আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবার শোনা যাবে তামিলদের অধিকারের উচ্চারন

ভাবনার কথা

এলটিটিই গেরিলাদের বধ করা শেষ। শ্রীলংকান সরকারের মতে, বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর সন্ত্রাসী শক্তির পতন ঘটানো হয়েছে। অবসান হয়েছে গৃহযুদ্ধের। এবার তাহলে কি? শান্তির সুবাতাস ভরা শ্রীলঙ্কা! জাতিগত সম্প্রীতির অভূতপূর্ব সূচনা! না কি আবারও দেখতে হবে সেই নিপীড়নের পুরনো চিত্র! শাসক সিংহলীদের সিংহবিক্রমে তামিল শাসন! সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বইবার কথা শান্তির সুবাতাসটাই। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে, রাজাপাকশের অনুগত সেনাবাহিনী তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে, বলে বেড়াচ্ছে নিজেদের নানা কৃতিত্ব-বীরত্বের কথা।

কি করে ঠান্ডা মাথায় এক এক করে হত্যা করা হল তামিলদের স্বাধীনতার পক্ষে লড়াই করা মানুষগুলোকে, তার গল্পও শোনা যাচ্ছে প্রতিদিন। আর এদিকে লাখ লাখ তামিল ঘুরে বেড়াচ্ছে পথে পথে। ক্ষুধার্ত, আশ্রয়হীন। এলটিটিই'র বিরুদ্ধে সমালোচনার রসদ কম নয়। সন্ত্রাস অন্যতম বড় অভিযোগ তো বটেই ।

এ ছাড়া তামিলদের মুক্তির লড়াইয়ের প্রাসঙ্গিকতার প্রতি যারা সহানুভূতিশীল থাকেন তাদেরও মত হল, এই দলের সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। সঠিক রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা না থাকলে খুব আন্তরিক লড়াইটাও কোন পরিণতি পায় না। তামিল জনগোষ্ঠীর ওপরে শাসক সিংহলী সরকারগুলোর নিপীড়ন ছিল, শোষণ ছিল। সেটাই তাদের প্রতিবাদী করেছে, মুক্তি আকাঙক্ষী করেছে। আর জনগণের সে আকাঙ্ক্ষার কথা উচ্চারন করেই এলটিটিই কাজ করে যাচ্ছিল।

দেশের উত্তর পূর্বে গড়ে তুলেছিল শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু সাধারণ তামিলদের তারা কতটা যুক্ত করতে পেরেছে বা ভারতের সাথে তাদের অতীতে আঁতাতের চেষ্টা কতটা ভাল ফল আনতে পেরেছে সে সবই প্রশ্নসাপেক্ষ। এক গাদা অভিযোগ হাজির করার বাস্তবতা সত্বেও এলটিটিই নির্মূল হওয়ার দ্বারা এটা বোঝায় না যে, তামিলদের মধ্যকার বঞ্ছনাবোধ এরও অবসান ঘটে গেছে। এটা শাসক সরকারের একটি সামরিক বিজয় মাত্র। নিষ্ঠুরতা আর নৃশংসতা দিয়ে কোন ঐক্যের রাস্তা তৈরি হয় না।

সরকারের মধ্যে জাত্যাভিমানী আচরণের সবটুকু উপাদান এখনো অটুট। যে তামিল ঘর হারালো, পরিবার হারালো; উদ্বাস্তু হয়ে যে ফিরছে পথে পথে, ধুকছে আশ্রয় শিবিরে- তার বুকে যে আগুন সেটা নিভবে কিভাবে? অনেক সমালোচনা সহ এবং বাহ্যিক অর্থে হলেও তাদের মুক্তির কথা বলা সংগঠনটিও নিশ্চিহ্ন। আর সেই নিশ্চিহ্নির পথ গিয়েছে তাদেরই রক্তের ওপর দিয়ে। কিছুদিন পরে তারা ফিরে যাবে নিজেদের বাসভূমে। আবার বাঁধার চেষ্টা করবে ঘর।

আবার দেখবে অপমান, আবার অনুভব করবে বঞ্ছনা। এবং অনিবার্যভাবে আবার এক এক করে মিলবে একসাথে। ঘুরে দাঁড়িয়ে আবার প্রতিবাদ জানাবে জাতিগত নিপীড়নের। স্বপ্ন জাগাবে মুক্তির। এবার হয়ত সঠিক পথে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.