আসছে নতুন প্রজন্ম , আসবে নতুন দিন !
আগের পর্বের পর...
আল্লাহর রহমতে কোনো রকম বিপদ ছাড়ায় পরীক্ষাগুলো শেষ করলাম। এবার রেজাল্টের অপেক্ষা। রেজাল্ট যে কি আসবে আমি নিজেই সন্দিহান, কারন পরীক্ষায় যে কি প্রশ্ন এসেছিলো আর আমি কি লিখেছে আমি নিজেই জানি না। অবশেষে আসলো রেজাল্টের দিন।
আমি ইংরেজি নিয়ে সন্দেহ করে ছিলাম, কিন্তু রেজাল্টে এ দেখি ইংরেজিতে টেনেটুনে পাশ আসলেও ফেল মেরেছি বাংলায়
রেজাল্ট পেয়ে সে এক কঠিন অনুভূতি।
দুই পাশের কান সহ মাথার চান্দি লাল হয়ে গরম হয়ে গেলো। মাথা ঝিম ঝিম করতে লাগলো , দুপুর বেলাতেই আমার মনে হলো সন্ধা নেমে এসেছে।
সবচেয়ে বড় চিন্তা হলো এখন আমি বাড়ি যাবো কোন মুখে। বিগত ছাত্র জীবনে এই ব্যাপারে অভিজ্ঞতা নাই। সাত-পাঁচ চিন্তা করতে করতে কখন যে হেঁটে হেঁটে দেখি বাসায় এসে গেছি।
যাই হোক চুপি চুপি রুমে এসে পড়ার টেবিলে মাথা নিচু করে বসে থাকলাম। খারাপ কথা বাতাসের আগে ছড়ায়, এক্ষেত্রে আমার একটা উপকার করলো! আমাকে আর নিজের মুখে এ কথা কাউকে বলতে হলো না। আস্তে আস্তে সবাই জেনে গেলো।
এতো বড় ছেলে ফেল করেছে, বাবা-মা আর ছেলেকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন মনে করলেন না। হয়তো আমার মুখের অভিব্যক্তি দেখে বুঝেছিলেন এর দরকার নেই।
কয়েকদিনের মধ্যে পরিবেশ কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসলো।
যেহেতু এক বিষয়ে ফেল করলে শুধু সেই বিষয় পরীক্ষা দিলেই হয় তাই আদা-পানি খেয়ে লেগে পড়লাম পড়ার টেবিলে। বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন একত্র করে নিজেই একটা সিলেবাস বানালাম। এমন একটা সিলেবাস যে যদি মঙ্গল গ্রহ থেকে স্যার এনেও প্রশ্ন বানায় তাও যেনো পাশ নাম্বার থাকে। রচনায় ছিলো ২০ নাম্বার।
পাঁচ টি রচনা থেকে একটি আনসার করতে হতো। আমি গবেষনা করে দেখলাম প্রকৃতির উপর একটা রচনা থাকেই। তাই প্রকৃতির উপর যত রচনা হতে পারে মোটামোটি সব আয়ত্ব করে মাথায় রাখলাম।
পরীক্ষার কয়েক মাস আগেই আমার সিলেবাস শেষ করে শুধু রিভিশন দিতে লাগলাম। আসলো পরীক্ষার দিন।
আলহামদুলিল্লাহ! প্রশ্ন আমার সিলেবাসের ভিতরেই হয়েছে। রচনা এসেছে বর্ষা কাল। খুশি খুশি মুখ নিয়ে পরীক্ষা শেষ করে বের হলাম। এবার রেজাল্ট এর অপেক্ষা। আমার মনে কনফিডেন্ট ছিলো, পাশ করবোই, শুধু মার্ক কত আসে সেটা দেখার বিষয়।
অবশেষে মার্ক শিটে দেখলাম ৫৮ ।
ডিগ্রি পাশ করার পর জগন্নাথ এ ভর্তি হলাম উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে। বছরে শুরুতে পোলাপানের মধ্যে দেখি ডোন্ট কেয়ার ভাব, কিন্তু আমিতো ঘর পুড়া গরু সেকশনের মামাকে বললাম মামা আমাকে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন মিল করে দেন (কিছু টাকা দিতে চাইলাম) মামা বললেন দিবোনে... পেরের দিন আবার বললে বললেন ঠিক আছে.... তারপরে আর এক দিন বললে বললেন - আপনি এখনি এতো ব্যস্ত হয়েছেন কেনো?
মামা তো আর জানে না " সদ্য কি ক্ষতের জ্বাল আমার বুকে জ্বলছে"
জীবন কথার বাকি লেখাগুলি এই বিভাগে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।