লাগাতার অবরোধে বিপর্যস্ত জনজীবন। আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে একের পর এক মানব সন্তান। কিন্তু সরকার কিংবা বিরোধী দল এক চুল ছাড় দিচ্ছে না নিজেদের অবস্থান থেকে। নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে একের পর এক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাতে নাকাল দেশবাসী।
গত চার সপ্তাহ ধরে সহিংস রাজনীতি চলছে। এতদিন এর ধাক্কা লাগেনি ক্রীড়াঙ্গনে। যদিও সহিংস রাজনীতির জন্য ক্রিকেট, ফুটবল পিছিয়েছে বারবার। কিন্তু এ প্রথম সহিংস রাজনীতির ধাক্কায় নড়বড়ে হয়ে পড়েছে ক্রিকেট। সহিংস রাজনীতির থাক্কা লেগেছে ক্রিকেটেও।
গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ অনূধর্্ব-১৯ ও সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূধর্্ব-১৯ দলের দ্বিতীয় ওয়ানডে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের রাতে হোটেল আগ্রাবাদে ককটেল পড়ায় খেলতে অপারগতা জানায় ক্যারিবীয় যুবারা। ফলে গতকাল খেলা হয়নি। অবশ্য পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় আজ খেলতে রাজি হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যুব দল।
গত পরশু রাতে আগ্রাবাদ হোটেলের সামনে কয়েকটি বোমা ফাটে।
যার ফলে হোটেলে অবস্থানকারী ক্যারিবীয় দল নিরাপত্তাহীনতায় সকালে মাঠে যেতে অস্বীকার করে। এই খবর পেয়ে বিসিবির দুই পরিচালক আকরাম খান ও আ জ ম নাছির সকাল সাড়ে সাতটায় হোটেলে যান। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যুব দলের ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন। পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে খেলার জন্য অনুরোধ জানান দুই পরিচালক। কিন্তু তারা রাজি হয়নি।
রাজি না হলে আজ খেলতে রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান আকরাম, 'সকাল সাড়ে সাতটায় আমি হোটেলে ছুটে যাই। তাদের সঙ্গে আলাপ করে পূর্ণ নিরাপত্তার কথা বলি। এর মধ্যেই আমরা যোগাযোগ করি র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তারা আমাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তারা খেলতে রাজি হয়নি।
অবশ্য আজ খেলবে বলে জানিয়েছে। পুরো সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যুব দলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে। '
ওয়েস্ট ইন্ডিজ যুব দল খেলতে রাজি না হওয়ায় অনেক ক্রিকেটপ্রেমী ভবিষ্যতের কথা ভাবছেন। আগামী পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আসবে শ্রীলঙ্কা। এরপর ১৬ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে আইসিসির সবচেয়ে বড় ইভেন্ট টি-২০ বিশ্বকাপ এবং এরপর এশিয়া কাপ।
বিরোধী দলের টানা অবরোধে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে টি-২০ বিশ্বকাপ কিংবা এশিয়া কাপে কোনো ধরনের ঝামেলা নাও হতে পারে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সিরিজ? সেখানে অনেকেই নাশকতামূলক ঘটনার আশঙ্কা করছেন। কিন্তু বিসিবির ভারপ্রাপ্ত সিইও নিজামুদ্দিন সুজন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য পূর্ণ নিরাপদ বলে জানিয়েছেন, 'বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ। চট্টগ্রামে যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটা দুর্ঘটনা মাত্র। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমরা পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
আমি মনে করি আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে কোনো সমস্যা হবে না। টি-২০ বিশ্বকাপের বিষয়ে আমাদের অবস্থান সব সময় জিরো টলারেন্স। '
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট আন্দোলনের জন্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে বহুবার। কিন্তু আন্তর্জাতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার। এর আগে সার্ক ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণে।
অবশ্য পরবর্তীতে টুর্নামেন্ট সমাপ্ত হয়েছিল।
সাত ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে টাইগার জুনিয়ররা ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছিল। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২২ রান করেছিল স্বাগতিক যুবারা। ৮৪ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মোসাদ্দেক হোসেন ও সাঈদ সরকার ১১৯ রান যোগ করেন সপ্তম উইকেট জুটিতে। মোসাদ্দেক ১০৭ বলে করেন ৭৭ রান এবং ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সাঈদ ৮৩ রান করেছিলেন মাত্র ৬৬ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায়।
জবাবে ৪৪.৫ ওভারে ১১৮ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবীয় যুবারা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।