নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাসের পাইপলাইন বসাতে কোনো নোটিশ ছাড়াই বুলডোজার দিয়ে ১৭০টি ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে তিতাস গ্যাসের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এতে হঠাৎ করেই বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন সহস্রাধিক ব্যক্তি।
তিতাস এর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয় সূত্র জানায়, গ্যাসের চাপ বাড়াতে সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা-মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এলাকায় ১৮ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন বসানোর উদ্যোগ নেয় তিতাস। ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই পাইপলাইন বসানোর কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রয়েল গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল। ওই প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবদুস সাত্তার ওরফে শিশু।
সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল ধনকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা রমিজা খাতুন, সাহাবুদ্দিন ও সফি মিয়া জানান, ৪০ বছর ধরে তাঁরা এ জায়গায় বসবাস করছেন। তাঁদের নামে জমির খাজনা, এসএ, আরএস. রেকর্ড ও নামজারি রয়েছে। আগে পৌরসভা এবং পরে সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত সোমবার সকাল থেকে তিতাসের লোকজন বুলডোজার দিয়ে তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে মাটির সঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ওই জমি তাদের দাবি করলেও উচ্ছেদের জন্য কোনো নোটিশও দেয়নি।
ফলে তাঁরা ঘরের মালামালও সরাতে পারেননি।
ষাটোর্ধ্ব সাজিয়া বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী রি-রোলিং মিলে চাকরি করেন। মাসে মাসে টাকা জমিয়ে তিন মাস আগে একটি একতলা ভবন বানিয়েছি। কিন্তু শিশু (আবদুস সাত্তার) বাহিনী আমার ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ঘর থকে একটি সুতাও বের করতে পারিনি।
’ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
আবদুস সাত্তার দাবি করেন, গোদনাইলের ওই জায়গা তিতাসের। ১৯৬২ সালে এ জায়গায় তিতাস গ্যাসের পাইপ স্থাপন করে। ওই পাইপের জায়গায় এবার ১৮ ইঞ্চি পাইপলাইন বসানো হবে। এ জন্য ১৭০টি বাড়ি ভাঙতে হয়েছে।
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, কোনো কারণে পাইপ স্থাপনের কাজ বন্ধ হয়ে গেলে তিতাসের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের মামলা করা হবে।
গোদনাইল ভূমি কার্যালয়ের ভূমি কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন জানান, তাঁদের রেকর্ডে উচ্ছেদ করা জায়গার মালিক হচ্ছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। গোদনাইলে তিতাস এর অধিগ্রহণ করা কোনো জমির রেকর্ড নেই।
নারায়ণগঞ্জ তিতাসের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামসুজ্জামান জানান, নতুন পাইপলাইন স্থাপনকাজের দেখাশোনার দায়িত্ব তিতাস গ্যাস নির্মাণ ও কনস্ট্রাকশন বিভাগের। এ ব্যাপারে তিনি তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচলাক নওশাদ ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
নওশাদের মোবাইলে ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।