নিজের জন্য লেখি, নিজের কথা লেখি। কোন কাজ করার ৩ টি কারন থাকতে পারে।
১- নিজের আনন্দের জন্য,
২- অবস্থার প্রেক্ষিতে,
৩- কোন প্রভুর সন্তষ্টির জন্য।
এখন কাজটা যদি ভাল কিছু হয় তবেঃ
১- নিজের আনন্দের জন্য করে থাকলে আনন্দটাই আপনার কাজের পুরষ্কার, পরকালে প্রতিদান আশা করার কোন কারন নাই।
যেমনঃ কোন দুর্যোগের খবর শুনে নিজের মনের সান্তনা দেয়ার জন্য সাহায্য পাঠালেন।
২- অবস্থার প্রেক্ষিতে করে থাকলেও পরকালে প্রতিদান আশা করতে পারেন না। তারপরও প্রভু পুরস্কৃত করতেই পারেন।
যেমনঃ কোন দুর্যোগের খবর শুনলেন তারপর অফিস থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হল সবার ১ দিনের বেতন দুর্গতদের দেয়া হবে।
৩- কোন প্রভুর সন্তষ্টির জন্য করে থাকলে প্রতিদান আশা করতে পারেন। এখন দেখতে হবে আপনি কোন প্রভুর সন্তষ্টির জন্য কাজ টি করেছেন।
১। আপনি দুর্যোগের খবর শুনে মানুষ প্রভু যেমন প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে ১ দিনের বেতন দুর্গতদের দিয়ে স্রস্টার সন্তষ্টি আশা করতে পারেন না। বরং স্রস্টাকে খুশি করতে ১ দিনের বেতন দুর্গতদের দিলে একই সাথে প্রধানমন্ত্রীও সন্তষ্ট হতে পারে।
২। ঈশ্বর প্রভুর সন্তষ্টির জন্য করে থাকলেও প্রশ্ন থাকবে যে আপনি প্রকৃত ঈশ্বরের জন্য করেছেন কি না।
যেমনঃ আপনি “ক” এর রাজ্যে বাস করেন আর বলেন “খ” এর জন্য কাজ করেন। তাহলে আশা করা যায় যে আচিরেই “ক” আপনার খোঁজে পেয়াদা পাঠাবে।
আবার স্রষ্টাকে খুশি করতে কোন খারাপ কাজ করলে? আপনাকে বুঝতে হবে যে খারাপ কাজের ফলে স্রষ্টার-ই কোন বান্দার ক্ষতি হচ্ছে, ফেলে আপনি যে জন্যই করেন না কেন স্রষ্টার খুশি হওয়ার কোন কারন নাই।
যেমনঃ আপনার কোন ভাইকে আপনার বাবা অপছন্দ করেন, তাই বলে আপনি ঐ ভাইয়ের কোন ক্ষতি করলে আপনার বাবা আপনার উপর সন্তষ্ট তো হবেন ই না উল্টো আপনার উপরও রাগ করবেন।
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে বেহেস্ত দিতে পারেন।
ঠিক, তাই বলে আপনি যদি সঠিক স্রষ্টার আনুগত্য না করেন তাহলে কি বেহেস্ত আশা করতে পারেন?
মুসলিম শব্দের অর্থ আত্নসর্মপনকারী, এটি সালাম অর্থাৎ শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান করা থেকে এসেছে। পারিভাষিক অর্থেঃ যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে মহান প্রতিপালক হিসেবে গ্রহন করবে, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবেনা এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নির্দেশিত পথে নিজের জীবন চালাবে, হালাল কে হালাল বলে মানবে এবং হারামকে বয়কট করবে, সালাত প্রতিষ্ঠা করবে, রোজা রাখবে, নিসাবের অধিকারী হলে যাকাত আদায় করবে এবং হজ্জে গমন করবে। এইসব গুনাবলীর অধিকারী হলে তাকে মুসলিম বলা হয়।
সুরা-বাকারা আয়াত ৬২ঃ إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَادُوا وَالنَّصَارَىٰ وَالصَّابِئِينَ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَعَمِلَ صَالِحًا فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ [٢:٦٢]
নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।
সুরা-বাকারা আয়াত ১৭৭ঃ لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا ۖ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ ۗ أُولَٰئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।
নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেন ঈমানের শাখা রয়েছে ষাটের কিছু বেশী। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা। -(সহীহ বুখারী ১ম খন্ড হাদীস নং ৮)
প্রকৃত মুসলিম সে-ই যার হাত ও জিহবা থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।
-(সহীহ বুখারী হাদিস নং ৯)
মুহাম্মদ ইবনুন মুসান্না (র)…আনাস ইবনে মালিক (রাঃ)থেকে বর্নিত, নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ তিনটি গুণ যার মধ্য থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। ১.আল্লাহ ও তার রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু হতে প্রিয় হওয়া। ২. কাউকে খালিস আল্লাহর জন্যই মুহব্বত করা। ৩. কূফরীতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা। সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৫ ঈমান অধ্যায়।
আমরা কি আসলেই প্রকৃত মুসলিম হতে পেরেছি? না-কি জুম্মাবারে মসজিদে হাজিরা আর কুরবানীর গরুর মাংস খাওয়ার দাবীদার মুসলিম?
অনুরূপ অন্যান্য লেখা:
১। ইস্তেখারা: কোন বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতি
২। তাকওয়া
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।