নির্বাচন নিয়ে পুরোপুরি মিথ্যাচার হচ্ছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা বলে দশম নির্বাচন করা হবে, ১১তম নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের অর্থ হচ্ছে জনগণের মতামত প্রকাশ করা, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় কোনো দল সরকার গঠন করবে। সেটা কোনো খেলার বিষয় নয়। দশম নির্বাচনের যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে সাংবিধানিকভাবে কোনো জটিলতা নেই।
নির্বাচনের প্রথম শর্ত হচ্ছে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আমার বিরুদ্ধের কেউ ক্ষমতা নেবে, তাকে জনগণ ভোট দেবে সেটা হতে পারে। কিন্তু সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে তা গ্রহণযোগ্য হবে। বর্তমান নির্বাচনে সেই গ্রহণযোগ্যতাই নেই।
ড. শাহদীন মালিক বলেন,প্রচার চালানো হচ্ছে যে কোনো উপায়ে এই নির্বাচন করে পরবর্তী নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে অবাধ নির্বাচন করা হবে।
এটা পুরোপুরি মিথ্যাচার। কারণ একবার অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে দ্বিতীয়বার আরও বেশি অগ্রহণযোগ্য কিছু করা হবে না তার নিশ্চয়তা কি? আইনি অভিজ্ঞতায় বলা হয়, কেউ একবার অপরাধ করে দ্বিতীয়বার সুযোগ পেলে আরও বড় ধরনের অপরাধ করতে পারে। এ ছাড়া আইনগতভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতাকে আরও নিরঙ্কুশ করবে না তা কীভাবে বলা যায়। ক্ষমতায় থাকতে হলে সবার আগে জনগণের আস্থা থাকতে হবে। আস্থা হারালেই ক্ষমতায় থেকে সরে যেতে হবে।
অনেক দেশেই এ জন্য মধ্যবর্তী নির্বাচন হয়। আমাদের এটা তো মধ্যবর্তী নির্বাচন নয়।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহদীন মালিক বলেন, সরকারের এটা হচ্ছে মাস শেষে পয়সা নেই তাই ঘুষ খেলাম আগামী মাস থেকে আর খাব না। কিন্তু ঘুষ খাওয়া আর বন্ধ হবে না। তাই আপাতত একটি প্রচারণা চালিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, একদিকে মৌলবাদ ও গণতন্ত্র। মৌলবাদ ক্ষমতায় আসবে এ জন্য গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হবে এটা কিছুতেই হতে পারে না। প্রহসন করে মৌলবাদকে আরও উসকে দেওয়া হচ্ছে। গণতান্ত্রিকভাবে যে ক্ষমতায় আসুক তাকেই মেনে নিতে হবে এবং গণতান্ত্রিকভাবেই মৌলবাদকে পরাস্ত করা সম্ভব।
বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে গৃহযুদ্ধ, চরম সংঘাত, তা ছড়িয়েছে নেতাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে।
আমাদের নেতারাও একই ধরনের নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিচ্ছেন। এ নির্বুুদ্ধিতার কারণে দেশের সংকট আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। মৌলবাদ উসকে দিয়ে দেশকেই ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। এর থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া এ পরিস্থিতির কোনো সমাধান নেই। অন্য কেউ ক্ষমতায় এলেও সংকট আরও বাড়বে।
আর্মিও যদি ক্ষমতায় আসে আর যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করে দেয় সেটা আমিসহ গণজাগরণ মঞ্চের তরুণ, দেশের অনেক লোক মানবে না। আর জামায়াত তাদের সহিংসতা বন্ধ করবে না। অর্থাৎ সংকট থেকেই যাবে। তাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো ছাড় দেওয়ার কথা ধাপ্পাবাজি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।