আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সময়মতো বাকি? টাকা দিতে না পারায়!!!



রাজধানীর দারুস সালাম থানা পুলিশের হাতে এক পরিবহন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে। দাবিকৃত টাকার বাকি অংশ দিতে না পারায় ওই শ্রমিককে পিটিয়ে নদীতে ফেলে মারা হয়। তার নাম মজিবুর রহমান ওরফে পাং মজিবুর (৪৫)। গুলশান থানা পুলিশের গুলীতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার পরদিন গতকাল শুক্রবার ভোরে মজিবুরের লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এই ঘটনায় একটি সাজানো হত্যা মামলা দায়ের করেছে তিন জনের বিরুদ্ধে।

তারা সবাই দারুস সালাম থানা পুলিশের সোর্স। এর মধ্যে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, দারুস সালাম থানার ২২৪ বাগবাড়ি বড়বাজার, গাবতলী এলাকার ইউনুছ আলীর বড় ছেলে মজিবুর (৪৫)। গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন পরিবহনের কলার বয় ছিলেন। মাঝে মাঝে মাইক্রোবাস ভাড়ায় চালাতেন।

বিভিন্ন সময়ে তার কাছে এলাকার পুলিশ সোর্স চাঁদা দাবি করতেন। এক পর্যায়ে গত এক সপ্তাহ পূর্বে সোর্সদের পীড়াপীড়িতে পুলিশ মজিবুরকে থানায় নিয়ে আটক করে। বিভিন্নভাবে দেন দরবার করে ২০ হাজার টাকা দাবি করে পুলিশ। স্বজনদের সহযোগিতায় ৭ হাজার টাকা জোগাড় করে পরবর্তীতে আরও ১০ হাজার টাকা দেয়ার অঙ্গীকারে সে যাত্রায় মুক্ত হন মজিবুর। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় ছিল বাকি ১০ হাজার টাকা দেয়ার।

এই টাকা দিতে না পারাটাই তার জন্য কাল হলো। মজিবুরের ছোট ভাই রিপন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তার বড় ভাই মজিবুর ছোট ছেলে ইকবালকে (১০) নিয়ে সাভারের কাউন্দিয়া মোল্লারটেকস্থ শ্বশুর বাড়িতে যায়। বিকালে সেখান থেকে ফেরার পথে বাসার কাছাকাছি পৌঁছলে দারুস সালাম থানার এসআই হেকমত তাকে ১০ হাজার টাকার জন্য ফের আটক করে। এ সময় তার সাথে ছিলেন পুলিশ সদস্য সায়েম, মাসুদ, সোর্স মহিবুল, কাজল, নয়নসহ বেশ কয়েকজন অজ্ঞাতনামা। তারা মজিবুরকে ধরে বেড়িবাঁধ এলাকায় নিয়ে যায়।

এরপর টাকার জন্য সবাই মিলে বেধড়ক পেটায়। সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে পাশের নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত মজিবুরের ছোট ছেলে ইকবাল ঘটনা দেখে দৌড়ে তাদের বাসায় আসে। খবর পেয়ে বাসা থেকে স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পানিতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। না পেয়ে তারা শোক নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে।

গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয় লোকজন মজিবুরের লাশ নদীতে ভাসতে দেখে খবর দেয়। তার স্বজনরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসে। এরপর পুলিশ বাসায় গিয়ে তার লাশ নিয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্ত শেষে মজিবুরের লাশটি তার স্বজনরা গত রাতে নিয়ে যায়।

দারুস সালাম থানার ওসি আবদুল মালেক গতকাল বিকেলে জানান, মজিবুর হত্যার ঘটনায় তার পিতা ইউনুছ আলী বাদি হয়ে তিনজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আসামীরা হচ্ছে নয়ন, মহিদুল ও কাজল। তাদের মধ্যে মহিদুল ও কাজলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওসি দাবি করেন মজিবুর একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি এবং মাদক ব্যবসায়ী। গত এক সপ্তাহ আগে তাকে মাদকসহ আটক করা হয়।

এরপর সে জামিনে বের হয়ে আসে। তার কাছে চাঁদা বা টাকা দাবির অভিযোগ মিথ্যা। নিহত মজিবুর ৫ ভাই ৩ বোনের মধ্যে বড়। তার স্ত্রীর নাম সামসুন্নাহার। তাদের তিনটি ছেলে অপু (১৭), ইমরান (১২) ও ইকবাল (১০) রয়েছে।

দেশের পুলিশের অবস্থা যদি এমন হয় মানুষ যাবে কার কাছে? কার কাছে নিরাপত্তা পাবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।