সসকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।
ব্লগ নিয়েও তোমরা পলিটিক্স করেছো।
দেশের সাধারণ মানুষ যখন ব্লগারদের উপর চরম ভাবে ক্ষ্যাপা। তখোন আমি দেখেছি কতো সাধারণ মানুষের রক্ত ঝড়ছে। হায়রে পলিটিক্ট। স্রষ্টা কোন ধর্মে বলেছেন যে মনের কথা সবার মাঝে পৌছে দেয়া অন্যায়। ব্লগ এক জলজ্যান্ত সত্যের নাম যার ভিতর থেকে নতুন নতুন আইডিয়া ও মেধা বেড় হবে।
মানুষের আত্মপ্রকাশ তার ভিতরের মানুষটির উপরে নির্ভর করে। তোমরা সমাজ পতিরা নিরিহ ব্লগারদের মেরেছো কিন্তু ব্লগকে কিভাবে মারবে বলো? এ যে মানুষের সত্যি কথা প্রকাশ করার মাধ্যম। একজন মানুষ তাকে বিভিন্ন রূপে প্রকাশ করতে পারে তার একটি রূপ হল ব্লগ। আসো ব্লগের মাধ্যমে সত্যের প্রকাশ ঘটতে পারে। তার সাক্ষাত প্রমান কয়েকদিন আগের বাংলাদেশী মিডিয়া আর এখনকার টিভি ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার কিছুটা পরিবর্তন।
তোমাদের মধ্যে যাদের সত্য দেখার চোখ আছে শুধু তারাই বুঝতে পারবে সত্য কিভাবে প্রকাশ পায়। তুমি যদি তোমার নিজের মনকে গুরুত্ব দাও তাহলে তুমি এই জগতকে বুঝতে পারবে। আবারও প্রসংগ হারিয়ে ফেলেছি। নজরুল ইসলামের যখন “খেলিছো এই বিশ্বলয়ে......” গানটি শুনলাম তখন খুব ভালো লাগলো। তারপর চুপি চুপি নজরুলের বিদ্রহী চেতনা আমি আমার মধ্যে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে আমি নজরুলকে চিনেছি। নিজেকে দিয়ে অনুভব করেছি। নজরুল একটি শক্তির নাম। নজরুলকে যারা শুধু বক্তৃতার মাঝে আবদ্ধ করে রেখেছেন তারা কি জানে না নজরুল তার চেতনাকে উজ্জিবিত করতে বলেছিলেন নিজের আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে? মানুষ যা চায় বিধাতা তাকে তাই দেন। যার মেধা মানবসৃষ্ট কোনো ব্যবস্থার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে চান সে একসময় পুতুল হয়ে যায়।
এই প্লাস্টিক আর কাচের যুগে আমি দেখছি কিছু মানুষ পুতুল হয়ে গেছে। বাবা, মা, শ্বসুর, শাসুরী সবাই যেনো একটি করে পুতুল। হায়রে সমাজ সংসার। এই সমাজ সংসারের ভুল ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশের কতো মেধা যে ঝরে গেছে তা যদি নজরুল বেঁচে থাকতেন তাহলে বুঝতেন। হায়রে এলিট শ্রেণী তোমরা কবি, সাহিত্যিক, লেখক, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, সম্পাদ্য, উপপাদ্য, গান, তাল, লয়, নৃত্য, চারুকলা, কারুকলা, যুদ্ধ, শান্তি, শক্তি, ভর, ওজন, বিজ্ঞান, ধর্ম শিক্ষা, বিজগণিত, রসায়ন এগুলোকে শ্রেণী বিন্যাস করতে গিয়ে যুগে যুগে এই মানবতাকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে গেছো।
আমার প্রাণের নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলেছেন কলমের কালি নাকি শহিদদের রক্তের চেয়েও নাকি অনেক দামি। এই কথাটিকে প্রতিষ্টিত করার জন্য নজরুলের মতো মহা মানবের কথা মহাপুরুষ যুগে যুগে আত্ম প্রকাশ করেন। একজন বড় মনের মানুষ কখনও প্রতিষ্ঠিত হবার আশায় কিছু লেখেন না। নজরুল কে যারা শুধু ক্ষনজন্মা পুরুষ মনে করেন তারা ভুল করেন। নজরুল হলেন সত্যের প্রকাশ।
নিজের মধ্যে দিব্য জ্ঞাণকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে নজরুলকে বোঝা সম্ভব না। এই পৃথিবীতে খুব কম মানুষ অবিরত সত্য কথা বলতে জানেন। যারা সত্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে জানে তাদের কোনো মৃত্যু নেই। তারা যে যুগস্রষ্ঠা। নজরুল বিষয়ক প্রবন্ধে যে নজরুলের গানের অংশ বা কবিতার অংশ বার বার দেখাতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
আমাদের প্রধান সমস্যা হলো আমরা নিজেকে পাল্টাতে জানি না। শুধুমাত্র নিত্যদিন কৃত্তৃমতার পোষাক পরে নিজেকে পুতুল গড়ে তুলে ধরি। নজরুলের জীবনটা আর পাঁচ টা মানুষের মতো না। তিনি তার সারা জীবনে অনেক বেদনা সয়েছেন। তিনি অনেক দুঃখ পেয়েছেন।
দুখু মিয়ার আড়ালে যারা আসল নজরুলকে যারা হারিয়ে ফেলেছেন তারা কি করে বুঝবে নজরুল কে? নজরুল এক চেতনার নাম যার চিন্তাধারা আমাকে নিত্যদিন অনুপ্রানিত করেছে। নজরুলকে বুঝতে হলে অনেক কিছু বুঝতে হবে। নজরুলের আদর্শের শক্তি একটি সত্য প্রকাশেরই ধারাবাহিকতা। আমি জীবনে যতোবার কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ অর্থাৎ শাহবাগ দিয়ে আমি যতবার গিয়েছি ততবার মনে মনে নজরুল কে স্মরন করেছি। নজরুল ইসলাম দু’বার সিরাজগঞ্চে গিয়েছিলেন।
কেনো গিয়েছিলেন জানেন? এক মায়ার টানে। আর সে টান হলো ইসমাঈল হোসেন সীরাজীর জন্য। সেখানে নজরুল তার বক্তৃতার সারমর্মটা এমন যে নজরুল ইসলাম যখন একদম প্রথম লেখালেখিতে আসেন তখন নজরুলকে সিরাজী সাহেব না দেখেই তিনি ১০টি টাকা মানি অর্ডার করে পাঠান। নজরুল একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত নজরুলের প্রবন্ধ সমগ্র পড়লে আপনারা এই বক্তৃতাটি পাবেন। নজরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের উক্ত বক্তৃতায় তৎকালীন মুসলিম সাহিত্য সমাজ কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিরাজী সাহেবর কথা মনে করে কেঁদে দেন।
সত্যি বন্ধু তুমি যদি তোমার ভিতরে লুকিয়ে থাকা মানুষটিকে জাগ্রত করতে চাইলে নজরুলকে কবি ভেবে সাধনা করলে হবে না। কারণ যারা নজরুলের কবিতা পরে নজরুলকে বুঝতে চান তারা নজরুল কে একজন স্বপ্নদ্রষ্টা উজ্জ্বল শক্তির বদলে একজন কবি হিসেবে বেশী পাবেন। নজরুল কোনো বই নয়। নজরুল একটা প্রেরণা যার মাধ্যমে আত্মসুদ্ধি পরম তৃপ্তি পাওয়া সম্ভব। আজকে যারা নিজেকে মর্ডান, রুচিশীল বা আধুনিক হিসেবে সমাজে জাহির করতে “ইন চার্জ” “ফাপোর” কথাগুলো ব্যবহার করো সে শব্দগুলো যে নজরুলই প্রথম বাংলাভাষায় ব্যবহার করেছেন তা কি তোমরা জানো? নজরুল ইসলামের “জীবনে যাহারা বাঁচিল না” কবিতায় ঐ দুটো শব্দ পাবে।
যখন ঐ কবিতাটি শুনবে তখন বুঝবে যে স্মার্ট কাহাকে বলে। আমি জীবনে চলার পথে অনেক মৃত কিশোরকে দেখেছি। তুমি যদি চেয়ার কোচে করে বাংলাদেশের কোনো জেলায় যাও তখন এক নিউ জেনারেশন নামের এক শ্রেণীর ছেলেপান দেখবে। যারা একটি মাঝারী দামি একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। কিছুক্ষণ পর পর নিজের মোবাইলটি নিজে দেখছে।
কিছুক্ষণ হেড ফোনটি কানে লাগাচ্ছে আবার খুলছে। এক বোতল পানি ১৫-১০ টাকা দিয়ে কিনছে। ৬-৭ টাকা দামের ১টি টিস্যু পেপারের মিনিপ্যাক কিনছে। তার থেকে এক টুকরো টিস্যু বেড় করে নিজের মুখ বা হাত মুছছে। তারপর কোনো স্টেশনে নেমে কোনো ফেরীওয়ালাকে বলছে “ওহ্ শিট”।
কিন্তু পুরো পকেট হাতিয়ে দেখো, কত টাকা পাবে এই ছেলেটির পকেটে? শ্রেণী বৈষম্যের কারণেই এই গুলো ঘটে। এর নাম কি স্মার্টনেস? স্মার্টনেস নিজের মধ্য থেকে আসে। অই রোবোটিক ছেলেটি যে আমাদের পঙ্গু চিন্তাধারাই ফসল। নজরুল অনেক আগেই বলেছিলেন। বিদ্যালয় মানে “বিদ্যা লয়” অর্থাৎ বিদ্যা শিক্ষার অবক্ষয়।
রবিন্দ্রনাথ যে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বভারতী বা শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তা এখন অনেকটা হিজরা মার্কা হয়ে গেছে। এর কারণ হল অহংকার। বিশ্বভারতী, বিশ্ববিদ্যালয়, ইংলিশ মিডিয়াম, স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ ছাত্র হতে পারলেই মনে করে ভাগ্য খুলে গেছে। আরে বন্ধু তোমার ভাগ্য তুমি লেখার কে? বাংঙালীর সন্তানদের বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়াতে হলে সবার আগে শিক্ষা পদ্ধতিতে একটি মুক্তচিন্তার চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। ঐ গৎ বাধা শিক্ষা ব্যবস্থার নাম করে বাংলার মেধা গুলোকে বের করা অনেক কঠিন।
একজন মানুষে রুপান্তরিত হয় তার শিক্ষার মাধ্যমে, আর সেই শিক্ষা হতে হবে মুক্ত স্বাধীন চিন্তার পরিবেশে। বাংলাদেশের গ্রামের একজন ইংরেজী বিষয়ের স্কুল শিক্ষকের কথা কল্পনা করুন। ইংরেজী শিক্ষক সাহেব ইরেজীতে কথা বলছেন গ্রামের মাঝি, রিকশাওয়ালা, মুদি দোকানী বা একদম আমজনতার কাছ থেকে। গ্রামের লোক বলাবলি করেন এই শিক্ষক যদি গ্রামে না থেকে শহরে চাকুরী করতেন তাহলে অনেক বিশাল বড় কিছু করতে পারতেন। এ ধারনা ভুল।
আপনি যদি ঐ শিক্ষকের সার্টিফিকেট জাস্টিফাই করেন তাহলে বুঝবেন তিনি কেনো গ্রামে পড়ে আছেন কারণ তার যে সার্টিফিকেট নামের কাগজটি দূর্বল। তাতে তিনি ৩য় বিভাগে পাশ করেছেন। তাই তিনি নিজেকে দেশের ৩য় শ্রেণীর নাগরিক বানিয়ে ফেলেছেন। বন্ধু সার্টিফিকেট দিয়ে নয় নিজের আত্মবিশ্বাস দিয়ে জীবন যুদ্ধে জয়লাভ করতে হয়। নজরুলের আদর্শ সত্য আদর্শ।
নজরুল আজ একটি প্রোডাক্ট হয়ে গেছেন। যাকে নিয়ে শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যায়। আরে বানান ভুলের ভয়ে লিখছে না। তার এখন লেখার সময় এসেছে। ভুল না করলে শুদ্ধ করবে কিভাবে বন্ধু!!! মানুষ হাত দিয়ে বলে না মন দিয়ে বলে।
মানুষ হাত দিয়ে লেখে না মন দিয়ে লেখে। সেই মন নামের আত্নাকে নিজের মধ্যে জাগ্রত করার নামই হল নজরুল। জীবের মধ্য থেকে জীবন ধারণ শিখতে হয়। যে মানুষ যত বেশী আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে প্রকৃতির প্রতিটি জিনিষ থেকে শিক্ষা লাভ করতে পারবে সে ততো বেশী উন্নতির শিখরে উঠতে পারবে। ঐ তাকিয়ে দেখো বন্ধু সিংহ ঘাসের মধ্যে থেকেও যে ঘাস খায় না ওর যখন ক্ষুধা পায় তখন ও যে হরিনের পিছনে ছুটে আক্রমণ করে ক্ষুধা নিবারন করে।
এর নাম স্মার্টনেস। আবার গরু ঘাস খেয়েই জীবন পার করে দেয়। ও জানে না সিংহ হয়ে বাঁচার সাধ কেমন। আজ প্রতিটা বাংলাদেশীকে সিংহের মতো গর্জে উঠতে হবে। এই হল বাংঙালীর চেতনা।
সাপকে তার গায়ের রং বা সাইজ দিয়ে যদি তুমি এর ক্ষমতা বা জাত নির্ধারন করতে চাও পারবে না। সাপের ছোবলের ত্যাজই বলে দিবে সাপ কোন জাতের। আমি নজরুলের চেতনার মধ্য থেকেই এসেছি সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য জন্ম নিয়েছি। আমার যখন আমার প্রিয়াকে মনে পড়েছে তখোন নজরুল ছিলো আমার পরম সাথী। প্রিয় মানুষটিকে হারানোর দুঃখ অনেক।
আমার প্রেমিকাকে হারিয়ে আমি যখন দিশেহারা তখন নজরুলের কষ্ট দিয়ে আমি আমাকে অনুভব করেছি। যিনি সবার মাঝে নিজের কষ্টকে শেয়ার করে শক্তিতে রূপান্তর করতে পারে সেই প্রকৃত মানুষ। যে সবার বিরহকে বুকে বয়ে নিয়ে চলার ক্ষমতা রাখে সেই যে সেই সত্য আত্মা। আসুন বন্ধু নজরুল যে বাংলার কল্পনা করেছিলেন বর্তমানের এই আন্দোলন যে তারই ফসল। আজ যদি নজরুলকে ভাগ না করে অন্যভাবে সকল বাংঙালীর কাছে তুলে ধরা যেতো তাহলে বুঝতে নজরুলের শক্তি কোনোদিন শেষ হবার না।
আজ এই প্রতিকুলতার মধ্যেও একজন সত্যিকারের দেশ প্রেমিক পারে বাংলাদেশকে ঢেলে সাজাতে। তোমরা নিজের বলে বলিয়ান হয়ে নিজেকে সবার মাঝে বিলিয়ে দাও। আমার ভিতরে যে নজরুলের জন্ম নিয়েছে তাকে আমি তোমাদের মধ্যে বিকাশিত করতে চাই। বিশ্বাস করো আমি তোমাদের সহযাত্রী। তোমাদেরকে “তৃতীয় মাত্রা” নামের কোনো টকশো নয় বরং তৃতীয় একটি নয়ন খুলে দিতেই আমি এসেছি।
তৃতীয় মাত্রা এমন একটি অনুষ্ঠান যেখানে সরকার পক্ষ আর বিরোধী পক্ষের দুই নেতা এক হয়ে ভাগবাটারা করতেন। তা না হলে ঐ সব মিডিয়া কর্মীদের এতো টাকা পয়সা হলো কি করে? আসুন আমরা আমাদের সমাজ ও শিক্ষা ব্যাবস্থা গড়ে নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।