আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জেনে নিন! মণীষীদের কিছু শিক্ষামূলক বাণী-৪

নিরপেক্ষ নই,সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ।

মুসলিম মণীষী ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি,আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক ও ইমাম আশ-শাফি’ঈ কিছু মহা মূল্যবান বাণী নিচে তুলে ধরা হল । ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি’ বাণী : ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ) একদিন এক ব্যক্তির দাফনের সময় উপস্থিত হয়ে বলেছিলেন, “আল্লাহর রাহমাত বর্ষিত হোক সেসব মানুষদের উপরে যারা আজকের দিনটির মতন দিনের জন্য পরিশ্রম করে; কেননা আজকে তোমরা এমন সব কাজ করতে পারছ যা কবরের বাসিন্দা তোমাদের এই ভাইয়েরা করতে পারছে না । তাই, হিসাব-নিকাশ শুরু হবার ভয়াবহ দিনটি আসার পূর্বেই তোমাদের স্বাস্থ্য এবং অবসর সময়ের পূর্ণ ব্যবহার করো। ” একজন মু’মিনের যত গুণাবলী রয়েছে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো ক্ষমাশীলতা ।

দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের জন্য বিক্রি করলে আপনি দুই জীবনেই জয়ী হবেন। আখিরাতের জীবনকে দুনিয়ার জন্য বিক্রি করলে আপনি দুই জীবনেই পরাজিত হবেন। এই দুনিয়াতে কল্যাণময় হচ্ছে জ্ঞানার্জন ও আল্লাহর ইবাদাত করা এবং আখিরাতে কল্যাণময় হচ্ছে জান্নাত। যদি তোমরা কোন ব্যক্তির সাথে শত্রুতা করতে চাও তাহলে প্রথমে তার উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখ। যদি সে আল্লাহর বাধ্য ও অনুগত হয় তাহলে এ কাজ থেকে দূরে থাক।

কারণ, আল্লাহ কখনো তাকে তোমাদের আয়ত্ত্বে দেবেন না। আর যদি সে আল্লাহর নাফরমান বান্দা হয় তাহলে তোমাদের তার সাথে শত্রুতার কোন প্রয়োজনই নাই। কারণ, সে নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আল্লাহর সাথে শত্রুতাই তার ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। অন্তর মাঝে যেসব কুমন্ত্রণা সৃষ্টি হয় এবং দূর হয়ে যায় তা সব শয়তানের পক্ষ থেকে।

এসব কুমন্ত্রণা দূর করার জন্য আল্লাহর যিকর ও কুরআন তিলাওয়াতের সাহায্য নেয়া উচিত। আর যেসব কুমন্ত্রণা স্থায়ী হয়ে যায়, বুঝতে হবে তা নফসের পক্ষ থেকে। আর তা দূর করার জন্য সলাত, সাওম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের সাহায্য নেয়া উচিত। মন্দের মূল তিনটি এবং শাখা ছয়টি। মূল তিনটি হলো – ১) হিংসা-বিদ্বেষ, ২) লোভ-লালসা এবং ৩) দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা।

আর শাখা ছয়টি হলো – ১) নিদ্রা, ২) পেট ভরে খাওয়া, ৩) আরাম-আয়েশ, ৪) নেতৃত্ব, ৫) প্রশংসা পাওয়া ও ৬) গর্ব-অহংকারের প্রতি আকর্ষণ ও ভালোবাসা। হাসান আল-বাসরীকে প্রশ্ন করা হয়েছিলোঃ “বান্দার কি লজ্জা পাওয়া উচিত না যে পাপ করার পর সে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করে, তারপর আবার পাপ করে এবং আবারো অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করে?” তিনি বললেনঃ “শয়তান ঠিক সেটাই চায়, কখনো অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করা (ইস্তিগফার) থামিয়ে দিয়ো না। ” আমি এমন মানুষদের (সাহাবা) সান্নিধ্য অর্জন করেছিলাম যারা তাদের কোন সৎকাজকে ছেড়ে দেয়া যতটা ভয় করতেন তা তোমরা তোমাদের পাপকাজের পরিণামকে যতটুকু ভয় কর তার চাইতেও বেশি। দুনিয়ার জীবনের তুচ্ছ আর ক্ষণস্থায়ী ভোগ-বিলাস ও আনন্দগুলো যেন আপনাকে মোহগ্রস্ত ও বিভ্রান্ত করতে না পারে এবং সবসময় আগামীকালের কথা বলতে থাকবেন না, কেননা আপনি জানেন না যে কখন আপনাকে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যেতে হবে। মুমিন মুমিনের অংশ।

সে তার ভাইয়ের জন্য আয়না স্বরূপ; সে তার ভাইয়ের মধ্যে অপছন্দনীয় কিছু দেখলে তাকে সংশোধন ও ঠিক-ঠাক করে দেবে এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে তার কল্যাণ কামনা করবে। আপনি আসলে কতগুলো দিনের সমষ্টি ছাড়া আর কিছুই না। যখন একটি দিন পার হয়ে যায়, আপনার একটি অংশ ক্ষয় হয়ে যায়। এক ব্যক্তি হাসান আল বাসরীকে (রাহিমাহুল্লাহ) জিজ্ঞাসা করলো, “ইবলিশ কি কখনো ঘুমায়?” তিনি বললেন, “সে যদি ঘুমাতো, তাহলে আমরা একটু অবসর পেতাম। ” আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)’ বাণী : কোন ব্যক্তি যতক্ষণ জ্ঞানার্জনের পথে থাকে ততক্ষণ সে জ্ঞানী, যখনই সে নিজেকে আলেম বলে মনে করে তখনই সে জাহেল হয়ে যায়।

নু’আইম ইবন হাম্মাদ বলেন, আবদুল্লাহ ইবন মুবারাককে (রাহিমাহুল্লাহ) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলো, “হে আবু আবদ আর-রাহমান, আপনি প্রায়ই ঘরে একা একা কেন বসে থাকেন?” তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “আমি কি একা থাকি? আমি তো থাকি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তার সাহাবাদের সাথে। ” (অর্থাৎ তিনি হাদিস অধ্যয়ন করতেন) ইমাম আশ-শাফি’ঈ ’ বাণী: যে ব্যক্তি দাবী করে যে, সে এই দুনিয়া ও তার স্রষ্টাকে একই সাথে ভালবাসে সে আসলে মিথ্যা কথা বলে। জ্ঞান হচ্ছে তা যা উপকার করে, তা নয় যা কেবল মুখস্ত করা হয়। আমি কখনই কারও সাথে বিতর্কে জয়ী হওয়ার আশায় তর্ক করিনি; বরং আমি সবসময় চাইতাম যে সত্যটা তার কাছ থেকে বেরিয়ে আসুক। তোমার জিহ্বা সম্পর্কে সচেতন হও, এটা বিপজ্জনক! এটা একটা সাপের মত এবং অনেক লোকই তাদের জিহ্বার দ্বারা মারা গিয়েছে।

নিজের প্রতি কঠোর হও, অন্যদের প্রতি হও কোমল। কর্মহীন জ্ঞান কেবলই দাম্ভিকতা।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৫৫ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.