ভালবাসি স্বপ্ন দেখতে, ভালবাসি স্বপ্নলিখতে। আর সারাটাক্ষণ মেতে থাকি স্বপ্ন নিয়ে। স্বপ্ন নিয়েই আমার সব। স্বপ্ন নিয়েই বেঁচে আছি, এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাচ্ছি। তাই স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখাই।
২০১২ সাল থেকেই খুব মাতামাতি হচ্ছিল ১ জানুয়ারি ২০১৩ পাঠ্যপুস্তক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে। আমরাও খুব খুশি ছিলাম। বছরের প্রথম দিন হাতে নতুন বই পাব, যেনতেন কথা? আমি তো ভেবেই রেখেছি, বই পেলে বইটাকে পাশে নিয়েই ঘুমাব, যাতে কেউ চুরি করে না নিয়ে যায়। সেদিন আমাদেরকে সাড়ে আটটার মধ্যে স্কুলে হাজিরা দিতে বলা হল। যথারীতি আমি ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে স্কুলে হাজির হলাম।
অ্যাসেম্বলিতে প্রিন্সিপাল সবাইকে বই দিবেন বলে জানানো হল। কিন্তু অ্যাসেম্বলিতে শুধু শুধুই আমরা ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থেকে হাঁটুর বাটি ঢিলা করে ফেললাম। একটা বইও পেলাম না। জরুরি ভিত্তিতে পাশের স্কুল থেকে চার-পাঁচটা বই এনে সামনে দাঁড়ানো চার-পাঁচজনকে দেয়া হল। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানেন না কবে আমরা বই পাব।
বোর্ড থেকে বই আসেনি। কবে আসবে কেউ জানে না।
এই ব্যাপারটা পজিটিভও হতে পারে। বই পেলেই পড়া শুরু করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী হয়তো ভেবেছেন পরে বই দিলে আমাদের এখন থেকেই পড়তে হবে না।
আমরা একটু রেহাই পাব। কিন্তু তবে কেন এই মিথ্যে প্রতিশ্রুতি?
বিশ্বাস করেন বা না করেন, আমরা এখনো একটা নতুন বইও পাইনি। পাওয়া তো দূরের কথা, চোখেও দেখিনি। এ তবে শিক্ষামন্ত্রীর কেমন প্রতিশ্রুতি? ছোটদের ছোট হৃদয়ের বড় বড় আশাগুলি ভেঙ্গে দেয়া এমন প্রতিশ্রুতির কিইবা দরকার? ছোটরা অনুকরণপ্রিয়। তবে কী আমরা শিখব কাউকে কথা দিলে সে কথা রাখতে হয় না? তবে কী আমরা শিখব মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিতে?
আমি জানি না।
তবে আমি শুধু জানি, আমি এখন দিন কাটাচ্ছি পুরনো বইগুলো বুকে চেপে। পুরনো বইয়ের গন্ধ শুঁকে। কিন্তু ছেঁড়াফাটা, ঘুণে খাওয়া, দাগানো বই দিয়ে কী আর নতুন বইয়ের শখ মেটে? দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো যায়, কিন্তু পুরনো বই দিয়ে নতুন বইয়ের শখ মেটে না।
শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ, আমাদের বছরের প্রথম দিন বই না দিলে কিছু হবে না। তবে কোন মিথ্যে প্রতিশ্রুতি প্লিজ দেবেন না।
যেদিন সম্ভব সেদিনই আমাদের বই দেয়া হোক। তবে প্রতিশ্রুতি ঠিক রেখে। কারণ আজকের এই আমরা যদি আপনাদের অনুকরণ করে এমন বেঠিক প্রতিশ্রুতি দিতে শিখি, ভবিষ্যতে এ দেশের মানুষেরই ভোগান্তি পোহাতে হবে। যেমনটা পোহাচ্ছি আমরা। আমাদের মত আর কেউ যেন মিছেমিছি দেয়া আশা নিয়ে বুকে সত্যি সত্যি স্বপ্ন বেঁধে কষ্ট না পায়, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনাদেরই।
তাই শিক্ষামন্ত্রী আংকেল, এখন বই দেয়া সম্ভব নাহলে সেটা আমাদেরকে জানিয়ে দিন। কেন অম্ভব হচ্ছে না বুঝিয়ে বলুন। আমরা মিছেমিছি আশা করে দুঃখ পাব না। যখন সম্ভব বইগুলো তখনই দেয়া হোক কিন্তু সঠিক সময়টা আমাদের জানান।
(অনুগ্রহ করে কেউ এই পোস্টটি্কে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখবেন না।
আমি রাজনীতি বুঝি না আর পছন্দও করি না। আমি রাজনীতি থেকে দূরে তাহকার চেষ্টা করি। ছোটরা রাজনীতি পছন্দ করে না। তবে আমার আমার নিজস্ব মতামতটা জানানোর অধিকার এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার আছে। আর কেউ যদি তারপরও এটিকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন এবং অপ্রত্যাশিত মন্তব্য করেন, তার দায় আমার নয়।
তবে বুঝব ছোটরাই বুদ্ধিমান বড়রা আসলে বুদ্ধিহীন। শুধু শুধুই তারা ছো্টদের ভুল বোঝে। ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।