অনলাইনে প্রথম আলো (prothom-alo.com) নিয়মিত পড়া হয় প্রায় ২০০টি দেশ থেকে। পড়ার পাশাপাশি পাঠকেরা প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত দেন। তাঁদের এ মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে প্রকাশিত হলো।
প্রত্যাশার সীমাটা বোঝা উচিত
ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ স্মৃতির পাতায় হয়ে থাকবে হতাশার স্মারক।
সবার মতো দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানও তাতে জ্বলেছেন নিবু নিবু হয়ে। এ নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ ব্যাপারে পাঠক ইফতেখার রাশিদ বাবুর মন্তব্য: এটা ঠিক, শ্রীলঙ্কার কাছে তার দেশের লোকের কোনো প্রত্যাশা ছিল না ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে, ব্যাপারটা কিন্তু এখনো নেই। প্রত্যাশা কোনো অজুহাত বা চাপ হতে পারে না। ভারতের জনগোষ্ঠীর এত চাপ বা প্রত্যাশা, তারাও তো চাপের মধ্য দিয়েই ভালো-মন্দ দুটোই খেলছে।
এই পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার এতগুলো বছর বা স্ট্যাটাসের দিক আমাদের যতটুকু ম্যাচিউরিটি আছে, সে তুলনায় আমাদের রেজাল্টের পরিসংখ্যানের হিসাবটা এখনো হিসাবের বাইরে। খেলোয়াড় বা ক্যাপ্টেন বদল করে লাভ নেই, গোড়ায় কোথায় যেন গন্ডগোল, বিশ্লেষণটা বিশেষজ্ঞ বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতেই ছাড়লাম ইত্যাদি।
রাফিউল ইসলাম: সাকিব যা যা বলেছে, সব শতভাগ ঠিক। কঠিনবাস্তব কথা শুনতে এমনই লাগে। বাংলাদেশ ওয়ানডেতে এখনো অনেক ভালো একটা দল, কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে নয়, ইনফ্যাক্ট টি-টোয়েন্টিতে কখনো বাংলাদেশ ওয়ানডের মতো শক্তিশালী ছিল না।
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে এমন কোনো শক্তিশালী দল হয়ে যায়নি যে হাজার হাজার দর্শক মাঠে গিয়ে চিৎকার করলেই দল জিতে যাবে। মানুষের আবেগ দিয়ে প্রত্যাশা না করে বাস্তবতা বোঝা উচিত।
কলি কায়ছার: সাকিবের সব কথা শতভাগ সত্য। কিন্তু এর চেয়ে বড় সত্য হচ্ছে, আমরা বাঙালিরা সত্য কথা সহ্য করতে পারি না। আমরা অন্যের সমালোচনা করতে পারি, কিন্তু নিজের সমালোচনা করতে পারি না।
দেশপ্রেম নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন, কিন্তু তাঁরা নিজেরাও জানেন না যে তাঁরা দেশপ্রেমিক কি না?
দেওয়ান মোশাররফ: সব দেশের জাতীয় দল নিজের মাঠে ভালো খেলে। সাকিবের কৈফিয়ত কোনোভাবেই যুক্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নয়। পুরো দলকে ঢেলে সাজানোর চিন্তা করার সময় এসেছে। সৌরভ গাঙ্গুলী যথার্থই বলেছেন, আমরা পিছিয়ে পড়ছি। কেন পড়ব? বেতন ও সুযোগ-সুবিধা কি কম দেওয়া হয়?
তারিকুল ইসলাম তুহিন: শুধু শারীরিক আর মানসিক না, বুদ্ধিগত দিক থেকেও যে আপনারা অন্য দলের চেয়ে পিছিয়ে, তা আপনার এই সাক্ষাৎকার থেকে বোঝা গেল।
প্রত্যাশার সীমা আমরা বুঝি। আমি যত দূর জানি, এই কোচিং স্টাফদের নিয়েই আপনারা নিউজিল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ করেছিলেন। তার পরও যদি আপনাদের আরও ভালো মানের কোচ দরকার হয়, বোর্ড সভাপতির কাছে যান। আপনার মানের একজন খেলোয়াড় চাপ নিতে পারেন না, কথাটা বিশ্বাস করা কঠিন। শারীরিকভাবে আপনারা দুর্বল, কিন্তু খেলার সময় তো দেখা যায় এক কিংবা দুই রান না নিয়ে শুধু ছয় মারতে যান।
নির্বাচনব্যবস্থা তছনছ, প্রশ্নবিদ্ধ আওয়ামী লীগ
এরশাদ-উত্তর গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় গত ২৩ বছরে দাঁড় করানো নির্বাচনব্যবস্থা কার্যত তছনছ হয়েছে এবারের উপজেলা নির্বাচনে। এ নিয়ে পাঠক শাহ সামসাদ লিখেছেন: উপজেলা নির্বাচনে এই ভোটকেন্দ্র দখল সংস্কৃতি চালু করে কী লাভ হলো আওয়ামী লীগের? মুখে মানুষের ভোটের অধিকার বললেও কোথায় আজ মানুষের ভোটের অধিকার? আওয়ামী লীগ নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরেছে। আমার ৪৪ বছরের জীবনে নির্বাচনের এমন নমুনা দেখিনি। এটাকে যদি গণতন্ত্র বলে, তাহলে এই গণতন্ত্র আমি চাই না।
সুজন: গণতান্ত্রিক মনোভাব ক্ষুণ্ন হয়েছে।
বলপ্রয়োগে ক্ষমতা দখল করা যায়, জনগণের ভালোবাসা আদায় করা যায় না; বরং ভালোবাসা ও আস্থা হারানোর আশঙ্কা বেড়ে যায়। ভাবতে অবাক লাগে, বিশেষ করে চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপে এতটা নগ্নভাবে ভোট ডাকাতির পরও তারা কোন শক্তির জোরে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার দাবি করে? ফজলুল হক ভূইয়া: একটা জনপ্রিয় দল নিজেদের কর্মকাণ্ডে কীভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তার জলজ্যান্ত প্রমাণ আওয়ামী লীগ।
গাউসুল আজম রাসেল: সময়োপযোগী ও পক্ষপাতবিহীন একটি প্রতিবেদন। কিন্তু এতে কি কারও টনক নড়বে? যত দিন সাধারণ মানুষ না জাগবে, তত দিন এমন চলতেই থাকবে। কিন্তু আমরা জাগব কবে? কে আমাদের জাগাবে?
৩৯ সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
ভুল ব্যাখ্যা ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়ায় ৩৯ জন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এ ব্যাপারে শিকদার দস্তগীর লিখেছেন: আসলে হওয়া উচিত ছিল শুধু রাজাকারদের তালিকা। রাজাকার বাদ দিলে এ দেশের সবাই মুক্তিযোদ্ধা। কারণ, যে পরিবার থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা ফিল্ডে যুদ্ধ করতে গেছেন, সেই পরিবারের অন্যরা কীভাবে তাড়া খেয়ে বেড়িয়েছে, কীভাবে তাদের জীবনে দুর্যোগ নেমে এসেছে, তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানে। এ জন্যই বলি, মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো রূপ করুণা প্রদান এতটা জরুরি ছিল না। তার জন্য এ মন্ত্রণালয়ের সনদ নামের লোভনীয় কাগজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় যন্ত্রে এত বুভুক্ষু সৃষ্টি হতো না।
রাষ্ট্রটাকে একটা টেকসই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র (সত্যিকার কল্যাণ রাষ্ট্র) গড়ার কঠিন দায়িত্বটা পালন করলেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান করা হতো। এখন যা হচ্ছে, তাতে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই তা দেখে লজ্জিত হন, ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেন, অভিমানে কাতর হন।
গৌরাঙ্গ গোস্বামী: এই কাজের সঙ্গে সঙ্গে যাঁরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সুবিধাবঞ্চিত আছেন, তাঁদের খুঁজে বের করে প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দেওয়া হোক।
মো. আবদুল্লাহ আল জাহিদ: জাতি হিসেবে আমরা এত অভাগা যে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধারা সনদ পান না। আর ভুয়ারা সনদ-সুবিধা নেন।
কালক্ষেপণ না করে দ্রুত ভুয়া ব্যক্তিদের সনদ বাতিল ও সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ ও অধিকার বাস্তবায়ন করা উচিত এবং ভুয়া সনদ যাতে আর ইস্যু না হয়, তার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিজেপি ক্ষমতায় গেলে উষ্ণতায় ভাটা পড়বে?
ভারতের নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদলের সম্ভাবনা আছে। নির্বাচনে কংগ্রেস হেরে গেলে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বর্তমান উষ্ণ সম্পর্ক বজায় থাকবে কি না, তা নিয়ে বাংলাদেশেও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে পাঠক আনোয়ার উল্লাহ লিখেছেন: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সম্পর্ক অনেক উষ্ণ।
আর উষ্ণতার দরকার কী? আমাদের নদীগুলো সব শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। আরও উষ্ণ হলে সেই উষ্ণতায় দেশে থাকা যাবে না।
এম এইচ রাহমুতুল্লা রব: বিজেপি সম্পর্কে যা-ই বলা হোক, তারা কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে বিরক্ত করে কম। বিজেপির সময় কারগিলে যে স্থানীয় যুদ্ধ হয়েছিল, সেটা সম্পূর্ণরূপে পাকিস্তানেরই সৃষ্ট ছিল, তা এখন সর্বজনবিদিত। আর কংগ্রেসের ‘মুখে ফরিদ, বগলে ইট’।
এ পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান, ভারত-চীন সব কটি যুদ্ধ হয়েছে কংগ্রেসের শাসনকালে। বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের হত্যাকাণ্ডও কংগ্রেসের সময়ই বেশি লক্ষ করা গেছে। শিখ-মুসলমানের বিরুদ্ধে বড় বড় দাঙ্গাও হয়েছে কংগ্রেসের শাসনকালেই।
(পাঠকের মন্তব্য বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।