আস সালাম - আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক
গতকাল পড়লাম বিডিআর হত্যাকান্ডের রায়। ১৫২ জনের মৃত্যুদন্ড। হত্যাকান্ডের বিপরীতে এ যেন আরেকটি হত্যাকান্ড। কোন মামলায় এ ধরনের শাস্তি নজীর বিহীন। অবশ্য নজির বিহীন ঘটনাগুলোতো বাংলাদেশেই ঘটে থাকে।
নিম্ন আদালতের রায়ের যাবজ্জীবন উচ্চ আদালতে গিয়ে হয়ে যায় মৃত্যুদন্ড। নজিরবিহীন ঘটনা ঘটার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেন কোন জুড়ি নেই।
কয়েকবছর আগে যখন এই ঘটনা ঘটেছিল তখন আমি সামু ব্লগে নিয়মিত লিখতাম। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে সেকি তুমুল আলোচনা। সবার সহানুভূতি আর সমর্থন বিডিআর বিদ্রোহীদের প্রতি।
আমার পুরোনো লেখাগুলোতে পাঠক কমেন্টে এর ছাপ পুরোই রয়েছে এখনো। তখন আমি সরকারের সাধারন ক্ষমার সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছিলাম। ব্যস, আমাকে সহ্য
করতে হয় কঠোর সমালোচনা।
সাধারন ক্ষমার বিষয়টি আসলে কি ছিল? এটা কি ছিল প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যাচার? এই ১৫২ জন মৃত্যুদন্ডে দন্ডিতরা কি সবাই অপরাধমূলক কার্যক্রমের কারনে মৃত্যদন্ড পেয়েছেন? আমি আমার অজ্ঞতা স্বীকার করছি, মামলার ধারাবাহিক বিবরন আমার জানা নেই। কিন্তু সাবেক সংসদ সদস্য পিন্টুর তখনকার ভূমিকা পত্র পত্রিকায় এসেছিলো।
সেটা যে খুব বেশী রকমের ছিল তা তখন মনে হয় নি। অথচ পিন্টু যাবজ্জীবন পেয়েছেন। সাবেক সাংসদ হয়েও পিন্টু যদি এই রায় পান, তবে অন্যরা যারা সাধারন সিপাহী তারা কি ন্যায় বিচার পেয়েছেন?
বিডিআরের পুরো সময়কালে দুটি বিষয় জড়িত ছিল। একটি বিদ্রোহ এবং অন্যটি হত্যাকান্ড এবং নৃশংসতা। হত্যাকান্ডে বা সেরকম অপরাধে যারা জড়িত তারা মৃত্যুদন্ড পেলে তা ন্যায় বিচারই হবে।
বিশেষত যেরকম নৃশংস ভাবে লাশকে পর্যন্ত ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। কিন্তু বাকী বিদ্রোহীদের তো সাধারন ক্ষমা পাওয়ার কথা ছিল। কয়জন সেই সাধারন ক্ষমার আওতায় এসেছে? বিচারকের রায়ে কি তার কোন তথ্য রয়েছে?
বিচারক তার রায়ে বলেছেন বিদ্রোহীদের অধিকাংশ দাবী ভিত্তিহীন। যে যার যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন পাবে। সবাই নিজের ইচ্ছেতে পেশা পছন্দ করে।
চমৎকার মন্তব্য। কিন্তু বিচারকের রায়ে এটা উল্লেখ নেই যে এই বিডিআর বিদ্রোহ প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হয়নি। বিডিআর বিদ্রোহ আরো কয়েকবার হয়েছে। ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে কি বার বার বিদ্রোহ হতে পারে?
বিচারক তার রায়ে রাষ্ট্র যন্ত্রের সমালোচনা করেছেন। সমালোচনা করেছেন ডালভাত কর্মসূচীর।
যা সাধুবাদ পেতে পারে। কিন্তু যেখানে রাষ্ট্র নামক যন্ত্রটিই ত্রুটিপূর্ন, সেখানে কি অপরাধীদের শাস্তি প্রদানে এতটা কঠোরতা কি করে ন্যায়ানুগ হতে পারে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেখানে উস্কানী ছিল, যেখানে রাষ্ট্রের দায় রয়েছে, সেখানে ঢালাওভাবে বিদ্রোহীদের যাবজ্জীবন আর মৃত্যুদন্ড কতটা যুক্তিযুক্ত।
এই মামলার যে রায় দেয়া হয়েছে, তা পড়ে আমার মত একজন সাধারন মানুষের যা মনে হয়েছে তা হল বিজ্ঞ আদালত বিদ্রোহের পেছনের কারন গুলোকে তলিয়ে দেখেন নি। উনারা শুধু বিদ্রোহকালীন নৃশংসতা এবং নির্যাতনকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
যার ফলে পুরো বিদ্রোহটি উনাদের কাছে শুধুমাত্র একটি অপরাধ, এমন অপরাধ যার শাস্তি মৃত্যু অথবা যাবজ্জীবন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।