আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিয়ত ভালো হলে মিথ্যাকে মাফ করা যায়

গণমাধ্যমে এসেছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের মধ্যে সংলাপ হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব তা অস্বীকার করেছেন। অসুবিধা নেই। ফলপ্রসূ সমাধান প্রকাশ্য সংলাপে হবে না। নিয়ত ভালো হলে সে মিথ্যাকে মাফ করা যায়।

কিন্তু মিথ্যা বলে যদি কোনো ফল না পাওয়া যায় তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। সংলাপে ফল পাওয়ার সময় সংকীর্ণ হয়ে আসছে। যে কোনো উপায়ে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তার আগে অন্তত ছয় সপ্তাহ সময় লাগবে নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য। দ্রুত সিদ্ধান্তে পেঁৗছতে না পারলে সংলাপ করেও কোনো লাভ হবে না।

রবিবার এটিএন নিউজের টকশো 'নিউজ আওয়ার এঙ্ট্রা'-এ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান এ কথা বলেন।

মুন্নী সাহার উপস্থাপনায় তিনি বলেন, বিএনপি যেটা চাচ্ছে সেটা করতে হলে সংবিধান অবশ্যই সংশোধন করতে হবে। সরকারি দল সম্মত না হলে সেটা সম্ভব নয়। তারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই একটা সর্বদলীয় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন চায়। কিন্তু পার্লামেন্টের সবগুলো দল অংশগ্রহণ করলে সেটাই সর্বদলীয় সরকার।

সেখানে মন্ত্রিসভার একজন সদস্যও যদি কোনো বিষয়ে আপত্তি জানান সেটা হবে না। কিন্তু এখনকার সরকার সংসদ কর্তৃক নির্বাচিত ২০০৮ সালের সরকারের ধারাবাহিকতা। নতুন কোনো সরকার নয়। এ ছাড়া বর্তমান কার্যবিধিমালা অনুযায়ী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অসীম। মন্ত্রিসভায় যদি ৫০ জন সদস্য থাকে তাদের সবার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর একার ক্ষমতা বেশি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মন্ত্রীরা পালন করতে বাধ্য। রুলস অব বিজনেস ভায়োলেট করে দেওয়া কোনো অর্ডারকেও প্রধানমন্ত্রী হালাল করে দিতে পারেন। তার হাতে এত ক্ষমতা যে সেখানে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা অর্থহীন। এখানে রুলস অব বিজনেসে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমিয়ে অন্য সদস্যদের ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি চিন্তা করা যেত। কিন্তু এটা বিএনপি বলে না।

কারণ, তারাও একই রুলস অব বিজনেসের সুবিধা ভোগ করতে চায়। এরা সব ব্যাপারে ভিন্ন মতাবলম্বী না। ট্যাঙ্ ফ্রি গাড়ি আনার বেলায় সব দলের এমপিরা একমত। শুধু একমত হতে পারেন না জাতীয় ইস্যুতে। আমাদের মতো গরিব দেশে কয়েক কোটি টাকা ট্যাঙ্ ফ্রি করে গাড়ি বিক্রি করে পয়সা কামাই করার মতো অনৈতিক বিষয় তো আর কিছু হতে পারে না।

সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, তত্ত্বাবধায়কের ধারণা আওয়ামী লীগই চালু করেছে। এখন যদি তারা বলে এর যৌক্তিকতা নেই সেটা বিশ্বাস করা কঠিন। এ ছাড়া যেটা নিয়ে '৯৬ সালে বড় ধরনের আন্দোলন হয়েছে সেখানে রাতারাতি পরিবর্তন করতে হলে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা উচিত ছিল এবং তাদের নির্বাচনী মেনুফেস্টোতে সেটা রাখা উচিত ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারেও ত্রুটি ছিল যার বড় সাক্ষী আমি। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্বলতাগুলো সংশোধন করা সম্ভব নাকি আদৌ সম্ভব না সেটা বিবেচনা করা উচিত ছিল।

এখন প্রশ্ন হলো তত্ত্বাবধায়কের বদলে যেটা আসবে সেটা যেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। যে পদ্ধতিতেই হোক গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার কোনো আপত্তি নেই।

বিএনপি বলছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ ব্যক্তির কাছে দায়িত্ব দিতে। এমন লোক কোথায় পাওয়া যাবে? বিএনপি গ্রহণ করলে আওয়ামী লীগ করবে না। আওয়ামী লীগ গ্রহণ করলে বিএনপি করবে না।

সুতরাং, এটাও কোনো সুস্পষ্ট সমাধান নয়। ড. আকবর আলি খান বলেন, বাংলাদেশের আজকের রাজনীতিতে তমশ্যাচ্ছন্ন অধ্যায়ের একের পর এক পুনরাবৃত্তি ঘটছে। আমরা প্রায় ক্লান্তপ্রাণ।

এ পথে আর কতদিন চলবে? সব কথার শেষ কথা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে হবে। সেটা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে।

আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হওয়ার একটা বড় শর্ত হলো প্রধান বিরোধী দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ। আর এটা আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, এখানকার পার্লামেন্টারি পদ্ধতিতে অনেক কম ভোট নিয়েও সরকার গঠন করা যায়। আসন বেশি পেয়ে ২৪-২৫ শতাংশ ভোট পেয়েও সরকার গঠন করা যায়। প্রধান বিরোধী দল অংশগ্রহণ করলে নির্বাচনের ফল ভিন্ন হয়ে যেতে পারে। আর দেশের গ্রহণযোগ্যতা তো নির্বাচন চোখে দেখলেই বুঝবে জনগণ।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.