনলাইন পত্রিকা প্রিয় টেকে একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়। সেটির লিংক দিলাম। সেখান থেকেও একবার ঘুরে আসতে পারেন।
লিংকটিঃ http://tech.priyo.com/news/life/2012/11/25/7086.html
আপনার কাছের মানুষকেও জন্মদিন কিংবা অন্য কোন উপলক্ষ্যে এরকম ব্যতিক্রমি গিফট দিতে পারেন। বাজি রেখে বলতে পারি, অসম্ভব খুশি হবে।
অনেকদিন ধরে ডাক্তারদেরকে ডিজিটাল বানানোর চিন্তা মাথাতে ছিল। আমার দেখামতে বাংলাদেশি ডাক্তাররা ডিজিটাল দুনিয়া থেকে অনেক মাইল দুরত্ব বজায় রাখে। যদিও ফেসবুকের নেশাতে অনেকেই কিছুটা ডিজিটাল হয়েছে।
তবে মোল্লার দৌড় যেমন মসজিদ পযন্ত, তেমনি ডাক্তারদের দৌড় ফেসবুক পযন্তই। তাদেরকে ডিজিটাল বানানোর স্বপ্ন দেখার কারন হলো একজন ভাল ডাক্তার ডিজিটাল হয়, তাহলে তার সেবা অনেক দুরের মানুষরাও খুব সহজে পেতে পারবে। আরও অনেক কিছু চিন্তাতে ছিল। সেগুলো লিখে পোস্টটিকে বড় করবনা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য আমি বেছে নিয়েছি আমার ডাক্তার ভাবিকে (মামাতো ভাইয়ের বউ)।
ওনার জন্য কিছুদিন আগে তৈরি করি একটি পার্সোনাল ওয়েবসাইট। এ ওয়েবসাইটটি গিফট করেও ওনাকে পুরোই চমকিয়ে দেই।
ওয়েবসাইটটির ঠিকানাঃ http://dr-nahar.com/
ওয়েবসাইটটির বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্যঃ
- হোম পেজে অ্যাপোয়নমেন্ট নেয়ার ব্যবস্থা আছে। কারও কোন স্বাস্থ্য গত সমস্যা থাকলে এখানে ক্লিক করে আমার ভাবি ডাক্তার নাহারের সাথে সমস্যা লিখে পাঠাতে পারবে।
- আমার ভাবি এখন অনলাইনে অনেককে স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারবে।
- ভাবি ওয়েবসাইটটিকে ডিজিটাল সিভি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। কেউ তার সিভি চাইলে BIO-DATA লিংকে ক্লিক করে সেই পেজে গেলেই পেয়ে যাবে আকর্ষনীয় সিভি।
- ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণভাবে ডায়নামিক হওয়ার কারনে যেকোন সময়ে যেকোন তথ্য কোডিং জ্ঞান ছাড়াই খুব সহজে আপডেট করা সম্ভব।
এতজনকে বানিয়ে দিলাম ওয়েবসাইট। এবার নিজের জন্য একটি ওয়েবসাইট বানানোর লোভ সামলাতে পারলামনা।
অবসর সময়ে মোটামুটিভাবে বানিয়ে ফেললাম নিজের জন্য একটি ওয়েবসাইট। অন্যরকম কিছু বানানোর চেষ্টা ছিল। সেজন্য একটি সিভি পার্ট বানানো হলো। বানালাম একটি গ্যালারী পেজ, যেখানে ব্যক্তিগত ছবি থাকবে। আরও অনেকগুলো পেজ হবে, সেগুলো এখনও করার সময় পাইনি।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গাতে প্রকাশিত আমার লেখাগুলো এখানে একসাথে পোস্ট করা হবে। আমার করা বিভিন্ন গ্রাফিকস কিংবা ওয়েবডিজাইনের কাজগুলোও এখানে দেয়া হবে। ওয়েবসাইটটির ঠিকানাঃ http://mdekram.com/
উপরের এই ব্যক্তিটিরও একটি সাক্ষাৎকার প্রিয় টেকে ছাপা হয়েছিল, সেটির লিংকটিও এখানে শেয়ার করছি। http://tech.priyo.com/news/business/2012/10/29/6411.html
কোন ওয়েবসাইটটি বেশি ভাল লেগেছে জানাবেন। আমার এই ডিজিটাল বিপ্লবে আমার পাশে কে কে থাকতে চান সেটিও জানাতে ভুলবেননা।
যারা ব্যক্তিগতভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করেন, তারা নিজেদের কাজগুলো নিয়ে এরকম একটি পার্সোনাল ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন। যেখানে আপনার সকল কাজের লিস্ট থাকবে। তাহলে আরও সহজে এবং আরও বেশি করে কাজ পাবেন। যদিও আমি যেই ওয়েবসাইটগুলোর কথা বললাম, সবগুলোই মজা করেই করেছি । তবে আপনারা শুধুমাত্র গিফট হিসেবে না বানিয়ে নিজেদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারকে আরও অনেক দূর নিয়ে যাওয়ার জন্য এরকম ওয়েবসাইট বানাতে পারেন।
সেই ওয়েবসাইটে আপনাদের কাজগুলোকে কিভাবে আপনার সাইটে সাজাবেন, সেটিরও একটি উদাহরণ এখানে দিয়ে দিচ্ছি। আমাদের ক্রিয়েটিভ আইটির পোর্টফলিও পেজ বানিয়ে ছিলাম, যেখানে আমাদের করা বিভিন্ন ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টগুলো দেওয়া আছে। লিংকটিঃ http://creativeitweb.com/portfolio.php
এই পোর্টফলিওকে অনুসরন করে আপনার নিজেরটি বানিয়ে নিতে পারেন। সবার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সফল হোক, সবাই আরো বেশি ডিজিটাল হোক, পুরো জীবনকেই ডিজিটাল বানিয়ে ফেলুক, এই আশা রেখে আজকের পোস্টটি শেষ করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।