তারানকোর সফরে ফলাফল কী হবে, তা অগ্রিম বলা ঠিক হবে না। কেউ মুখ খুলছে না। বোঝা যাচ্ছে অনেক সম্ভাবনা নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। জাতিসংঘের খাতায় বাংলাদেশের নাম উঠেছে। এরা কিন্তু সহজে ছাড়ে না।
তারানকো আগেও দুবার এসেছিলেন। এবার এসেই যেভাবে কাজ শুরু করেছেন তাতে মনে হচ্ছে হোমওয়ার্ক করে এসেছেন। জাতিসংঘ বাইটলেস অর্গানাইজেশন নয়। তাদের অনেক শক্তিশালী হাতিয়ার আছে, যা দিয়ে তারা ধরতে ও বাধ্য করতে পারে। আর বিদেশি কেউ মধ্যস্থতা করলে দুই নেত্রীর কেউই আর পরাজিত বোধ করবেন না।
তাই সমাধান একটা হতে পারে। সোমবার বৈশাখী টেলিভিশনের টক-শো 'জিরো আওয়ার'-এ সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা'দত হুসাইন এ কথা বলেন। রাহুল রাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন। সা'দত হুসাইন বলেন, শান্তি মিশনে আমাদের আর্মি, পুলিশ ও আইনজীবীরা যান। তাদের রুটি-রুজির ব্যাপার।
মিশনে গিয়ে তাদের জীবনের ধারা বদলে গেছে। আমাদের সম্মানের ব্যাপার আছে। জাতিসংঘের সম্মানের ব্যাপার আছে। তারানকো বড় একটা টিম নিয়ে এসেছেন। তার আসা-যাওয়া, মিশনের খরচ, নানা ফরমালিটি শেষ করেই এখানে এসেছেন।
সুতরাং, তারা এত সহজে হাল ছেড়ে দেবেন মনে করা যাবে না। তাদের হাতে অন্য অস্ত্রের সঙ্গে এবার আরও একটা হাতিয়ার এসেছে 'যুদ্ধাপরাধ'। এটার জন্য তারা আমাদের কিছু নেতানেত্রীর বিচার করতে হেগে নিয়ে যাবেন। তাদের এ শক্তিগুলো আছে। এ ছাড়া আমাদের এখানে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা দুজনই বলেছেন, বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে, হচ্ছে।
এটা শুনে জাতিসংঘ তো লাফিয়ে চলে আসতে পারে। শ্রীলঙ্কা কিন্তু অনেক চেষ্টা করেছিল তাদের ওখানে কোনো তদন্ত করতে না দেওয়ার জন্য। তাদের বাধ্য করা হয়েছে। এসব বিদেশি সংস্থা বাধ্য করতে পারে। সত্যি সত্যি এদের আওতায় পড়লে নির্বাচন কিন্তু অর্থহীন।
ধরুন, ৫ তারিখের নির্বাচনে আপনি বিজয়ী হলেন। কিন্তু আপনার সরকারকে কোনোরকম স্বীকৃতি ও সম্মান দিল না। আপনি বিদেশে গেলে আপনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করল। তখন তো আপনি থাকতে পারেন না। এ জন্য মার্শাল ল সরকারগুলো ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের পথে ফেরে।
তিনি বলেন, যে কোনো আন্দোলন সংগ্রামের শেষ মুহূর্তে কিছু সংঘাত ও রক্তক্ষয় শেষে ফলদায়ক হয়। এ ধরনের ঘটনায় যারা ক্ষমতায় থাকে তাদের ওপর কার্যতই অভিঘাত পড়ে। যারা বিরোধী দলে থাকে তাদের ওপরও ধাক্কা আসে। তার পরে তাদের বোধোদয় হয়। আমাদের এখানে প্রথম ধাক্কাটি এসেছে জাতীয় পার্টির ওপর।
জাতীয় পার্টি ভেঙে গেছে। তা আবার ভেঙে গেছে যাকে দেশের সবচেয়ে বুদ্ধিমান রাজনীতিক বলে অনেকে মনে করেন সেই কাজী জাফরকে নিয়ে। এত দিন সরকারে কোনো আঘাত পড়েনি। কালকে প্রথম বড় একটা অভিঘাত পড়েছে। দেশে এই প্রথম একদল মন্ত্রী ঘোষণা দিয়ে ক্যাবিনেট মিটিংয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।
এটা তো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। বিএনপিতে এখনো হয়নি। তবে আশঙ্কা আছে। সমঝোতার ভিত্তিতে একটা পথ বেরোবে। একটা হতে পারে হাসিনাও রইলেন, খালেদাও রইলেন।
জয়েন্ট প্রাইম মিনিস্টার। এটাকে বলে পাওয়ার শেয়ারিং। আরেকটা ফর্মুলা আছে প্রাইম মিনিস্টারের ক্ষমতা কমিয়ে ও বিরোধীদলীয় নেতার ক্ষমতা বাড়িয়ে ভারসাম্য আনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।