আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুসন্ধানী রিপোর্টে : সমকামিতা

বাংলা আমার দেশ

কওমি কিংবা হেফাজত নেতাদের সমকামিতার ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। এই সব বিষয় নিয়ে লিখতে নেজেরই ঘৃণা হচ্ছে। কওমিরা কত নিকৃষ্ট, কতো দুঃশ্চরিত্রে অধিকারী, কতো নোংরা এটা আমরা যারা ভূক্তভোগী কিংবা প্রত্যক্ষ্যদর্শী তারাই ভালো করে জানি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্ররা অভিযোগ করে মুহতামিমের নিকট। কিন্তু খুব একটা গুরুত্ব দেয়না।

কারণ কওমি মাদ্রাসায় ছাত্রদের কোন অভিযোগ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বুঝতে চায় না। বিশেষ মুহতামিম মাদ্রাসার একক ক্ষমতার অধিকারী হিসাবে এখানে ছাত্র/শিক্ষকেরা তার গোলামের মতো। তাছাড়া কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা এক সময় যৌন হয়রানির শিকার হতে হতে এক ধরনের অনিহার কারণে নিজেই সমকামিতার দিকে ঝুঁকে পড়ে। ছাত্র-শিক্ষক সবাই একই সাথে পাশাপাশি ঘুমানোর কারণে ধীরে ধীরে মায়া মুহাব্বত বাড়তে থাকে একে অন্যের প্রতি। অবশেষে সেই মায়া মহব্বত রূপ নেই যৌন হয়রানি/ সমকামিতার মত একটা অনৈতিক নোংরা ঘৃণিত কর্মের দিকে।

রাত্র কিংবা দিনে কওমি ছাত্ররা শিক্ষক কিংবা বড়দের কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয় হারহামিশা। লওয়াত্তাত্ব কিংবা সমকামিতার এই ধারাবাহিকতা শত বৎসর থেকে চলতেই আছে। কেবল ছোট ছোট কওমি মাদ্রাসায় নয়, সর্বোচ্চ জামেয়াতে থেকে শুরু করে মাঝারিসহ প্রত্যেক কওমি মাদ্রাসার এই অনৈতিক কর্মকান্ড বহাল রয়েছে। আমি স্বচক্ষে দেখেছি আমার অনেক শিক্ষক বউয়ের নিকট মাসে একবারাও বাড়ি যেতেন না। ছোট ছোট ছাত্র/খাদেমদের যৌন কর্ম করে নিজের যৌবনকে ঠেলে দিচ্ছেন অন্ধকারের দিকে।

অবশেষে বউয়ের নিকট যাওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলার কারনে অনেকের স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যেতে দেখেছি। যেমন, আমার দেখা সর্বোচ্চ কওমি মাদ্রাসা শত বৎসরের ঐতিহ্যবাহী জামেয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া জিরি মাদ্রাসাটি চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানাধীণ একটি দেশের বিখ্যাত মাদ্রাসা। ঐ মাদ্রাসায় বর্তশান মৃহতামিম হেফাজতের শীর্ষ নেতা আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়ব সাহেবের মেয়ের জামাই শাহাদাত হোসাইন ছিলেন আমার সরাসরি শিক্ষক। আমি যখন ১৯৯৮ সালে জিরি মাদ্রাসায় ভর্তি হই, তখন একদিন ক্লাস শেষে আমাকে তার রুমে যাওয়ার অনুরোধ করলো। যথারীতি আমি তার রুমে উপস্থিত।

তার সাথে আলাপচারিতার ফাঁকে একটা আবদার শুনে অবাক হওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকলো না। শাহাদাত হোসাইন আমাকে বললেন হাসান তোমার ভাতিজা সোলেমান কে আমার খাদেম হিসাবে খুবই প্রয়োজন। বলে রাখা ভাল যে, ঐ মাদ্রাসায় আমাদের রুমে আমার দূর সম্পর্কের এক ভাতিজা থাকতেন। দেখতে খুবই সুন্দর। খুবই মায়াবি ছেলে।

স্বাস্থ্যও ভালো। হুজুরের কথা শুনে না করিনি। আমি বললাম দেখি যদি সে রাজি হয় তাহলে আপনাকে জানাবো। একথা বলে আমি হুজুরের কক্ষ তেকে বেরিয়ে গেলাম। রাত্রে বাতিজা হুজুরের কথাটি বলতেই সে রাজি হয়ে গেল।

এখানে আরো একটি তথ্য কিংবা কথা উল্লেখ করা খুবই প্রয়োজন সেটা হলো কওমি মাদ্রাসার হুজুর কিংবা হেফাজত নেতাদের একটা নিয়ম রয়েছে সেটা হলো তাদের প্রত্যেকের একজন করে খাদেম রয়েছে। অর্থাত হুজুরের একজন করে ছাত্র রয়েছে। হুজুরের সেবা করার জন্যে। হুজুরের কাপড় পরিস্কার, শরীর মালিশ পাশে ঘুমানো, মাথায় তৈল দেওয়া, ঘরের বাজার করাসহ আরো বহু কাজে ঐ খাদেমকে ব্যবহার করা হয়। বিনিময়ে তার ভাগ্যে জুটেমাদ্রাসায় অবাধে চলাফেরা ফ্রি ট্রিটমেন্টসহ থাকা খাওয়া।

তবে তাকে বিসর্জন দিতে হয় নৈতিকতার মায়ামমতার চরম মূল্য। নিজেকে যে কোন সময় হুজুরের যৌন লালসার শিকার হতে হয়। কেবল একবার যদি কোন ছাত্র শিক্ষক কর্তৃক সমকামিতার মতো নোংরা কাজে যৌন লালসার শিকার হয়। তাহলে ঐ ছাত্র আর কিছুতেই অন্ধকার জগত থেকে ফিরে আসতে পারে না। আমি এরকম বহু ছাত্রদের সাথে কথা বলে একথাই সারমর্ম পেয়েছি যে, ঘটনার শিকার ছাত্ররা অভিজ্ঞতা শেখার করতে গিয়ে বললাম।

অনৈতিক কাজের পরে তাদের পায়খানার রাস্তায় নাকি এক ধরনের জীবাণুর উপস্থিতি তাদেরকে খুবই ঐকাজের প্রতি ধাবিত করে। একবার যে ছাত্র যৌন লালসার শিকার হয়েছে সেই ছাত্র নাকি স্বইচ্ছায় ঐ কাজে যেতে বাদ্য হয়েছে। কেননা তার পাছায় যে জীবাণু ঐগুলো সিরিয়াস চুলকাতে থাকে। যতক্ষণ আবার সমকামিতায় লিপ্ত না হয় ততক্ষণ চুলকাতে থাকে। এভাবে একজন ফুলের মতো শিশু অনৈতিকতার পথে পা বাড়ায়।

প্রতিটি কওমি মাদ্রাসায় সমকামিতার কথা দেওয়ালে কান দিলে যে কোন কেউ শুনতে পারেন। কওমি মাদ্রাসায় এই বিষয়টা খুবই আলোচিত একটা বিষয়। মুহতামিমকে একটা খাদেম হয় না। প্রয়োজনে প্রতিমাসে একটা করে বদলাতে হয়। আর যারা বক্তা বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ করে তাদের তো খাদেম ফরজ মনে করে।

কেননা, দুর দুরান্ত থেকে সফর করে আসে দেহ ক্লান্ত হয়ে পড়ে মাদ্রাসায় স্ত্রী নেই। খাদেমই সব কিছু স্ত্রীর পরিবর্তে নিজেকে সোপর্দ করে হুজুরের নিকট। এবার মূল কথায় আসা যাক। আমার ভাতিজাকে হুজরের খাদেম হিসাবে নিয়োজিত করে দিলাম। এভাবে সপ্তাহ খানেক যেতে না যেতে ভাতিজা আমাকে খুবই আনন্দিত হয়ে বলল আংকেল আমি এই মাদ্রাসায় আর পড়বো না।

আমি বাড়ি চলে যাবো। আমি বললাম কেন? কি হয়েছে তোমার? আমাকে খুলে বল? ভাতিজা সাথে সাথে দু’চোখের অশ্রু ফেলে ভে ভে কান্না শুরু করে দিল। ভাতিজা বলল তার পায়খানার রাস্তা নাকি সিরিয়াস ব্যথা করতেছে। সারারাত শাহাদাত হুজুর যৌন তৃপ্তি মেটাতে ছোট শিশুর উপর যথারীতি আমি এই বিষয়টা মুহতামিমের নিকট অভিযোগ করলাম। অভিযোগ করার কারনে মাদ্রাসা থেকে আমাকে বহিস্কারের হুমকি দেওয়া হলো।

আমি কিন্তু পিছপা হয় নি। পুরো মাদ্রাসা জুড়ে হুজুরের অনৈতিক চরিত্রের কথা জানাজানি হয়ে গেল। দেওয়ালে দেওয়ালে রাতের অন্ধকারে চিকা মারলাম। শ্লোগান তৈরী করলাম হরেক রকমের- ১. শাহাদাত হুজুরের বিচার চাই বিচার চাই সমকামিতার অবসান চাই অবসান চাই ২. পোয়া খুরের আস্তানা- জিরি মাদ্রাসায় হবে না। ৩. আজ থেকে প্রতিদিন - শাহাদাত হুজুরকে থুথু দিন।

এভাবে দেয়ালে দেওয়ালে চিকামারা দেখে মুহতামিম থেকে শুরু করে সকল ছাত্র শিক্ষক ছাড়াও এলাকার মানুষ বিষয়টা নিয়ে খুবই বিব্রতবোধ করতে লাগলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাত্রকে যৌন হয়রানির দায়ে হুজুরের কোন শাস্তি হলো না কেবল সাময়িক ছুটিতে পাটানো ছাড়া। আসলেই ভাবতেই অবাক লাগে কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা ন্যায় বিচার থেকে সর্বদা বঞ্চিত। মাদ্রাসার মুহতামিম তথা মহাপরিচালকরা একক ক্ষমতার অধিকারী হওয়াতে তার মতের বাইরে কেউ কথা বলার সাহস দেখাতে পারে না। কওমি মাদ্রাসা হলো স্বৈরতন্ত্রের এক নায়কতন্ত্রের মাহ উদাহারণ।

আমাদের দেশের মানবাধিকার সংস্থ্যাগুলো কত বিষয় নিয়ে জরিপ করে কিন্তু ছাত্র যৌন লালসার শিকার এই বিষয়টা নিয়ে তেমন উচ্চবাক্য করে না। বহু সময় পত্রিকায় ছাত্র বলৎকারের ঘটনা আসে কিন্তু ঐ ঘটনা নিয়ে মানবাধিকার সংস্থ্যা গুলো জোরালো কাজ করে না। আশা করব আগামীতে এই বিষয়টির প্রতি মানবাধিকার সংস্থ্যা সমূহ নজর দিবেন। একটি অনৈতিক মানবাধিকার বিষয়টি কর্মকান্ড এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আমরা যার যার দায়িত্ব কতটুকু সচেতন হলে অনেক কিছু পরিস্কার হবে বলে মনে করি।

আমরা দীর্ঘ দিনের একটা ইচ্ছা নির্যাতিত সকল ছাত্রদের নিয়ে একটা ডকুমেন্ডারী করা। কিন্তু সময় এবং অর্থের অভাবে কিছুতেই এগুতে পারছি না। ছাত্ররা শিক্ষক কর্তৃক বলৎকারের শিকার কিংবা বড়দের কর্তৃক ছোটরা বলৎকারে শিকার। অথচ দিন কে দিন কওমি মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রীরা যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলোর দিকে একটা নজর দিলেই আশা করি বহু মানবতাহীন কর্মের অবসান হবে এটাই প্রত্যাশা। দ্বিতীয় ঘটনা ঃ- ২০০০ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীণ আল জামেয়া ইসলামিয়া কাছেমুল উলুম মাদ্রাসা, চারিয়া মাদ্রাসার আমি তখন সবেমাত্র নতুন ভর্তি হয়েছি।

বৎসরের শুরুতে যথারীতি ক্লাস আরম্ভ হয়েগেল। কওমি নিয়মে মাদ্রাসার ছয় মাস পর পরীক্ষা সমাপ্ত। মাদ্রাসা এক সপ্তাহের জন্য ছুটি। মাদ্রাসা থেকে আমার গ্রামের বাড়ি দূরে হওয়াতে আমি বাড়ি যায়নি। এরকম আমার মতো অনেক ছাত্রই বাড়িতে যায়নি।

আমাদের মাদ্রাসার মাওলানা আলাউদ্দীন তথন ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক। পরে তিনি পদ হারিয়ে শিক্ষক ছিলেন। তিনি আামাদের সরাসরি কোরআনের তাফসীর জালালাইন শরীফ পড়াতেন। এর সুবাধে হুজুরের সাথে আমার একটা ভালো পরিচয়। তাছাড়া আমার এক চাচাতো ভাই ঐ মাদ্রাসায় বহুদিন শিক্ষক ছিলেন।

মাওলানা আলাউদ্দীন খুবই সদুর্শন। স্টাইলের মধ্যে পোষাক-চলাফেরা সব কিছু অন্য রকম। তার কক্ষে খাদেম হিসাবে যে ছাত্র থাকতো যে ছেলেটার নাম ছিলো আলী আকবর গ্রামের বাড়ি ছিলো সন্ধিপের কোন একটি গ্রামে আমর সাথে তার তেমন সুসম্পর্ক ছিলো না। আমার ক্লাসের ভালো ছাত্রদের মধ্যে সেও একজন। সে ছেলেটাও ছিলো খুবই স্বাস্থ্য সম্মত মিষ্টি হাসির এক মায়াবি চেহারর অধিকারী।

মাদ্রাসা ছুটি থাকাকালিন সময়ে একদিন ছেলেটা আমাকে বলল হাসান ভাই আপনার সাথে একটু কথা বলার আছে। আপনি একটু সময় দিতে পারবেন? আমি বললাম হ্যাঁ এখন তো মাদ্রাসা ছুটি তেমন ব্যস্ততা নেই বলেন, আকবর ভাই বলল ভাই আপনি বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা-লেখি করেন সেটা আমি জানি। তাছাড়া আপনাকে করেকবার এই মাদ্রাসা থেকে বহিস্কারের কথাও উঠেছিলো। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাদ্রাসার বিরুদ্ধে লেখার কারনে। আমি বললাম হ্যাঁ।

আপনি যা বলেন সবই ১০০% সত্যি। বিশষ করে কওমি মাদ্রাসার মিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা বাংলা করার পক্ষে মতামত দিয়েছিলাম এই জন্য জোরালো হয়ে উঠেছিলো আমাকে বহিস্কারের দাবিটা কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাকে বহিস্কার করতে পারেনি। আমার কথা শেষ হতেই আকবর ভাই বলল তার একটা নির্যতানের কথা বহুদিনের না বলা বেদনার কথা। আমাকে নাকি সে আজ শিকার করবে পত্রিকায় লেখার জন্য। আমি প্রতি উত্তরে বললাম কি বলেন? আমরা দু’জনই মাদ্রাসার ছাদের উপরে গিয়ে মুখোমুখি হয়ে বসলাম।

আকবর ভাই আরম্ভ করল তার জীবনের না বলা অসহ্য যন্ত্রনার এক বিবিষিকাময় কথা। আমিও ভালো একজন শ্রোতার মতো খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকি। তার জবানে শুনুন সেই অমানবিক ঘটনা। ভাই আমার বয়স তখন ১২ কি ১৩ জানিনা। গ্রামের হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে কোরআন হেফজ করতে লাগলাম।

হেফজখানার ভর্তি হওয়ার প্রথম বৎসরেই আমি জীবনের প্রথম আমার শিক্ষক হাফেজ ফরিদের কর্তৃক বলৎকারের শিকার হই। এভাবে দীর্ঘ তিন বৎসর মধ্যে ঐ হেফজখানায় আরো বহু শিক্ষক পরিবর্তনের কানে বহুবার যৌন নির্যাতনের শিকার হই। শেষ গ্রামের মাদ্রাসা থেকে হাফেজে কুরআন হয়ে ভর্তি হই পাশের কওমি মাদ্রাসায়। ঐখানেও একই ধরণের বিভিন্ন হুজুর কর্তৃক বলৎকারের শিকার হই। প্রথম দিকে আমার অসহ্য লাগলেও পরবর্তিতে আমি নিজেই ঐ কাজের প্রতি আগ্রহবোধ করতাম।

ঐ কাজ না করলে আমার ভাল লাগতো না। এমনকি অনেক বড় ভাই এবং শিক্ষকদের আমি নিজেই ঐ কাজে জোর করে বাধ্য করছি। তাছাড়া এই চারিয়ায় ভর্তি হয়েছি প্রায় ৫বৎসর যাবত। দীর্ঘ তিন বৎসর থেকে মাওলানা আলাউদ্দীন হুজুরের খাদেম হিসেবে রয়েছি। আজকে আপনাকে একটা দুঃখ থেকে এইসব কথা বলছি।

আমি ঈদের সময়ও গ্রামের বাড়িতে যেতে পারি না। আমা বৃদ্ধ মাকে একটু দেখে আসতে পারিনি। হুজুর কে সময় দেওয়ার কারণে। কিন্তু পরিক্ষা শেষে ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার জন্য একটু সময় পাইলাম না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই মাদ্রাসায় পড়লেও আর আলাউদ্দীন হুজুরের খাদেম হিসাবে থাকবো না।

কারণ সে তার যৌন লালসা মেটাতে আমাকে ছুটিতে বাড়েিত যেতে দেয় না। ভাই আমিও তো একজন কারো নাতি বা কারো সন্তান। অথচ হুজুর আমাকে মানুষও মনে করে না। তার কক্ষে ঘুমেছি ফ্রি খাওয়া দাওয়া করি এবং মধ্যে মধ্যে ফ্রিÑ + টাকা পয়সা দেই এই জন্য। স্ত্রীর মতো আমাকে ভোগ করে।

কিন্তু এই যে, ছয়মাস পর একটু ছুটি পাইলাম বাড়ি যেতে দিলনা। এখানে রাত দিন দু’বার করে আমার উপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে। ভাই আমার পক্ষে একটু লিখেন আমি এই অনৈতিক কাজ থেকে পরিত্রান চাই। আমার জীবনটা আজ নষ্ট হয়ে গেল। কান্না করে এইসব কথ াবলে আমার হাত ধরে।

আমি বললাম, আকবর ভাই কান্না শুরু করে দিল। আতি তখন নিজেই খুবই অপরাধী মনে হলো কারণ আমার এমন সাধ্য নেই যাতে ঐ হুজুরের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়ে নিতাম। আমি তাকে বিদায় দিয়ে কাগজ কলম নিয়ে একটি দীর্ঘ লেখা তৈরি করে কয়েকবার পড়ে মাওলানা আলাউদ্দীন হুজুরের নিকট নিয়ে গেলাম। হুজুর তার সম্পর্কে লেখাটা পড়ে অবাক হয়ে আমাকে ঝাপড়ে ধরে কান্নাই শুরু করে দিল। হাউ মাউ করে কান্না করতে করতে বললো হাসান তুমি কি জানো এই মাদ্রাসা থেকে আমাকে বহিস্কারের কতবার কথা উঠেছিলো? প্রত্যেকবার তোমার পক্ষে কিন্তু আমি দাড়িয়ে ছিলাম।

এখানে উল্লেখ করা ভালো যে, আসলেই সেই সময় মাওলানা আমাকে সমর্থন দিতো তাছাড়া সমর্থন দেওয়ার একটা কারণও ছিলো সেটা হলো আমি সে সময় মাদ্রাসার বিরুদ্ধে লিখতাম। তখন মাদ্রাসার মুহতামিমের সাথে তার একটা গুরতর বিরোধ ছিলো যার কারনে আমার পক্ষে পাথকো। আমি হুজুরের কথা শুনে নিজেকে একটু সামলে নিতে বাদ্য হলাম। আমি বললাম হুজুর তাইলে ঠিক আছে আপনার নিকট আমার একটা আবাদর আপনি কি সেটা রাকতে পারবেন? হুজুর উত্তর দিলো একটা কেনো তোমার সব আবদার আমি পুরণ করবো আমি উত্তরে বললাম আমিআকবর আজ থেকে আপনার খাদেম হিসাবে আর থাকবে না। হুজুর বলল যদি সে অন্য হুজুরদের বলে দেই? আমি বললাম সেটার দায়িত্ব আমার উপরে ছেড়ে দিন।

হুজুর স্বস্তির একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বসলেন ঠিক আছে হাসান এখন যাও আমি একটু ঘুমাই। আর আমার সেই সব ক্লাসমেট বন্ধুজন কোথায় হারিয়ে গেল জানি না। আমার এ লেখা যি কারো নজরে পড়ে তাহলে আমাকে একটু মনে করিও এভাবেই কওমি মাদ্রাসায় যৌন নির্যাতনের কতো ভয়াবহ চিত্র বিদ্যমান তার হিসাব দেওয়া যাবে না। অগনিত মাদ্রাসার বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে বহু সময় সহ তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন রয়েছে। কয়েকদিন পর মাদ্রাসায় ঘটে গেল এক কলংকিত ঘটনা।

মানবজাতির এক নিকৃষ্টতম ঘটনা। ঘটনাটি হলো একদিন সকালে কয়েক ছাত্রের মুখে মুখে শুনতে পেলাম যে, আমুক হুজুর মিজানকে কাম করে দিছে। ওদের কথা শুনে একেবারে অবাক হতভম্ব। আমি মামুনকে জিজ্ঞাসা করলাম, কিরে মিজানকে কাম করে দিছে মানে? মামুন বলল, দুর বোকার খদ্দর, রশীদ হুজুর নাকি আজ রাতে মিজানের রানের ফাঁকে গরম পানি ফেল, তার পায়খানার রাস্তা নাকি ব্যথায় জর্জরিত হয়ে গেল। অর্থাৎ বলাৎকারের শিকার।

মাগুর মাছে পায়খানা গালে নিয়ে যেমন দৌড়াদৌড়ি করে ঠিক সে রকম মিজানের কথাটা নিয়ে ছাত্ররা ফিসফিস করতে করতে অন্যান্য হুজুরদের কানে গল। কাওমী মাদ্রাসার কি ছাত্র কি শিক্ষক তাদের মধ্যে একটা পশুর চেয়ে নিম্ন নোংবা চরিত্র ব্যাড করেক্টর বিদ্যমান। ওরা লওয়াতাত্ত্ব মানে সমকামিতায় অভ্যস্ত। কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়নি এমন ঘটনা খুবই কম। বিশেষ করে যে সব ছাত্ররা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে সুন্দর তার প্রধান টার্গেট।

মাদ্রাসার ভাষায় ওদেরকে বলা হয লাল পোয়া। আমি কিন্তু জোরালো প্রতিবাদ জানালাম রশীদ হুজুরের কাছে আর পড়ব না। এ হুজুর থাকলে আমরা মাদ্রাসা থেকে চলে যাব। আমার প্রতিবাদে মাদ্রাসার সিংহভাগ ছাত্ররা সমর্থন দিল। ওদের সমর্থন পেয়ে আমি বললাম এ হুজুরকে বের করে না দিলে মাদ্রাসার তালা মেরে দেব।

মাদ্রাসার সকল ছাত্র একবাক্যে প্রতবাদ জানাল, অধ্যক্ষ সাহেব আমাদের সবাইকে বহিস্কারের হুমকি দিলেও কোন কাজে আসেনি। আমরা হলাম বিজয়ী আর অধ্যক্ষ সাহেব এবং রশীদ হুজুরে হলো পরাজয়। অনৈতিকতার পতন আর ধ্বংস অনিবর্য। মানবতা সত্য আর ঐক্যের জয় বাধ্যতামূলক। রশীদ হুজুরকে বিদায় করে দিল।

বুকভরা বেদনা আর অপমান নিয়ে ছাড়তে হল মাদ্রাসার আঙ্গিনা, এবার অন্যান্য হুজুরো আমাকে ভিন্ন নজরে দেখে। কোন কোন হুজুর যাদের মধ্যেও সমকামিতার মত অনৈতিক নেংরা কারে অভ্যাস আছে তাঁরা আমাকে দারুণ ভয় পায়, সর্বদা সন্ত্রস্ত্র। কোন সময় লাঞ্চনার খগড় মাথায় এসে পড়ে। ধরা পড়লে আর জামিন নেই কিছুতে। আমি আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।

মাদ্রাসার প্রতিটি হুজুরের কাছে একজন করে খাদেম থাকে। আমি ওদের সাথে বন্ধত্বের হাত বাড়িয়ে দিলাম। ওদের কাছ থেকে গোপনে জানতে চাইলাম। ওরা সবাই একবাক্যে স্বীকার করল যে, রাতের বেলায় হুজুররা তাদের সাথে অনৈতিক কর্মে, অপকর্মে লিপ্ত হয়। কেবল বড় হুজুরের খাদেমের ভাষ্য হলো, মুরুব্বী মানুষ আমাকে খুব মায়া করে, কোনদিন খারাপ কিছু দেখা যায় না।

ওদের কথা শুনে আমি বহু চেষ্টা করেছি তার প্রমাণ পাই কিনা? আমি সর্বদা ঐসব ছাত্রদের প্রতি নজর রাখতাম দু’চার মাস যেতে না যেতেই খোদ আমি যে রুমে থাকি সেই রুমের হুজুরও একদিন গভীর রাতে চৌকি থেকে উঠে হারিকেন জ্বালিয়ে আমার রুমের এক কোণে একজন খুব সুন্দর কঁচি ছাত্র শুয়ে আছে। হুজুর ধীরে ধীরে তার বিছানায় তার পাশে শুয়ে পড়ল। কিন্তু আমি কম্বললের ফাঁক দিয়ে ভাল করে চেয়ে রইলাম। আমার সারা দেহ জুড়ে কম্পন। তখন খোদার আরশ না কাঁপর কোন কাথাই নেই।

এই মাদ্রাসা রাসূল (সাঃ) এর ঘর, নবীর উত্তরসুরী উত্তরাধিকারী আলেম যদি এমন গর্হিত নোংরা কাজে লিপ্ত হয় তাহলে পৃথিবীর আর কোথায় আমরা নিরাপদ। নিষ্পাপ ছেলের যদি কোরআন হাদীসের মহলে নিজ শিক্ষক কর্র্তৃক যৌন হযরানির শিকার হয অন্ধকারের জগতে নিয়ে যায়, নৈতিক শিক্ষার আবর্তে যদি অনৈতিক শিক্ষর ছবক দেয় তাহলে আমরা কোথায় দিয়ে দাঁড়াব? আমি কাশি দিতেই হুজুর ছেলেটার কাছ থেকে উঠে রুমের বাইরে এক দৌড় মরল। বারান্দায় কিছুক্ষণ পায়চারি করে রুমে প্রবেশ করে আমাকে ডাকল, কি হাসান তুমি ঘুমাওনি। ঘুমিয়েছিলাম তবে আপনার পদধ্বনি শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল। হুজুর এস্ত হয়ে জানতে চাইল, তুমি কি আমার ইয়ে মানে সব কিছু দেখে ফেললে? তুমি কি আ-মি চৌকি থেকে নামার আগে থেকই চেতন-জাগ্রত? আম বললাম, হ্যাঁ, আমার কথা শুনে হুজুর এক ঝাপ্টা মেরে আমার পা ধরে বলতে লাগল, হাসান তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

আমাকে আজকের মতো ক্ষমা করে দাও। আমি এমন কাজ কোনদিন করব না। আজ তুমি ছাড়া কেউ জানে না। তুমি যদি মুহতামিম সাহেবকে বলে দাও তাহলে আমার অবস্থাও রশীদ হুজুরের মত হবে। আমি বললাম, আমি ছাড়া আরো একজন দেখেছেন।

হুজুর বললেন, সে কে বল। আমি বললাম, তিনি আমার আগেই দেখেছে। হুজুর আরো ত্রস্ত হয়ে বলল, সে কে? আমি বললাম, ঐ উপরওয়ালা আল্লাহ ছোবহানা তায়ালা। হুজুর তখন একটা স্বস্তির দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, তুমি ক্ষমা করলে আল্লাহও আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমি বরলাম, হুজুর আমি ক্ষমা করতে পারব না।

আপনি আজ ওর সাথে অপকর্মে লিপ্ত হলেন আরেক দিন অন্যজনের সাথে, এভাবে একটি নব প্রজন্মকে অন্ধকারের অতলে নিয়ে যাবেন তা কখনো হয না। হতে পারে না। আমি ক্ষমা করতে পারব না। এই অনৈতিক অপকর্মের বিচার হতেই হবে। আমার দম্ভপূর্ণ প্রতিজ্ঞার কথা শুনে হুজুরের কি নুরানী চেহারাটা কালো ছায়ায় মুহূর্তে ছেয়ে যায়।

ভিতরের রূপ প্রকাশ পায় বাইরের বুজর্গীগিরি ঢাকা পড়ে যায়। আমি সেদিন দেখেছি এমন একটা সুন্দর চেহারা মায়াবী চেহারা কি করে হঠাৎ বিষণœতার মেঘে ছেয়ে গেল। মুখোশের অন্ত রালে ওরা। বাইরে ফেরেশ্তার মত আর ভিতরে শয়তানের মত, ওদের ভিতর অন্ধকার আর কুৎসিতে ভরপুর। আমার কথা শুনে হুজুরের দুচোখ দিয়ে অনর্গল অশ্র“ ঝরে পড়তে লাগল।

হুজুর দিশেহারা হয়ে পড়ে। উদ্ভ্রান্ত পথিকের মত রুমে বের হয় আর ভিতরে প্রবেশ করে। অস্থির হয়ে গেল। মনে মনে ভাবে পালাবে নাকি অন্য পন্থা অবলম্বন করবে? আর পালালেও যাবে কোথায়? তাঁর বাড়ি যেতে একটা লম্বা নদী পার হতে হয়। এতোা রাত যাবে কোথায়, বেসাহারা বেদুঈনের ন্যায় সংকটের পাহাড় মাথায় নিয়ে অস্থিরতার পথের যাত্রী।

কিয়ামতের ছোগরা যেন চলছে। যেন পরকালের ভয়াবহ শাস্তির চেয়ে আরো কঠিনতর শাস্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। হুজুর দীর্ঘক্ষণ পর আবার কাছে এসে বলল, হাসান, হাসন, তুমি আমার ধর্মের ছেলে, আমি তোমার বাবার মত, তুমি আমাকে কেবল একবার ক্ষমা কর, মাত্র একবার। আমি বললাম, আপনার মত বাবর আমার কোন দরকার নেই, আপনি এখান থেকে যান, অন্যথায় আমি চিৎকার মেরে এক্ষনি সবাইকে ঘুম থেতে জাগিয়ে জানিয়ে দেব। আমার কথা শুনে হুজুর একদম নিশ্চপ নিস্তব্ধ হয়ে গেল।

আমার কাছ থেকে সরে দাঁড়াল। ভোরের আযান পড়ার সাথে সাথে সবাই ঘুম থেকে জাগে উঠতে না উঠতে আমি তাঁর অপকর্মের সব কথা জানিয়ে দিলাম। আমার পাষাণ হৃদয় হুজুরকে ক্ষমা করেনি হাজার মিনতির পরও। সেদিন ক্লাসের সময় হলে কোন ছাত্র হুজুরের কাছে পড়তে ক্লাস করতে যায়নি। অধ্যক্ষ সাহেব সেই হুজুরকে জিজ্ঞেস করে, কি ছাত্ররা আপনার কাছে ক্লাস করতে যাচ্ছে না কেন? অধ্যক্ষে কথার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

দিবে কেমনে? তিনি তো মানুষ নামের কলংক। তিনি তো পশু। বরং পশুর চেয়ে অধম। একইভাবে সেই হুজুরও মান-সম্মান, ইজ্জত মাদ্রাসার বারান্দায় রেখে নতশিরে পবিত্র স্থান ছেভড়ে চলে যায়। হুজুর একটা যায় একটা আসে।

আমাদের কওমী মাদ্রাসা শিক্ষকের কোন অভাব নেই। তারপর হুজুরেরা কিছুটা সতর্ক হয়ে যায়। অভ্যাস কি আর ছেড়ে দেওয়া যায়। সাময়িক একটু সতর্ক আর কি? সামান্য হলেও অনৈতিক অপকর্ম বন্ধ করতে পেরেছি এজন্য গর্ববোধ করি। তবে এলেখার মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশের সকল কওমী মাদ্রাসা থেকে অপকর্মের অবসান চাই।

এ অনৈতিক কর্মকান্ড থেকে পরিত্রাণ চাই। উৎস : ১. বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা। ২. শ্বেতপত্র : হেফাজত-জামায়াতের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ৪০০ দিন


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.