আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিসিএসআইআর এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও র্কাযক্রম- বিসিএসআইআর গবেষণাগার, চট্টগ্রাম

প্রাথমিক ইতিহাস ১৯৬০ সনে ইউনেস্কোর প্রস্তাবনায় তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের আমলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য “ইনস্টিটিউট অব হার্বাল মেডিসিন এন্ড রিসার্চ’’ নামে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণাগার স্থাপনকল্পে দাতাগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসাবে সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. ফিন স্যান্ডবার্গকে প্রধান করে পাকিস্তান সরকার একটি উচ্চ মতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটিতে একমাত্র বাঙালী সদস্য হিসাবে ড. কুদরাত-এ-খুদা সদস্য সচিব হিসাবে কাজ করেন। কমিটি পুর্ব পাকিস্তানের সমগ্র এলাকা জরিপ করে চট্টগ্রামের এ স্থানটি নির্বাচন করে ভূমি হুকুম দখল করার প্রস্তাব দেন। উক্ত প্রস্তাবনার আলোকে পাকিস্তান সরকার বর্তমান জায়গাটি হুকুম দখল করেন। ভূমি সংগ্রহসহ প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হওয়ায় তৎকলীন পাকিস্তান সরকার চাপের মুখে সাবেক পিসিএসআইআর-এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসাবে ১৯৬১ সনে Natural Drug Research and Development Institute (NDRDI) নামে বর্তমান প্রতিষ্ঠানটি আত্মপ্রকাশ করে।

তৎকালীন শিক্ষা বিভাগে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ড. মোঃ কিয়াম উদ্দিনকে সাবেক পিসিএসআইআর কর্তৃক এ প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ৮ই ফেব্র“য়ারি, ১৯৬২ সনে দায়িত্ব নিয়ে গবেষণাগারের অবকাঠামো উন্নয়নসহ প্রাথমিক কাজ শুরু করেন। তিনি একটি ভাড়া বাসায় প্রকল্প অফিস স্থাপন করে তৎকালীন জাতীয় অর্থনৈতিক কমিশন (এনইসি) কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করেন। ১৯৬৬ সনে প্রধান গবেষণাগারসহ আবাসিক এলাকায় তিনটি আবাসিক ভবন, এ্যানিম্যাল হাউজ, পরিচালক ভবন নির্মাণ শুরু করেন এবং সমগ্র ক্যাম্পাস-এর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ভূমি দখলে আনেন। ১৯৬৭ সনে গুটি কয়েক বিজ্ঞানী নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের রসায়ন বিভাগে একটি মিনি গবেষণাগার স্থাপন করে গবেষণা কাজ শুরু করেন।

পরবর্তীতে আবাসিক ভবন তৈরি হলে তথায় মিনি গবেষণাগারটি স্থানান্তর করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগ পর্যন্ত উন্নয়ন ও গবেষণা কাজ চলতে থাকে। ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন উন্নয়ন কাজসহ সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সনের প্রথম দিকে নির্মাণাধীন প্রধান গবেষণাগার ভবনটি পাকিস্তানী রিফিউজিদের উদ্বাস্তু শিবির হিসাবে আন্তর্জাতিক রেডক্রস সংস্থার দখলে যায়। উদ্বাস্তু স্থানান্তরের পর ১৯৭৪ সনের প্রথম দিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কর্তৃক ভবনটির দখল হস্তান্তর করেন।

১৯৭৩ সনে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গবেষণাগারের উন্নয়ন প্রকল্প মঞ্জুর হলে আবার নতুনভাবে নির্মাণ কাজসহ জনবল, গবেষণা সুযোগ-সুবিধা ও সংগ্রহের কাজ চালু হয়। উক্ত উন্নয়ন প্রকল্প ১৯৮২ সন পর্যন্ত বহাল থাকে এবং এর মধ্যে গবেষণাগারের পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো উন্নয়নসহ সার্বিক গবেষণা কার্যক্রম সূচিত হয়। গবেষণার পটভূমি - বাংলাদেশ ঔষধি ও সুগন্ধি উদ্ভিদে ভরপুর। এখানে হাজার প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে। ঔষধি গাছের ব্যাপকতার পরিচয় মেলে আয়ূর্বেদী ও ইউনানী শাস্ত্রের ঔষধ তৈরির পদ্ধতিতে।

বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য রায় প্রচলিত লোকজ ঔষধগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিসিএসআইআর গবেষণাগার চট্টগ্রাম-এর বিজ্ঞানীগণ ভেষজ উদ্ভিদ হতে প্রস্ততকৃত প্রচলিত ঔষধকে আধুনিকায়ন এবং আরও নতুন ভেষজ ঔষধ তৈরির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও সুগন্ধি তেল, বিভিন্ন ফলমূল, সবজি ও সামুদ্রিক উৎস থেকে মূল্যবান ভেষজ গুণাগুণ সম্পন্ন জৈব উপাদান আহরণ তথা প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে গবেষণাগারের প্রধান উদ্দেশ্যে হলো ঃ ০১. বাংলাদেশের সকল ঔষধি ও সুগন্ধি গাছ-গাছড়ার জরিপ, তাহা সংগ্রহ, সংরণ, চাষাবাদ, ডকুমেন্টেশন এবং পদ্ধতি উদ্ভাবন। ০২. ঔষধি ও সুগন্ধি উদ্ভিদের কার্যকরী উপাদানসমূহ পৃথকীকরণ।

০৩. কার্যকরী উপাদানসমূহ জীব ও অণুজীবের ওপর ০৪. Animal Model ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন Laboratory Experiment এর মাধ্যমে ভেষজ ঔষধি গুণাগুণ পরীক্ষা এবং সেখান থেকে তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে ভেষজ ঔষধ উদ্ভাবন ও প্রস্তুতকরণ। ০৫. বিভিন্ন সুগন্ধি গাছ-গাছড়া থেকে সুগন্ধি তৈল আহরণ, তাদের বিশ্লেষণ ও বাণিজ্যিক চাষের উপযোগিতা নিরূপণ। ০৬. সামুদ্রিক উৎস থেকে জৈব রাসায়নিক উপাদান সংগ্রহ। ০৭. বিভিন্ন ফল ও সবজি থেকে উন্নতমানের সংরতি খাদ্য তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন। ০৮. এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের তাঁদের এম.এস.সি, এম.ফিল ও পি.এইচ.ডি ডিগ্রির গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তা করা।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.