জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক
যুদ্ধ করে দেশ দখলের সময় পার হয়েছে বহু যুগ আগেই। সাম্রাজ্যবাদীরা এখন নানা কৌশলে একটি দেশ দখল করে, সেদেশের সম্পদ লুট করে। তাঁবেদার সরকার বসিয়ে তার মাধ্যমে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করার বিষয়টি প্রায় সকলের জানা। কিন্তু তাঁবেদার শাসক বসানোর প্রক্রিয়াটি সহজ নয়। এর নেপথ্যে কাজ করে কৌশলী গোয়েন্দা, কাজ করে অর্থনৈতিক ঘাতক দল।
দেশের ভিতরে থেকে এবং বাইরে থেকে এসে এসব পেশাদার গোয়েন্দা এবং অর্থনৈতিক ঘাতক দল ধীরে ধীরে একটি জাতিকে নষ্ট করে, দেশের সম্পদ লুণ্ঠনের পথ তৈরি করে। এদের কাজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে বোকা বানিয়ে কোটি কোটি ডলার চুরি করা। এরা এডিবি, বিশ্বব্যাংক, ইউএসএইড, আইএমএফ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তহবিলে পৌঁছে দেয়।
আশ্চর্য হলেও সত্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ব্যবসা করতে এসে এই উপমহাদেশকে দু’শ বছর শাসন করেছে। এখনো গুটিকতক কোম্পানী, গুটিকয়েক পরিবার সমগ্র বিশ্বের প্রাকৃতিক সম্পদকে নিয়ন্ত্রণ করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
এ কাজে অর্থনৈতিক ঘাতকদের মূল অস্ত্র হচ্ছে ভুল তথ্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন, পাতানো নির্বাচন, ঘুষ, চাপ প্রয়োগ, অশ্লীলতা ও হত্যা। তাদের কর্মকান্ড সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। তবে বিশ্বায়নের এ যুগে এসব কর্মকান্ড নতুন ও ভয়াবহরূপ ধারণ করেছে।
অর্থনৈতিক ঘাতক দল একটি দেশে তাঁবেদার শাসক বসানোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দাদের ব্যবহার করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্রাজ্যবাদীদের চেহারায় আবির্ভূত আর তার রয়েছে কয়েকটি মিত্র দেশ।
বিভিন্ন দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, তাদের অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার প্রধান, এরাও এ সব কাজে সম্পৃক্ত। তাঁবেদার সরকার প্রতিষ্ঠাতে যখন গোয়েন্দা দল ব্যর্থ হয় তখন কাজে নামে দ্বিতীয় দল যারা শৃগাল নামে পরিচিতি।
এ সব গুপ্তচর বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক স্বার্থরক্ষার নেটওয়ার্কের সদস্যে পরিণত হওয়ার অনুপ্রেরণা যোগায়। এসব নেতারা এমনভাবে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ে যে, পরে তারা আনুগত্যতা প্রদর্শন করতে বাধ্য হয়। তখন সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা বিভিন্ন দেশের নেতাদেরকে তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামরিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যেভাবে খুশি ব্যবহার করে।
তাঁবেদার নেতারা তাদের নিজ নিজ দেশে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়, যেমন- শিল্প স্থাপন, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, বিমানবন্দর তৈরি ইত্যাদি। এসব নির্মাণের মাধ্যমে নেতারা তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতাকে সুসংহত করে, অর্থ আত্মসাৎ করে এবং সাম্রাজ্যবাদীদের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানিগুলোকে বিপুল বিত্ত অর্জন করার সুযোগ করে দেয়।
অথচ এই ষড়যন্ত্রকারী সংঘের সদস্যরা একটা ধারণাকে প্রচার করে যে, “প্রতি অর্থনৈতিক উন্নয়নই মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। ” কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়- দেশের জনসংখ্যার ক্ষুদ্রতম অংশটি সুফল ভোগ করে আর বৃহত্তম অংশটির দুর্দশা দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়। যেমন যত্রতত্র ফ্লাইওভারের কারণে কিছু লোক সুবিধা ভোগ করছে বলে মনে হলেও এ সব স্থাপনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের টাকা চলে যায় বাইরের দেশগুলোতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।