আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কপাল গুনেবিমান থেকে লাফ দিলেও সময়মতো খুলল না প্যারাসুট! ভাবছেন নিশ্চিত মৃত্যু? ভাগ্য সহায় হলে রক্ষে পেতেও পারে প্রাণটা! এমন বিরল ভাগ্যের অধিকারীদের কয়েকজন?

এই দেশটা আমার, আপনার, আপনাদের সবার, আসুন দেশটাকা ভালবাসি।

জেমস বয়েল : ৩১ বছর বয়সী এই ক্রীড়াপ্রেমী রাশিয়া গিয়েছিলেন একটি প্রামাণ্যচিত্রের শুটিং করতে। ছয় হাজার ফুট ওপর থেকে লাফ দেওয়ার কয়েক মিনিট পর বুঝলেন প্যারাসুটটি খুলছে না। তীব্র বেগে পাথুরে পাহাড়ের দিকে নেমে আসছিলেন ডেভিড। শেষ মুহূর্তে প্যারাসুট খোলে।

ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে অনেক। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়লেও বেঁচে যান ডেভিড। কারণ তিনি যেখানে পড়েছিলেন, সেখানে আগের কয়েকদিনের তুষার জমে ছিল। ফলে স্রেফ পাঁজরের একটি হাড়ে আর শিরদাঁড়ায় সামান্য ফাটল ছাড়া কিছুই হয়নি ডেভিডের। জো হারম্যান : অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমানবন্দরে বৈমানিক জো হারম্যানের যুদ্ধবিমান ১৯৪৪ সালে শক্রপক্ষের হামলায় ধ্বংস হয়।

প্যারাস্যুট নেওয়ার সময় না পেয়ে ঈশ্বরের নাম নিয়ে শূন্যে লাফ দেন জো। সেদিন তাঁর ডাক শুনেছিলেন ঈশ্বর, পাশ দিয়ে প্যারাসুট বেঁধে নামছিলেন তাঁরই এক সতীর্থ। তাঁর পা চেপে ধরেই রক্ষা পান জো। নিকোলাস আলকেমাডে : ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর ফ্লাইট সার্জেন্ট নিকোলাস আলকেমাডে। ১৯৪৪ সালের ২৪ মার্চ জার্মান বিমানের গুলিতে তাঁর বিমানে আগুন লাগে।

আগুনে পুড়তে চাননি। তাই দ্রুত মৃত্যুর আশায় ২১ বছরের নিকোলাস ১৮ হাজার ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। একঝাঁক পাইনগাছ এবং নরম তুষার তাঁর জীবন বাঁচিয়ে দেয়। বেঁচে থাকার আনন্দে সিগারেট ধরালে জার্মানিদের হাতে ধরা পড়েন। কিন্তু তাঁর বেঁচে যাওয়ার ঘটনা শুনে উল্টো তাঁকে একটি সার্টিফিকেট দিয়েছিল জার্মানরা! বাহিয়া বাকারি : ১৪ বছর বয়সী এই ফরাসি স্কুলছাত্রী ইয়েমেনের দুর্ঘটনাকবলিত একটি ফ্লাইটের একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী।

গত বছর ৩০ জুন ফ্রান্স থেকে কমোরোস যাওয়ার পথে প্রশান্ত মহাসাগরে ১৫৩ জন যাত্রী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। রাতের আঁধারে ১৩ ঘণ্টারও বেশি সময় সমুদ্রে ভেসে থাকার পর তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ডেভ হজম্যান : বন্ধুদের সঙ্গে অসংখ্যবার প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিয়েছেন ডেভ। ১৮৮৫ সালের মার্চে এমনই একটি গ্রুপ-জাম্পে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু আড়াই হাজার ফুট ওপরে থাকতে প্যারাসুট খোলার সময়ে আরেক জাম্পার ফ্রাঙ্কের পায়ের সঙ্গে তাঁর প্যরাসুটের দড়ি পেঁচিয়ে গেলে দ্রুতগতিতে পড়তে থাকেন দুজন।

একটি কার পার্কর্িংয়ের ওপর আছড়ে পড়লেও ফ্রাঙ্ক খুব একটা আহত হননি। কিন্তু তিন মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল ডেভকে। ভেসনা ভুলোভিচ : ২০০৮-এর শেষদিকে স্টকহোম থেকে বেলগ্রেড যাওয়ার সময় ৩৩ হাজার ৩৩০ ফুট ওপরে থাকতে বোমার আঘাতে দুই টুকরো হয়ে যায় যুগোস্লাভ এয়ারলাইন্সের ডিসি-৯ বিমানটি। বিমানের পেছনের অংশ খুলে নিচে পড়ে যান বিমানবালা ভেসনা। নরম তুষারের ওপরে পড়ে বেঁচে গেলেও ভেঙে যায় দুটি পা।

২৭ দিন কোমায় থাকার পর জ্ঞান ফিরে পান ভেসনা। ১৭ মাসের চিকিৎসার পর সেই এয়ারলাইনেই আবার যোগ দেন তিনি। সবচেয়ে ওপর থেকে পড়ে বেঁচে যাওয়ায় গিনেসে নাম উঠেছে তাঁর। জুলিয়ান কোপকে : ১৯৭১ সালের বড়দিনে ৯১ জন যাত্রী নিয়ে পেরুর রাজধানী লিমা থেকে পুকালপা শহরে যাওয়ার সময় ঝড়ে বিধ্বস্ত হয় একটি বিমান। ৯০ জন ঘটনাস্থলে মারা গেলেও বেঁচে যান ১৭ বছরের তরুণী জুলিয়ান কোপকে।

১০ দিন ভাঙা হাড় নিয়ে নদীর তীর ঘেঁষে হেঁটে মনুষ্য বসতি খুঁজে পান তিনি। এ ঘটনাটি 'মিরাকাল ইন পেরু' নামে পরিচিত। মোহাম্মেদ এল ফাতেহ ওসমান : সুদান থেকে রওনা দেওয়ার ১০ মিনিটের মাথায় ইঞ্জিন সমস্যায় ১১৬ যাত্রী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় সুদান এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৩৭। বিমান বাহিনীর উদ্ধারকারীরা একটি গাছের ভাঙা অংশে খুঁজে পায় একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী। সে হচ্ছে দুই বছর বয়সী ওসমান।

অ্যাল্যান ম্যাগি : ১৯৪৩ সালে ফ্রান্সে একটি বিমান হামলার সময় মার্কিন বৈমানিক অ্যালান ম্যাগি ২০ হাজার ফুট ওপর থেকে প্যারাসুট ছাড়াই লাফ দেন। একটি রেলস্টেশেনের কাছের ছাদে পড়ে বেঁচে যান। পরে আহত অবস্থায় জার্মানদের হাতে ধরা পড়েন। আইভান চিশভ : রুশ বিমান বাহিনীর লেফটেন্যান্ট চিশভের বিমান ১৯৪২ সালে জার্মানিতে একটি হামলায় অংশ নেওয়ার সময় বিধ্বস্ত হয়। প্রায় ২০ হাজার ফুট ওপর থেকে প্যারাসুটসহ লাফ দিলেও জার্মান পাইলটদের চোখে ধরা পড়ার ভয়ে প্যারাসুট খোলেননি।

এদিকে ঘণ্টায় ১৫০ মাইল বেগে নিচে নেমে আসায় বাতাসের আঘাতেই জ্ঞান হারান চিশভ। তুষারাবৃত পাহাড়ের ঢালে পড়ে সে যাত্রা রক্ষা পান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।