লিকলিকে এক মেয়ে ছিল, পড়ত আমার সাথে,
চূড়ি , ঘড়ি ছিল না তার চিকন দুটি হাতে।
রাজহংসী চলন মেয়ের, বুকে কাঁপন তোলে,
কলমী-লতা যেমন দোলে ভরা বিলের কোলে।
প্রথম দেখা থেকে, কেমন মন করে আনচান,
বিষন্ন হয় অকারণে আমার কিশোর মন।
দূরের থেকে আসত, যেত, বইয়ের বোঝা নিয়ে,
ইচ্ছে হত, বইগুলো তার আমি আসি দিয়ে।
বাঁকা ঠোঁটে দেখতাম যবে চাঁদের মত হাসি,
মনে হত, আমি তারে অনেক ভালবাসি।
লাল রঙ্গের টিপ মেয়ে পরত মাঝে মাঝে,
ভাবতাম আমি, আমার গায়ের রক্ত হোথা সাজে।
গুঞ্জরিয়া ভ্রমরেরা ফুটায় ফুলের কলি,
আমার মনের কথা তারে কেমন করে বলি!
চিঠি একটা পাঠিয়ে দেই? নীল খামেতে ভরি?
চিঠির কথা না যদি বোঝে, তখন কি করি!
তার চে ভাল, সামনা সামনি কাছে গিয়ে তার,
মনের কথা খুলে বলি, নামাই মনের ভার।
কিন্তু, এ কি! যখন গিয়ে, সামনে দাঁড়াই তার,
ঠক ঠকিয়ে কাঁপে দু পা, সামাল দেয়া ভার।
একদিন শুনি অসুস্থ সে, হাসপাতালের বেডে,
চক্ষু দুটি লাল হ’ল মোর দুদিন ধরে কেঁদে।
কলেজ যেয়ে ঘোরে মেয়ে অন্যের হাত ধরে,
বুকে আমার শেল বেধে, রই মাথা নিচু করে।
একা যদি পাই কখনও, বাঁচবে না ওই ছেলে,
ঠিক ওরে খুন করে, আমি যাব জেলে।
কদিন পরে খবর পেলাম, প্রিয়ার আমার বিয়ে,
বৌ সেজে সে চলে গেল, আমার সমুখ দিয়ে।
বুকের ব্যথা বুকে নিয়ে, বেঁচে থাকা ভার,
বলতে যদি পারতাম তারে, শুধু একটি বার!
কিছুতেই পারত না সে, যেতে আমায় ছাড়ি,
সাধ্য কারো হত নাকো, নিতে তারে কাড়ি।
স্বামীর ঘরে সুখেই আছে, বাচ্চা একটা হল,
আমার ব্যথা বড়ই দারুণ, ছেড়ে নাহি গেল।
অনেক কষ্টে পেয়েছি তার, মোবাইল নাম্বার,
ভাল আমায় বাসতে তাকে হবেই হবে এবার।
একদিন তাকে ফোন দিলাম, অনেক সাহস ভরে,
বুকের মধ্যে মনটা আমার ছলাৎ ছলাৎ করে।
মিষ্টি কথা বলে মেয়ে, খিল খিলিয়ে হাসে,
বোঝে না সে, আমার দুচোখ বানের জলে ভাসে।
মনে হল, তার বুকেও আছে দুঃখের ভার,
দুঃখ আমি ঘুচাবই, যেমনে পারি তার।
কোন ভাবে স্বামীটা তার যেত যদি মরে!
আমার প্রিয়া আমার হত, পেতাম আপন করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।