ঘটনার শুরু গত অ্যাশেজের ট্রেন্টব্রিজ
টেস্ট থেকেই । ওই টেস্টে ব্যাটের কোণ
ছুঁয়ে ক্যাচ হওয়ার পরও স্বেচ্ছায় মাঠ
ছেড়ে বের হননি স্টুয়ার্ট ব্রড ।
এটিকে ‘বড় ধরনের প্রতারণা’
আখ্যা দিয়ে অস্ট্রেলীয় কোচ ড্যারেন
লেম্যান বলেছিলেন ,
ফিরতি অ্যাশেজে ব্রডের জীবন দুর্বিষহ
করে তুলবে অস্ট্রেলিয়ার দর্শকেরা ।
ঘটনাটি যে বিন্দু
থেকে সিন্ধুতে পরিণত হবে—অনুমিতই
ছিল । হলোও তা-ই ।
ব্রিসবেন টেস্টের
প্রথম দিন থেকেই ব্রডের পিছু
নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার দর্শকেরা ।
দুয়োধ্বনি তো আছেই ,
মাঠে শোভা পাচ্ছে তাঁকে খোঁচা দেওয়া বিভিন্ন
ব্যানার । ব্রডকে ‘স্টুয়ার্ট ফ্রড’
বলা হচ্ছে । একজনের
ব্যানারে শোভা পাচ্ছে এই লেখা: ‘গত
গ্রীষ্মে তুমি কী করেছো আমি জানি !’
ঘটনা এখানেই শেষ নয় । ‘১০০,০০০
লাইকস অ্যান্ড আই উইল ট্যাকল স্টুয়ার্ট
ব্রড অন বক্সিং ডে’
শিরোনামে খোলা হয়েছিল ফেসবুক পেজ ।
পুলিশ এক ব্যক্তিকে আটকও
করেছে মাঠে শূকর ছেড়ে দেওয়ার
চেষ্টা করার অপরাধে । সেই শূকরটির
গায়ে নাকি লেখা ব্রডের নাম ! ৩১ বছর
আগে এই মাঠেই
একটি ওয়ানডে ম্যাচে শূকরছানা ছেড়ে দেওয়ার
ঘটনা ঘটেছিল । যেটার গায়ে লেখা ছিল
দুই ইংলিশ খেলোয়াড়ের নাম
—‘বোথাম’ (ইয়ান বোথাম)
এবং ‘এডি’ (এডি হেমিংস) !
লেবু বেশি কচলালে তেতো হতে বাধ্য—
এ ভাবনা থেকেই কিনা এ আগুনে জল
ঢালতে চাইছে ক্রিকেট
অস্ট্রেলিয়া (সিএ) । ফেসবুকের
পৃষ্ঠাটি সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ
নিয়েছে সিএ । ওই ফেসবুক পেজের
স্বত্বাধিকারীকে সতর্কও
করে দেওয়া হয়েছে ।
অন্যদিকে মাঠে শূকরছানা আনার জন্য
নাম না প্রকাশ করা আরেক সমর্থকের
বিরুদ্ধে ‘পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা’র
অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ ।
ব্রডকে ‘ভয়ানক প্রতারক’ আখ্যা দেওয়া,
অস্ট্রেলিয়ার দর্শকদের
তাঁকে নাজেহাল করার উসকানি দেওয়ার
সময় কিন্তু নীরবই ছিল সিএ ।
আইসিসি তখন লেম্যানকে তিন হাজার
ডলার জরিমানা করলেও এ
ব্যাপারে কিছু বলেনি ক্রিকেট
অস্ট্রেলিয়া । তবে পরিস্থিতি লাগামের
বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা থেকেই
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই
নেওয়া হয়েছে । সিএ সাফ জানিয়েছে ,
কোনো ‘অসামাজিক আচরণ’ কিছুতেই সহ্য
করা হবে না ।
কোন ক্রিকেট ম্যাচেই
তা করতে দেওয়া হবে না ।
সিএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ওই
পেজটি সরিয়ে ফেলতে ফেসবুক
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ
করা হয়েছে । এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষকে এ-সংক্রান্ত সকল তথ্য
দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে । ’
সংস্থাটিও এ-ও বলেছে, ‘ক্রিকেটে এ
ধরনের কর্মকাণ্ড কিছুতেই
মেনে নেয়া হবে না । অপরাধী অবশ্যই
ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হবেন ।
জরিমানার ক্ষেত্রে হয়তো ভেন্যু
ভেদে তারতম্য ঘটবে ।
তবে প্রতি অপরাধের ক্ষেত্রে এর
জরিমানার ব্যাপ্তি কয়েক হাজার ডলার
হতে পারে । ’
অন্যদিকে ইংল্যান্ড ক্রিকেটে বোর্ড
(ইসিবি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ,
‘খেলোয়াড়ের প্রতি এ ধরনের হুমকির
বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে ইসিবি ।
সঙ্গে এ-ও দাবি জানাচ্ছে , ক্রিকেট
অস্ট্রেলিয়ার
অনুরোধে সাড়া দিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ
যেন এ ধরনের পীড়াদায়ক ও
আক্রমণাত্মক পেজ সরিয়ে নেয় ।
সহিংসতার প্ররোচনাদায়ীর
কোনো জায়গা নেই ক্রিকেটে ।
’
ব্রডকে এমন নাজেহাল হতে দেখে শেন
ওয়ার্নও ক্ষোভ ঝেড়েছেন ব্রিসবেনের
‘কুরিয়ার মেইল’-এর ওপর । ওয়ার্ন
বলেছেন, সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল
আচরণ করতে হবে , ‘পত্রিকাটি যে কাণ্ড
করেছে , সেটি শিশুতোষ বৈ কিছু নয় । ’
চ্যানেল নাইনকে ওয়ার্ন বলেছেন , ‘এসব
ঘটতে পারে কেবল প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে । আমাদের মিডিয়া যেন
সবচেয়ে বাজে । বহু আগ থেকেই
অস্ট্রেলীয় পত্রপত্রিকাগুলো
সবচেয়ে বাজে প্রিন্ট
মিডিয়া হিসেবে পরিচিত ।
সত্যি তারা ভয়ংকর । আমি তাদের
বলতে চাই , এসব কিন্তু শেষ পর্যন্ত
ব্রডের উপকারেই আসছে ,
এটা সরাসরিভাবে আমাদের ওপর
পাল্টা আঘাত হয়ে আসছে । ’
মিডিয়ার আক্রমণ জীবনে কম
সইতে হয়নি ওয়ার্নকে । ফলে ব্রডের
জ্বালা তার চেয়ে কে বেশি বুঝবে !
সূত্রঃ প্রথম আলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।