জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক
শরীয়ত অনুযায়ী মাযহাব পালন করা ফরয। তা এক লাইনে লেখা সম্ভব নয়। দলীল সহ বিস্তারিত লিখা হলে সহজে বুঝা যাবে। তাই অনেকগুলো পর্ব হবে। সবগুলো পর্ব পড়ে মন্তব্য করবেন আশা করি।
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة.
অর্থঃ- “তোমাদের জন্য তোমাদের রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মধ্যেই রয়েছে উত্তম আদর্শ। ”
অর্থাৎ আমলে-আখলাকে, সীরতে-ছূরতে প্রতিক্ষেত্রে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। তথা সুন্নত মুতাবিক চলতে হবে। তবেই সঠিক পথের পথিক হওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, যে কোন মানুষ ইসলামের বিধান পেশ করলেই তা গ্রহণ করা যাবে না।
কেবলমাত্র আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেয়া বিধানকেই গ্রহণ করতে হবে। এটাই আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
ما اتاكم الرسول فخذوه وما نهاكم عنه فانتهوا واتقوا الله ان الله شديد العقاب.
অর্থঃ- “আমার রসূল তোমাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ কর আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাক। এ বিষয় আল্লাহ পাককে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক কঠোর শাস্তিদাতা।
”
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ইরবায বিন সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি দুনিয়া হতে বিদায় নেয়ার পর তোমাদের মধ্য হতে যে ব্যক্তি জীবিত থাকবে সে ইসলামের বহু বিষয়ে অনেক ইখতিলাফ বা মতবিরোধ দেখতে পাবে। সুতরাং তখন তোমাদের জন্য একান্ত জরুরী হবে আমার সুন্নত এবং খুলাফায়ে রাশিদীনগণের সুন্নতের উপর আমল করা। ” (আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, বণি ইস্রাঈল সম্প্রদায় পরস্পর দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণে বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিলো।
আর আমার উম্মত তেহাত্তর দলে বিভক্ত হবে। এই তেহাত্তর দলের মাত্র একটি দলই ভিন্ন আর বাহাত্তর দলই জাহান্নামে যাবে। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট জানতে চাইলেন ঐ (জান্নাতী) দল কোনটি? আল্লাহ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন, ‘আমি এবং আমার ছাহাবাগণকে যারা অনুসরণ করবে একমাত্র তারাই জান্নাতী হবে। ” (পবিত্র তিরমিযী, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি শরীয়তের ছহীহ্ নিয়মের অনুসারী হতে চায় তার জন্য একান্ত কর্তব্য আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছাহাবাগণের অনুসরণ করা।
ছাহাবাগণই উম্মতের মধ্যে অতি উত্তম। তাঁরা আত্মার দিক দিয়ে অতি পবিত্র। ইলমের দিক দিয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী। মানুষকে দেখানোর জন্য তাঁরা কোন কাজ করেননি। আল্লাহ পাক তাঁদেরকে মনোনীত করেছেন আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সোহবত অর্জনের জন্য এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য।
সুতরাং তোমরা তাঁদের মর্যাদা সম্পর্কে অবগত হও এবং তাঁদের কথা ও কাজের অনুসরণ কর এবং যথাসম্ভব তাঁদের গুণাবলী ও চরিত্র মুবারককে গ্রহণ করো। কারণ তাঁরা হেদায়াত ও সীরাতে মুস্তাকীমের উপর দৃঢ় ছিলেন। ” (পবিত্র মিশকাত শরীফ)
“হযরত ইমরান হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের মধ্যে সব চাইতে অতি উত্তম আমার যুগ। অর্থাৎ ছাহাবাগণ অতি উত্তম।
এরপর তাবিয়ীনগণ। এবং তারপর তাবি তাবিয়নগণ উত্তম। ” (পবিত্র বুখারী শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার দর্শণপ্রাপ্ত মুসলমান তথা ছাহাবীগণ অথবা আমার ছাহাবাদের দর্শণপ্রাপ্ত তাবিয়ীনগণকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা। (পবিত্র তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এই ঘোষণার সমর্থনে পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত শরীফও রয়েছে। যেমন, ইরশাদ হয়েছে, “ঈমান ও আমলের সর্বপ্রথম স্থান অধিকারী মুহাজির ও আনসার ছাহাবাগণ এবং উত্তমভাবে উক্ত ছাহাবাগণের অনুসারী সকলের প্রতি আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট এবং তাঁরাও আল্লাহ পাক-এর প্রতি সন্তুষ্ট।
”
------------------------------(ইনশাআল্লাহ চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।