এরশাদের জাতীয় পার্টির একপাল মন্ত্রী অন্তবর্তীকালীন মন্ত্রীসভায় ঠাঁই দিয়ে এবং ঠাঁই নিয়ে বড় একটি কৌশলগত ভুল করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ এবং এরশাদ। কৌশলটা হওয়া উচিত ছিলো গোপন সমঝোতায় প্রবল সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলে মহাজোট থেকে বেড়িয়ে গিয়ে একাই নির্বাচন করবো বলে এরশাদের ঘোষণা দেয়া । বলতে পারেন এ দুদলের বর্তমান সিদ্ধান্তকে কেন ভুল বলছি,তাহলে মিনিট খনেক সময় হাতে নিয়ে নিচের কথাগুলো পড়ুন।
ধরে নিলাম বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বচনে এলো না এবং নির্বাচন প্রতিহতও করতে পারলো না। সে ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের প্রধান প্রতিপক্ষ এবং অওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসেবে এরশাদ অনায়াসে মাঠ মাতাতে পারতো ।
নৌকা ঠেকাও মানসিকতার ভোটার কিন্তু সক্রিয় বিএনপি কর্মী নন এমন ভোটার রা ভোট কেন্দ্রে যেতো লাঙলে ভোট দিতে প্লাস নৌকার ভোট,দুই ভোট মিলে মোট কাস্টিং ভোট মিলে যে সংখ্যা দাঁড়াতো তা নির্বাচনকে অনেকটাই বৈধতা দিতো। সে ক্ষেত্রে প্রদত্ত ভোটের হার আমার ধারনায় কমপক্ষে ৪৫ থেকে ৫০ % এ দাঁড়াতো। এখন কিন্তু তা দাঁড়াবে না । কারন এই মন্ত্রীসভায় যোগ দিয়ে এরশাদের জাতীয় পার্টি এবং অওয়ামী লীগ ভোটারদের কাছে সমার্থক হয়ে গেছে। নৌকা ঠেকাতে লাঙ্গল এই বোধ এই মুহুর্তে ভোটারদের মাঝে নেই।
আগামী এক-দেড় মাসে তা বদলাবেও না । উপরন্তু একই মন্ত্রীসভায় থাকায় মহাজোটে থাকা না থাকার পার্থক্য অতিশয় গৌন হয়ে গেছে।
এরশাদ নির্বাচনের আগে লাঙল নিয়ে যতই আওয়ামী লীগ বিরোধী কথা বলুক,মানুষ গিলবে না। সে বিশ্বাস যোগ্যতাও এরশাদ নিজেই হারিয়েছেন,‘থুতু দেবে’ , ‘বিএনপি নির্বাচনে না গেলে সে নির্বাচনে জাতীয় পার্টিও যাবে ন ‘ জাতীয় কথা বলে নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া এবং মন্ত্রীসভায় যোগ দেবার মাধ্যমে। আগামী দেড় মাসে “গরুমার্কা” ইমেজ পুনরুদ্ধারও অসম্ভব।
এমনকি নির্বাচনের আগে মন্ত্রীসভা থেকে বেড়িয়ে এলেও।
এরশাদের জাপা ছাড়া অন্য যে দলগুলো নির্বাচনে যাবে সেগুলোর তিনশ আসনে প্রার্থী দেবারও ক্ষমতা নেই। আর যাওবা থাকবে তারাও এই মন্ত্রীসভায় যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের মিত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছে। ফলে আওয়ামী লীগের পক্ষে একটি কার্যকর বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসার মধ্যদিয়ে বিএনপির অনুপস্থিতিকে গৌণ করে প্রতিষ্ঠা করা কার্যত অসম্ভব।
কিন্তু জাতীয় পার্টি যদি মহাজোট এবং মন্ত্রীসভা দুটো বর্জন করে নির্বাচনের মাঠে থাকতো তা হলে লড়াইটা তীব্র হত।
বিএনপির বিকল্প এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সাধারণ ভোটাররাও নির্বাচনের দিকে ঝুঁকতো। জমে উঠতো নির্বাচন।
এজন্যই বলছি বড় ধরনের কৌশলগত ভুলটা আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি ইতোমধ্যেই করে ফেলেছে। যা আর শুধরানোর সময় নেই। অন্তত জানুয়ারীর নির্বাচনে।
আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি বাইরে শত্রুতা ভেতরে গোপন সমঝোতার কৌশলে এ কাজটি অনায়াসে করতে পারতো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।