মাগরিবের আজানের পর থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ হাইওয়ের রাস্তা ধরে হাটছে, বৃষ্টি হচ্ছে এদিকে তার ভ্রুক্ষেপ নেই। পিছনে তার জনা তিনেক বন্ধু একত্রে ছাতার নিচে নিজেদের মধ্যে হাসি ঠাট্টা করছে। কারও মনে কোন অনুশোচনা নেই। আজ যে তারা ২-০ গোলে হেরেছে তাও আবার দক্ষিন পাড়ার ছেলেদের কাছে।
আকাশ নিজেকে কিছুতেই মানাতে পারছেনা। হয়ত তার বন্ধুদের কাছে ব্যাপারটা কিছুই না কিন্তু তার কাছে অনেক কিছু। সে তো কোন সুযোগও পেলনা যখনি তার পায়ে বল আসে তখনি বিপক্ষের তিনচার জন তাকে ঘিরে ধরে। খুব ভালো না পারলেও আকাশ মোটামুটি ড্রিব্লিং পারে, পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল ফিনিশার, নিজের দলের সবাই তাকেই পাস দেয় যেন সেই গোল দিবে। কিন্তু তাকে কেন ? আর কি কেউ নেই ? একাই নিজেকে ফুটবল খেলতে হবে ? সেতো আর জিদান না।
সজোরে নিজের হাতের ফুটবলটিকে পিচঢালা রাস্তায় একটা বাউন্স খাওয়ালো। রাস্তা পার হয়ে নিজেদের বাড়ির গলিতে ঢুকে পরল, আর তার বন্ধুরা মধ্যে একটা টঙ্গের দোকানে ঢুকে পরল পুরি খেতে। গলির মুখে তার বড়ভাই তার দোকান থেকে দেখল আকাশ ভিজতে ভিজতে বাসার দিকে যাচ্ছে। জোরে ডাক দিল, “ঐ আকাশ”। আকাশ ঘুরে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল “কি ?”, আদনান (আকাশের বড় ভাই) জিজ্ঞেস করল, কি হইসে তোর ? আকাশ উত্তর না দিয়ে মাথা নিচু করে আবার বাসার দিকে চলল।
আকাশ ক্লাস ফাইভে পড়ে, খুব একটা পড়ালেখা সে করেনা। বাবা জন্মের কয়েক মাস পরেই মারা গিয়েছেন। শুধু মা আর তার এক বড়ভাই আছে তাদের সংসারে। কোন কিছুতেই তার মন নেই। তার চিন্তা খালি ঐ মাঠের ১৩০ গজের দুই গোল পোস্টের মাঝে।
ব্রাজিলের ফ্যান কিন্তু মেসি তার বড় হিরো। মনে মনে হয়তো সে চিন্তাও করে বড় হয়ে মেসির মত খেলোয়াড় হবে যদিও তা কখনো কাউকে সে বলেনি। রাতে মার ডাক শুনে সে খাবার খেতে চলে গেল। মা মন খারাপের কারণ জিজ্ঞেস করলেই বলল, আরে মা তুমি জাননা আমাদের দলে একটাও জাতের খেলোয়াড় নাই। ঠিকমতো পাসও দিতে পারেনা।
মা কিছু বললেন না শুধু হাসলেন। খাওয়া শেষে মার কাছে গিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।