আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না-করা নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের বারবার সিদ্ধান্ত বদলে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁরা বলছেন, তাঁর এমন অবস্থানের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
রাজধানীর বনানীর দলীয় কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা ঘোষণা দিলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। রংপুরের তারাগঞ্জের হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন জাপার সভাপতি আবদুল মজিদ শাহ বলেন, ‘এরশাদ যা কয় সউগ ঠিক কয়, জনগণে বোঝে না। নির্বাচন না করা নিয়ে যা কইচে, সেটাও ঠিক।
আসলে অয় (এরশাদ) সউগ ঠেলাত পড়ি কওচে। ’
উপজেলার ইকরচালি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘উনি (এরশাদ) আসলে কী করতে চান, তা নিজেও জানেন না। মানুষের লজ্জা-শরম বলতে একটা কথা আছে। সকালে-বিকেলে এভাবে ভোল পাল্টিয়ে উনি মুখ দেখান কীভাবে? লোকটা একেবারে পচে গেছেন। ’
বদরগঞ্জ পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘দল রক্ষা করতে হলে, হয় তাঁকে দল ছাড়তে হবে, নয়তো আমাদেরই দল ছেড়ে চলে যেতে হবে।
তিনি বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করায় আমরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না। ’
একই উপজেলার আমরুলবাড়ি গ্রামের দলীয় সমর্থক আবদুস সালাম বলেন, ‘ওয়াদা বরখেলাপকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। এরশাদের কি আখেরাত-পরকাল বলতে কিছু নাই!’ রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ক্ষুব্ধ সমর্থক আবুল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় পার্টি হইচে থাকি হামরা এরশাদের প্যাকে আছি। এ্যালা অর (এরশাদের) কথা কইতেও শরম নাগে। যাঁর কথার ঠিক নাই, তাঁয় কিসের নেতা, তাঁর কিসের দল।
’ এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সব পরিকল্পনা দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করার। দেশ যাতে গৃহযুদ্ধের দিকে না যায়, সে চেষ্টাই আমি করছি। ’
বিব্রত দিনাজপুরের ৬ প্রার্থী: মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন দিনাজপুরের ছয় আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। এরশাদের এই ঘোষণার পর প্রথম আলোর কাছে তাঁরা তাঁদের ওই বিব্রতকর অবস্থার কথা জানান।
এরশাদের সিদ্ধান্তকে পাগলামি উল্লেখ করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রার্থী বলেন, ‘আমাদের নেতার কথার কোনো ঠিক নেই।
সকালে যা বলেন, বিকেলে তা উল্টে যায়। গত পাঁচ বছরে মহাজোটে থেকে শেষ পর্যায়ে তিনি বহুবার মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর দোদুল্যমান সিদ্ধান্তের কারণে বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং মহাজোটের প্রার্থী-সমর্থকেরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। ’
আরেক প্রার্থী বলেন, ‘ভাই, এমন একটা দল করি, দলের চেয়ারম্যানের কথাবার্তার কারণে সমাজে মানসম্মান হেয় হয়ে যাচ্ছে। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।