সময়কে কাধে নিয়ে চলো বন্ধু কবি নজরুল ও নার্গিসের স্মৃতিবহ কুমিল্লার মুরাদনগরের দৌলতপুরে দিবস উদযাপনে ছিল নানা রকম তামাশা।
সংবাদ সূত্র- কুমিল্লা নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট কম
বিস্তারিত
দায়সারাভাবে কুমিল্লার মুরাদনগরে পালিত হল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তিন দিনের কর্মসূচীর দিকে বিশেষ নজর ছিল নজরুল প্রেমীদের। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার ২য় দিনে দৌলতপুরে আয়োজিত নজরুল মেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল হ য ব র ল। মেলার মাঠের অর্ধেক জুড়েই বৃষ্টি আর কাদামাটিতে নোংড়া পরিবেশ সৃষ্টি হয় ফলে দর্শনার্থীদের পোহাতে হয় চরম দূর্ভোগ।
আলোচনা সভায় ছিল না কোন শৃংখলা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুরাদনগর এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য জোবেদা খাতুন পারুল, জেলা প্রশাসক রেজাউল আহসান, মুরাদনগর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া, থানা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক মোঃ আসাদুল্লাহ ও আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকার প্রমুখ। পদমর্যাদা অনুযায়ী অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্য দেয়ার নিয়ম থাকলেও থানা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা আক্তার এর পর বক্তব্যের জন্য ঘোষনা করা হয় মুরাদনগর থানার ওসির নাম। বক্তব্য দিতে এসে মুরাদনগর থানার ওসি আব্দুস সবুর বেশ সময় নিয়ে বক্তব্য শুরু করেন। তার আঞ্চলিক উচ্চারনে নজরুলকে স্মরণ দেখে মনে হচ্ছিল যেন তিনি নজরুল প্রেমে ডুবে গেছেন।
প্রচন্ড গরমে সবাই যখন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিচ্ছিল তখন দীর্ঘ বক্তব্যের পর শুরু করলেন কবিতা আবৃত্তি। বিদ্রোহী কবিতাটি তিনি ভালোই আত্মস্থ করেছিলেন ঠিকই কিন্তু আবৃত্তির কোন ব্যকরনে ছিলনা বলে দর্শকদের ভিতর শুরু হয় মুখ দেখাদেখি। এমনকি মঞ্চে অতিথিরা প্রথম হাসাহাসি করলেও পরবর্তীতে তাকে সংক্ষিপ্ত করার ইংগিত দিলেও তিনি চালিয়ে যান।
আলোচনা সভার উপস্থাপনায় ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক থানা সেক্রেটারী হুমায়ুন কবির। প্রতিটি ঘোষনার আগেই তিনি চালিয়ে যান জ্বালাময়ী বক্তৃতা।
তার বক্তব্যের ধরন দেখে মনে হচ্ছিল যেন তিনি রাজনৈতিক সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন। একপর্যায়ে ঘোষনা দিতে দিয়ে তিনি মাননীয় সংসদ সদস্যকে ইংগিত করে কটুক্তি পূর্ণ বক্তব্য প্রদানের পর প্রায় ১০মিনিট বন্ধ থাকে অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি দাড়িয়ে চিৎকার করে বলে উঠেন যথাযথ মর্যাদা না দিয়ে এই প্রোগ্রামে তাকে অপমান করা হয়েছে। তখন পুরো মঞ্চে বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। মঞ্চে উপবিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকার তাকে অনেক অনুরোধ করে অনুষ্ঠানে ফিরিয়ে আনেন।
পরে অনুষ্ঠানের ঘোষক হুমায়ুন কবির তার নিকট ক্ষমা চান।
আলোচনা সভা চলাকালে মেলার পিছনে চলতে থাকে জুয়াখেলা। রিং নিক্ষেপের মাধ্যমে পন্য আয়ের এই জুয়াখেলায় অংশ নেয় কিশোর তরুন বৃদ্ধ বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ। মেলায় দর্শক সমাগম ছিল চোখে পড়ার মত। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নজরুল প্রেমী মানুষ একত্রিত হলেও শূণ্য হাতে ফিরে যায় দৌলতপুর থেকে।
জাতীয় নজরুল সমাজের সাধারন সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, এই আয়োজনটি নজরুল প্রেমীদের হতাশ করেছে। পুরো অনুষ্ঠানে ছিল না কোন শৃংখলা। নজরুল মেলা উপলক্ষে কুমিল্লায় জাতীয়ভাবে নজরুলকে নিয়ে যারা কাজ করে সেই সব শিল্পী, গবেষক, সাহিত্যিকদের সম্মিলন ঘটানো যেত। তাতে কুমিল্লায নজরুলের অবস্থান ও ইতিহাসকে জাতীর সামনে আরো ষ্পষ্ট করে তুলে ধরা যেত।
অনুষ্ঠানের ঘোষক হুমায়ুন কবির বলেন, এখানে যারা আজ বক্তব্য রাখছেন তারা সবাই আজ রাজকীয় বক্তব্য দিয়ে চলে যাবেন।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কেউই নজরুলের স্মৃতি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখছেন না।
রিপোর্ট- বিশেষ প্রতিনিধি, সম্পাদনা- ডেস্ক এডিটর ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।