আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী অপহূত, পরে মুক্ত

লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলী জেইদান বন্দুকধারীদের হাতে অপহূত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে এ নাটকীয় ঘটনা ঘটে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদেল আজিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অপহরণকারীরা বলেছে, দুর্নীতি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে জেইদানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজিজ গতকাল দুপুরে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখন মুক্ত।

তবে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমরা এখনো জানতে পারিনি। ’
লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ‘উদ্ধারের পর প্রধানমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপরাধ দমন বিভাগে রাখা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। ’
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, ত্রিপোলির করিন্থিয়া হোটেল থেকে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে বন্দুকধারীরা তাঁকে অপহরণ করে। ওই হোটেলের একজন কর্মী জানান, ‘সশস্ত্র ব্যক্তিদের একটি বড় দল’ ভোরের দিকে হোটেলে প্রবেশ করে প্রধানমন্ত্রীকে অপহরণ করে।

তিনি সেখানেই থাকতেন।
লিবিয়ার মন্ত্রিসভা সকালে জরুরি বৈঠকে বসে। পরে সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীকে অপহরণ করে গোপন কোনো স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দ্য অপারেশনস সেল অব লিবিয়ান রেভল্যুশনারিজ ও ব্রিগেড ফর দ্য ফাইট এগেনইস্ট ক্রাইম গোষ্ঠী এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে।
সাবেক বিদ্রোহীদের সমন্বয়ে গঠিত দ্য অপারেশনস সেল অব লিবিয়ান রেভল্যুশনারিজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় অভিযোক্তার নির্দেশে প্রধানমন্ত্রী জেইদানকে তারা ‘গ্রেপ্তার’ করেছে।

এ বাহিনী সম্প্রতি লিবিয়ায় মার্কিন কমান্ডো অভিযানে আল-কায়েদা নেতা আবু আনাস আল-লিবিকে গ্রেপ্তারের কঠোর সমালোচনা করেছে। লিবিয়ায় ওই মার্কিন অভিযানের জন্য প্রধানমন্ত্রী জেইদান দায়ী বলেও মনে করে তারা।
দ্য অপারেশনস সেল অব লিবিয়ান রেভল্যুশনারিজ ও ব্রিগেড ফর দ্য ফাইট এগেইনস্ট ক্রাইম—দুটি গোষ্ঠীই লিবিয়ার প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে তারা ব্যাপক স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে।
সাবেক একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পর লিবিয়ায় বেশ কয়েকটি মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে ওঠে।

এদের সবাইকে নিরস্ত্র বা সরকারি বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। ভারী অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনীগুলো লিবিয়ার আইনশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে বিবেচিত।
প্রধানমন্ত্রী জেইদানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অভিযোক্তার কথিত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি মন্ত্রীরা জানেন না বলে দাবি করেছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার ফেসবুক পৃষ্ঠায় এ কথা বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী উদ্ধার হওয়ার পর লিবিয়া সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ কবির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা লানাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জেইদানকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি, তাঁকে মুক্ত করা হয়েছে।

’ তবে কীভাবে তাঁকে মুক্ত করা হলো, সে ব্যাপারে বিস্তারিত বলেননি তিনি। মুখপাত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী ‘শারীরিকভাবে সুস্থ’ আছেন।
প্রধানমন্ত্রী মুক্ত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে লিবিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আল-ছাদিক আবেদেল করিম এ ঘটনাকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ বলে আখ্যা দেন।
প্রধানমন্ত্রীকে অপহরণের এই ঘটনার পাঁচ দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ায় কমান্ডো অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা লিবিকে। এ অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছে লিবিয়া সরকার।


অপহরণের ঘটনায় নিন্দা
লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে অপহরণের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা সত্যি হবে।
সামরিক জোট ন্যাটোও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। ন্যাটোর মহাসচিব অ্যান্ডার্স ফগ রাসমুসেন ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এ ধরনের সংবাদ গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমরা পুরো পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

’ এএফপি ও রয়টার্স।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.