শ্রীলঙ্কার সেনাসদস্যরা কমনওয়েলথ সম্মেলন শুরুর প্রাক্কালে তামিল জনগোষ্ঠীর একদল মানুষকে রাজধানী কলম্বোতে প্রবেশে বাধা দিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের একদল টেলিভিশনকর্মীকেও দেশটিতে ভ্রমণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ বা সামরিক বাহিনী এ ব্যাপারে মন্তব্য করেনি।
প্রতিবাদ-বিক্ষোভের উদ্দেশ্যে সংখ্যালঘু তামিল সম্প্রদায়ের প্রায় ২০০ মানুষ বাসযোগে কলম্বোর উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমে পুলিশ ও পরে সেনাসদস্যরা গাড়ি থামিয়ে তাদের ফিরে যেতে বাধ্য করে।
৫৩ সদস্যরাষ্ট্রের সংগঠন কমনওয়েলথ দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের সম্মেলন কলম্বোয় আগামীকাল শুক্রবার শুরু হচ্ছে।
কলম্বো অভিমুখে তামিলদের যাত্রার আয়োজক রোমান ক্যাথলিক যাজক ইমানুয়েল সেবামালি অভিযোগ করেন, তাঁদের রাজধানীতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি এবং কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো কারণ দেখায়নি।
নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে একদল তামিলকে গত মে মাসে একইভাবে কলম্বোয় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোর টেলিভিশনের একদল কর্মী শ্রীলঙ্কায় গিয়ে গত সোমবার সরকারপন্থীদের বিক্ষোভের মুখোমুখি হন। গতকাল তাঁদের দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল সফরে বাধা দেওয়া হয়।
চ্যানেল ফোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পরাজিত তামিল বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়েছে। মধ্য-উত্তরের শহর অনুরাধাপুর থেকে চ্যানেলটির কর্মীদের ট্রেন ছাড়তে সরকার-সমর্থকেরা বাধা দেয়। চ্যানেল ফোরে প্রচারিত পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র ‘নো ফায়ার জোন: শ্রীলঙ্কা কিলিং ফিল্ডস’-এর পরিচালক ক্যালাম ম্যাকরে বলেন, ‘পুলিশ বলে, আমাদের অবশ্যই কলম্বো ফিরে যেতে হবে। ’
কমনওয়েলথ সম্মেলন চলাকালে শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে রয়েছে।
২০০৯ সালে তামিল বিদ্রোহীদের দমনে পরিচালিত সামরিক অভিযানের সময় কথিত যুদ্ধাপরাধের প্রতিবাদে ভারত ও কানাডার সরকারপ্রধানেরা ইতিমধ্যেই এবারের কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সর্বশেষ মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী নবীন চন্দ্র রামগুলামও গত মঙ্গলবার ওই সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। কমনওয়েলথের সদস্য কানাডা জানিয়েছে, একজন প্রতিনিধিকে কলম্বো সম্মেলনে পাঠানো হবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন কলম্বো সম্মেলনে যোগ দেওয়ার অঙ্গীকার করে বলেছেন, শ্রীলঙ্কায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে, সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য চাপ দেওয়া হবে। এদিকে তামিল জনগোষ্ঠী জাফনা দ্বীপে একটি পৃথক আন্দোলন শুরু করেছে।
তারা সেখানে মোতায়েন করা সামরিক বাহিনী তুলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জাফনায় না যাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এএফপি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।