ভারতীয় সংবাদপত্র টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত সুবীর ভৌমিকের সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধ ঘিরে সৃষ্ট বিতর্ককে ‘তথ্যভিত্তিক’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এই জ্যেষ্ঠ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের অবস্থানগত ভিন্নতা বিশেষত সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের সাংঘর্ষিক অবস্থান আমার নিবন্ধে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। ”
তিনি বলেন, ওই নিবন্ধের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ‘আঞ্চলিক রাজনীতি’ খতিয়ে দেখা। ঘটনা পরিক্রমায় ভারতের কূটনীতিকরা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীনা সহকর্মীদের সঙ্গে অধিকতর স্বচ্ছন্দ্য। আবার বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ‘অভিন্ন অবস্থানে’ রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের দাবি অস্বীকার করছে দিল্লির সরকারি সূত্রগুলো।
এই পরিপ্রেক্ষিতের ওপর আলোকপাত করা হয় নিবন্ধে।
“নিবন্ধের শেষে কেবল ১৯৭১ এর ঐতিহাসিক পটভূমি তুলে ধরা হয় এবং সে সময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী অবস্থানের ওপর দৃষ্টিপাত করা হয়। আমি শুধু তখনকার ভারতের উদ্যোগের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এবং কখনোই বলিনি যে, ভারতের এখন হস্তক্ষেপ করা উচিত। ”
সুবীর ভৌমিক বলেন, “এ থেকে অন্য কোনো বক্তব্য হাজির করা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। একজন বাঙালি হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের জন্য আমি গর্ব করি এবং এ সম্পর্কে আমি বিস্তারিত লিখেছি।
আমি কখনোই চাইবো না কেউ এই মহান দেশের সার্বভৌমত্বকে খাটো করুক। ”
সম্প্রতি টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধ নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে, তার জবাবে এই বক্তব্য দিয়েছেন সুবীর।
তার নিবন্ধ নিয়ে ডানপন্থী পত্রিকা আমার দেশের অনলাইন সংস্করণের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে বিএনপির সাংসদ শাম্মী আক্তার মঙ্গলবার ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। সুবীর ভৌমিকের গ্রেপ্তারও দাবি করেন তিনি।
শাম্মী আক্তার হরতাল চলাকালে একটি সমাবেশে বলেন, “একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক সুবীর ভৌমিক আহবান জানিয়েছেন যেন ভারতীয় সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে এ দেশে অভিযান চালায়।
অবিলম্বে সুবীর ভৌমিককে গ্রেপ্তার করা হোক।
“কোথাকার কোন সুবীর ভৌমিক? তিনি এত সাহস পেলেন কিভাবে? আমরা অবিলম্বে তার গ্রেপ্তার চাই। ”
সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক ৩২ বছর যাবৎ সাংবাদিকতা করছেন, তার লেখা বইও রয়েছে। সাংবাদিকতা জীবনের ১৭ বছরই তিনি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে কাজ করেন।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির রানী এলিজাবেথ ফেলো, ওয়াশিংটনের ইস্ট-ওয়েস্ট সেন্টারের ফেলো এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট ইউনিভার্সিটির ইউরেশিয়ান ফেলো তিনি।
উত্তর-পূর্ব ভারত বিশেষজ্ঞ সুবীর গণমাধ্যম, অভিবাসী, সংখ্যালঘু ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের নিয়েও দুটি বইয়ের সম্পাদনা করেছেন। ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশিক্ষণেও নিয়োজিত তিনি।
সুবীর ভৌমিকের গ্রেপ্তার দাবি করা সংরক্ষিত আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার গত বাজেট অধিবেশনে সরকারদলীয় এক সাংসদের বক্তব্যের প্রতিবাদে ‘অশালীন বক্তব্য’ দিয়ে আলোচনায় উঠে আসেন।
ঢাকার রামপুরায় বর্তমান ঠিকানা এবং হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকার গোছাপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা শাম্মী সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন ও সংসদের ওয়েবসাইটে পেশা লেখা রয়েছে ব্যবসা।
তিনি লাইব্রেরি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির একজন সদস্য।
১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদিকা ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।