আহসান জামান
নিঃসঙ্গ অনিদ্রায়
কোন স্বপ্নসখে মাতৃগর্ভ থেকে উগরে দিলো আমাকে
আজও সে প্রশ্ন যায়নি তামা হয়ে, কেবল শুনেছি
সময়ের গম্ভীর কামানের হাক আর বাঘের থাবায়
সারা শরীর। অস্পষ্ট উচ্চারণে অশ্লীল গানের কলি,
ম্লান মুখে ফিরেছি বাড়ীর চৌকাঠে একা;
জানি জন্মের এই পাপ মুছে যাওয়ার নয়।
ক্ষুধার যন্ত্রণায় লীন হয়ে ছুটে গেছি কত দূরত্বে,
কাঁটা-তাঁর ঘেরা পার্কে বসে শুনেছি অজ্ঞাত যুগলের
হাসির কল্লোল আর হিরন্ময় রৌদ্রের চুম্বন;
পাখির পালকের মতো খসে গেছে আমার যৌবন।
আমার ভিতর একা সাঁঝবেলায় উবু হয়ে দেখেছি
কত যুদ্ধাহত সৈনিকের কঙ্কাল। মৃত্যুর মতো
ভয়ঙ্কর ঝড়ে উড়িয়েছে আমার শৈশব।
পুঁড়ে পুঁড়ে, রক্তাক্ত জবার চোখে
ব্লোটিং-পেপারের মতো চুষে নিয়েছি
আমার কৈশোর; স্বপ্নের উড়োজাহাজ।
কী শান্ত নরোম গলায় ডাকে আজ মৃত্যুপ্রহর;
দীপহীন, নিঃসঙ্গ অনিদ্রায়।
বড্ড একেলা হয়ে
যেতে যেতে থেমেছি কোথাও
পলকে হলুদ সরিষাবনে, বর্ষাকদমের
কাছে বসেছি নির্দ্বিধায়।
নারীদের খোলাচুলের ভিতর লুকিয়ে
অসহায় দু'চোখে দেখেছি
কেবল সন্ন্যাসীর গেরুয়ারঙ।
মৃতশ্লেজে টেনে নিয়ে যাচ্ছে
কোথাও পুরাণ স্বপ্নের পালক।
সাদা ঘাসফুলে দেখেছি পুনশ্চঃ
অবাক, বড্ড একেলা হয়ে।
পার্কে
কী অমেয় পংক্তিভোজনে ছুটে যেতাম
পার্কের নির্জনতায় আহ্লাদে নেচে নেচে;
দিনমান ধরে কী উল্লাসে চলতো
সেই ভালো লাগা নারী; তার
চুল, ত্বক, নোখ, ঠোঁটের কম্পন ...
কবিতার খসড়ায় রং হয়ে যেতো তার নাম।
অশান্ত মন, সামান্য মেঘের কাছে
আজীবন প্রার্থনা করেছি প্রবল বর্ষার।
কতো খররোদ্রে পুড়েছি একা; কোথাও
পাইনি জল। তৃষ্ণার্ত দু'চোখে দেখেছি কেবল;
শহরের ভাঙাট্যাপে অবিরত জল
কী সস্তায় ঝরেছে সারাবেলা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।