আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিতা মাতার পায়ের নীচে সন্তানের বেহেস্ত (স্মৃতি কথা)

আমার হাতদুটো পা হয়ে গেলে আর পা হাত; তাহলে কি তুমি করমদর্নের সজ্ঞাটা পালটে দিবে

আজ অফিস যাইনি। রাতে পায়ের মধ্যে একটা সুঁচ ফুটেছে তাই। তাছারা পিঠ অ ব্যাথা করছে আজ সকাল থেকে। দিন রাত কম্পিউটার নিয়ে পরে থাকলে যা হবার তাই। সকাল এ উঠে বস কে কোরিয়ান ভাষায় বুঝাতে গিয়ে পরলাম ঝামেলায়, কারন আমি কোরিয়ান ভাষা যত পারিনা কেন, সুঁচ এর কোরিয়ান ভাষাটি আমার সল্প অভিধানে নেই।

এখন দুপুর বাসায় কাজ ছাড়া একা একা লাগে, তাই একটু স্মৃতির মিনারে দাঁড়াতে ইচ্ছা করল, তবে একা নয় আপনাদের সাথে করে নিয়েই। তখন আমার বয়স কত? এই ধরুন সাত হবে। আমাদের বাসায় রোজ আরবী পরানোর জন্য এক হুজুর আসতেন। আরবী পরানোর ফাঁকে ফাঁকে তিনি হাদিস শুনাতেন। তিনি সব সময় বলতেন পিতা মাতার পায়ের নীচে সন্তানের বেহেস্ত।

আর খুব সুন্দর করে বেহেস্ত এর আরাম আয়েস বনর্না করতেন। তার কথায় বশীকরন হয়ে আমার খুব ইচ্ছা জাগলো বেহেস্ত কে নিজ চোখে দেখার। চিন্তায় পরে গেলাম, কিভাবে দেখা যাবে। হুট করে মনে পর "পিতা মাতার পায়ের নীচে সন্তান এর বেহেস্ত"। মনে মনে খুশী হয়ে গেলাম, কারন বেহেস্ত টা দেখা হয়ে যাচ্ছে আজ দুপুরের মধ্যে।

বাবা বাসায় ছিলেন না, মার পিছনে পিছনে ঘুর ঘুর করতে লাগলাম, মা কখন ঘুমায়। অলস দুপুর মা ঘুমাতে যাবেন, আমি আমার খালার সাথে খেলা করছি, কিন্তু মন আমার পরে আছে মা কখন ঘুমাবেন। একটু পর দেখি মা ঘুমাচ্ছেন, আমি আগে থেকেই জানতাম মা কোথায় সুঁচ সুতা রাখত। আমি আরো কিছুক্ষন পরে গিয়ে সুঁচ নিয়ে মার পদ শীয়রে গিয়ে দাড়ালাম। মনটা তখন খুব খারাপ লাগছিলো, কারন মা আমার ব্যাথা পাবেন।

কিন্তু আমার বেহেস্ত দেখা চাই চাই, আর মা ও তখন আমার সাথে দেখবে, পারলে আমরা ঘুরেও আসতে পারব। এই ভেবে দিলাম সুঁচ চালনা করে মায়ের পায়ের তলাতে। মা চিৎকার দিয়ে উঠলেন, আর রক্ত বের হতে লাগলো। বাসার সবাই চলে এলো, আমি অপরাধি কন্ঠে বললাম বেহেস্ত দেখার জন্য আমি সুঁচ গেথেছি মায়ের পায়ে। সবার কাছে তখনকার সময়ের জন্য আমি হাসির, আবার রাগের পাত্র হয়ে গেলাম।

এইত সেদিন মাকে ফোন করলাম, মা বলল, এখনত তুই বাবা হতে জাচ্ছিস, তোর সন্তান ও কিন্তু বেহেস্ত দেখতে চাইবে। তখন মনে হল সময় কত দ্রুত চলে, মাঝখানে ছাব্বিসটি বসন্ত পার হয়ে গেল আমার। কিছুদিন পর নিজ সন্তানের মুখে বাবা ডাক শুনবো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।