আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পারলে না হাসিনা



আমার ভয়ের কথা হাসিনাকে যথাসময় জানিয়ে বলেছিলাম, হাসিনা, জানপাখি আমার, আমার না খুব ভয় করে। আমাদের এই সম্পর্কে না তোমার রূপটাই পরে কাল হয়ে দাঁড়ায়। তোমাকে না আমার হারাতে হয়! হাসিনা আমাকে আশ্বস্ত করেছিল এই বলে যে, ভয় পেয়ো না সোনামনি। তোমাকে পাবার জন্য সবকিছু ছাড়তে রাজী আছি আমি। রূপ? সেতো আজ আছে কাল নাই।

আমি কেবল তোমাকে চাই। প্রয়োজনে রূপ নামক এই জিনিসটাকে ত্যাগ করতে রাজী আছি আমি, জানসোনা। তুমি আমার উপর ভরসা রাখতে পারো। তার কথায় সেদিন আশ্বস্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। আমাদের রাজ্যে হাসিনা ছিল সবচে রূপবতী নারী।

তার রূপকে তুলনা করা হতো সুন্দরী হেলেনের রূপের সাথে। অনেকে আবার আরো এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলতো, হেলেন? হাসিনার সাথে হেলেনের রূপের তুলনা করার চেষ্টা করাটা হবে স্রেফ বোকামী। তবে হাসিনার পায়ের সাথে হেলেনের মুখমন্ডলের তুলনা চললেও চলতে পারে। হেলেনের রূপে পাগল ছিলেন কেবল তখনকার সব বীর যোদ্ধারা, কিন্তু আমাদের রাজ্যের হাসিনার রূপের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল কেবল দেশের পুরুষ সমাজই নয়, নারীরাও এ বিষয়ে সন্দেহহীন। দেশের সব নারীরা হাসিনাকে হিংসা করে, হাসিনার মতো রূপ-যৌবনের অধিকারী হতে চায়।

তাই তাদের দাবী হাসিনাকে তার রূপ-রহস্য প্রকাশ করতে হবে। হাসিনার অপরূপ রূপের অধিকারী না হতে পারলে নাকি তাদের ঘরবাড়ি টেকানোটাই দায় হয়ে পড়বে। সবার স্বামীদের মুখেই নাকি শুধু হাসিনা আর হাসিনা। এই মুহুর্তে তাই দেশ জুড়ে চলছে নারী আন্দোলন। সকলের মুখে মুখে, ‘হাসিনা তোমার রক্ষা নাই, রূপ রহস্য জানতে চাই।

’ ‘রূপের তোমার রহস্য কি? জানাও মোদের চটজলদি। ’ দেশের সব পুরুষ সমাজেরা আবার মনে মনে এই আন্দোলনের বিপক্ষে। তবু তারা তাদের মুখ খুলছে না, কারণ প্রত্যেকের স্ত্রী বা মায়ের রয়েছে এই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও নৈতিক সমর্থন। রাজ্যের অবস্থা জানিয়ে হাসিনার কাছে কল দিলাম। হাসিনা, রাজ্যের এই অবস্থায় তোমার উচিত হবে তোমার রূপ রহস্য জানিয়ে দেওয়া, প্লিজ জানটা আমার, সব বলে দাও না।

এই টেনশন থেকে মুক্তি পাই। তোমার মাথা খারাপ নাকি? তুমি জানো এতোটা রূপসী হবার উপায় জানতে আমার কতোটা কষ্ট করতে হয়েছে। কতো কাঠ খড় পুড়িয়ে তবেই না আজ আমি সবচাইতে রূপবতী হবার খেতাব অর্জন করেছি। আর তুমি কিনা বলছো, সেটা এতো সহজে তাদের জানিয়ে দিতে? আমি বললাম, তুমি রেগে যাচ্ছো কেন? আমি তো কেবল আমাদের কথা ভেবেই এ কথা বলছিলাম। আমি তোমাকে হারাতে চাই না সোনা।

হাসিনা আমাকে আবারো আশ্বস্ত করলো, আমি কেবল তোমাকেই চাই, আবীর। ওমন দেখলে আমি সবাইকে জানিয়ে দেবো সবকিছু। আমার রূপ চাই না, তোমাকে চাই। তুমি বরং তোমার বাসায় আমার কথা জানাও। আমি ফোনটি রেখে দিয়ে আম্মার সাথে কথা বলতে গেলাম।

কথা বলা শেষে আবার কল দিলাম। হাসিনা? হ্যা, বলো। আম্মা তো তোমাকে কিছুতেই বউ হিসেবে মেনে নিবেন না। উনি নাকি তোমার মতো অহংকারী মেয়ে কখনোই দেখেননি। কী! আমি অহংকারী? তুমি নিজেই বলোতো, আমার মধ্যে কখনো অহংকারের কিছু পেয়েছো তুমি? না, তা পাইনি।

তবে বলছিলাম কি, তুমি যদি তোমার রূপের রহস্যটা জানিয়ে দিতে তবে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো এক নিমিষে। না আবীর, তুমি বুঝতে পারছো না। ব্যাপারটা অতোটা সহজ না। আমি ফোনটা রেখে দিলাম। পরদিন হাসিনার ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি ফোনটা রিসিভ করলাম।

এই শোনো। হু শুনছি। তুমি শুনেছো, রাজ্যের সব নারী নাকি সারা রাজ্যে অবরোধ ডেকেছে? তাই নাকি। হু। তবে আমি এতো সহজে ছাড়ার পাত্রী না।

তুমি জানোই তো রাজামশাই আমার রূপের খুব ভক্ত। তাকে বলে সৈন্য সামন্ত নামিয়ে ওদেরকে এমন প্যাদানি খাওয়াবো না, তারা পই পই করে নিজেদের স্বামীদের বুকের ভেতর গিয়ে আশ্রয় নেবে। আরে বাবা। এতো ঝামেলায় না গিয়ে বলে দাওনা সব কিছু। সব ল্যাঠা চুকে যায়।

তোমাকে আর কল দেব না। কল দিলেই খালি এক কথা। বলে দাও বলে দাও বলে দাও। না বলবো না। দেখি তুমি কি করো! ফোনটা কেটে দেয়া হলো।

ডিসকানেক্টেড ফোনটা কানে ধরেই বলতে থাকলাম, পারলে না হাসিনা। তুমি কিছুতেই তোমার রূপের চাইতে আমার ভালোবাসাটাকে বড় করে দেখতে পারলে না। থাকো তুমি তোমার রূপ নিয়ে। আমি বরং কু-শ্রী দেখে একজন বিয়ে করে ফেলি। অনেক দিন পর আমার বিয়ের দিন।

না, হাসিনার সাথে না। অন্য কারো সাথে। সকালবেলা তৈরী হবার আগে দিনের পত্রিকাটা হাতে নিয়ে দেখি, প্রথম পাতার লিড নিউজ- হাসিনার রূপ-রহস্য ফাঁস।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.