প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা মূল্যের পাঠ্যবই সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বই সরবরাহ তুলনামূলকভাবে ভালো হলেও মাদ্রাসার প্রায় অর্ধেক বই এখনো উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করা যায়নি।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের অবরোধের কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় গত চার বছরের ধারাবাহিকতায় শিক্ষাবর্ষের শুরুর দিন ১ জানুয়ারি ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ করা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এনসিটিবির এক কর্মকর্তা বলেন, টানা অবরোধ না হলে এত দিন সব বই মাঠ পর্যায়ে চলে যেত।
তার পরও চেষ্টা চলছে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান অবস্থায় সবার কাছে সহযোগিতা চাই, যেন সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই পৌঁছে দিতে পারি। আশা করি, শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সবাই সহযোগিতা করবেন। ’
এনসিটিবির সূত্র জানায়, নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব বই উপজেলা পর্যায়ে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ছিল।
আসন্ন ২০১৪ শিক্ষাবর্ষে প্রায় পৌনে চার কোটি শিক্ষার্থীর জন্য ২৯ কোটি ৭৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩৮৬ কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে।
দেশ-বিদেশ মিলিয়ে মোট ৭৩১টি লটে এই বই ছাপা হচ্ছে। ছাপার কাজ ভালোভাবে চললেও যানবাহন চলাচল করতে না পারায় বই সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফলে ছাপাখানা ও গুদামে বিপুলসংখ্যক বই আটকে আছে। এভাবে আটকে থাকায় বই মুদ্রণ ও বাঁধাই কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। অবরোধের কারণে বেড়ে গেছে পরিবহন ব্যয়ও।
জানতে চাইলে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম শাহআলম বলেন, ছাপার পরও বই সরবরাহ করা যাচ্ছে না। আবার কাগজ আসতেও সমস্যা হওয়ায় ছাপার কাজেও সমস্যা হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে চান না চালকেরা। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব বই সরবরাহ করা যাবে কি না, তা হলফ করে বলা যাবে না।
এবার মোট বইয়ের মধ্যে প্রাথমিক স্তরের জন্য ছাপা হচ্ছে ১১ কোটি ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৫ কপি বই।
এনসিটিবির এক কর্মকর্তা জানান, গতকাল শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৯৩ শতাংশ বই উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যান্য বছর এ সময়ে প্রায় সব বই চলে যেত। মাধ্যমিক স্তরের জন্য ১৩ কোটি ৭৫ লাখ ৭৬ হাজারের কিছু বেশি বই ছাপা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ৯৪ শতাংশ বই সরবরাহ করা হয়েছে।
তবে মুদ্রাকরদের একজন বলেন, এনসিটিবি মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের যে হিসাব দিয়েছে, প্রকৃতপক্ষে সেটা আরও কম হবে।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় সব মিলিয়ে ৭০ শতাংশের কিছু বেশি বই সরবরাহ করা হয়েছে।
এনসিটিবি জানায়, মাদ্রাসার ইবতেদায়ি, দাখিল ও দাখিল ভোকেশনাল স্তরের জন্য চার কোটি ৬১ লাখ ৬৯ হাজার বই ছাপা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত দুই কোটি ৫৩ লাখ বই সরবরাহ করা গেছে। বাকি বই সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবরোধের কারণে মাদ্রাসার বই নিয়ে খুব বেশি চিন্তার মধ্যে আছি।
আর চার দিন সময় পেলেও সব বই দেওয়া সম্ভব হবে। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।