আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাবা খুব সরল ছিলেন: ফাহমিদা

গ্লিটজ: ছোটবেলায় বাবা মাহমুদ উন নবীর সঙ্গে কাটানো সময়ের কিছু গল্প আমাদের শোনাবেন কি?
ফাহমিদা: বাবা খুব স্নেহপ্রবণ ছিলেন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাবার সঙ্গে রেওয়াজ করতাম। রেওয়াজের ফাঁকে বাবা যখন সুর বাঁধতেন, তখন বলতেন, “এই নুমা, এই গানটা তুলে নে তো দেখি। ”
এমনি করে বাবার কত গান তুলে নিয়েছি। স্কুলবেলাতেই বাবার সঙ্গে রেকর্ডিং স্টুডিওতে যেতাম।


বাবার বিনয়ী স্বভাবের জন্য সবাই তাকে খুব পছন্দ করতেন। তারা বলতেন, “নবী ভাই, আপনি যা বলেন সেটাই হবে। ”
বাবার জন্য মানুষের এত ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হতাম।
গ্লিটজ: বাবার সঙ্গে প্রথম কবে গান করেছিলেন?



ফাহমিদা: বাবার সুরে প্রথম গান করেছিলাম রেডিওতে। বছরটি মনে নেই।

তবে বিটিভির ‘মালঞ্চ’ অনুষ্ঠানের কথা মনে আছে।
১৯৭৮ সালের কথা। একজন শিল্পীর পাঁচটি গান নিয়ে এ অনুষ্ঠানে বাবার সঙ্গে প্রথমবারের মতো পারফর্ম করি। বাবার সঙ্গে গেয়েছিলাম ‘আয় খুকু আয়’ এবং ‘দুই চোখে মেঘ জমেছে’ গান দুটি। এরপর বাবার সংগীতায়োজনে আরও একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলাম।

এরপর টিভি ও রেডিওতে নিয়মিত হয়ে পড়ি।
গ্লিটজ: আপনার সংগীতজীবনে বাবার প্রভাব কতটুকু?
ফাহমিদা: গাইতে গাইতে একসময় আমার মনে হল, আমি শুধু গান করব। অন্যকিছুতেই আমার মন বসে না। বাবা জানতে পেরে আমার জন্য গুরুও ঠিক করে দিয়েছিলেন। বাবা কখনও নিজের সিদ্ধান্ত আমাদের ভাইবোনদের উপর চাপিয়ে দিতেন না।

বাবা সবসময় উৎসাহ দিতেন।
গ্লিটজ: গানের ক্ষেত্রে বাবার কোনদিকটি আপনাকে মুগ্ধ করেছে বেশি?



ফাহমিদা: বাবার গায়কীর মেলোডি ও উপস্থাপনার ভঙ্গি ছিল অসাধারণ। মাইক্রোফোন ছাড়াই তিনি এমনভাবে গাইতে পারতেন যে মনে হত, বাবা মাইক্রোফোন নিয়ে গাইছেন। এ ব্যাপারটি খুব কম শিল্পীর মধ্যে দেখেছি আমি। তার কাছ থেকে মেলোডি ব্যাপারটি নিজের মধ্যে ধারণ করেছি।

বাবা সবসময় বলতেন, “যত বড়মাপের শিল্পী হও, সবসময় বিনয়ী থাকবে। ”
বাবার সেই আদেশ এখনও মেনে চলছি।
গ্লিটজ: গানের মানুষ মাহমুদ উন নবী ব্যক্তিজীবনে কেমন ছিলেন?
ফাহমিদা: শিল্পী মাহমুদ উন নবী ব্যক্তিজীবনে একদমই আলাদা। তার চাওয়া পাওয়াগুলো ছিল খুব সীমিত। তিনি জানতেন, তাকে কী করতে হবে।


গ্লিটজ: ভীষণ অভিমানী ছিলেন মাহমুদ উন নবী। এই অভিমানের কারণ কী?



ফাহমিদা: ১৯৭৬ সালে ‘দ্য রেইন’ সিনেমার জন্য জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তির পর বাবা আশা করেছিলেন, সিনেমার গানে আরও বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। দুর্ভাগ্য, বাবা সেভাবে ডাক পাননি। বাবার সমসাময়িক অনেক সংগীত পরিচালক চাইতেন না, বাবা সেভাবে নাম করুক। তারা চাইতেন, বাবা যেন খুব বেশি সিনেমাতে গান করার সুযোগ না পান।

একুশে পদক দেওয়ার কথা থাকলেও পরে তা বাতিল করেছিল তৎকালীন সরকার। এসব নিয়ে বাবা ভীষণ হতাশ ছিলেন।
গ্লিটজ: তার গানগুলো সংরক্ষণে কী উদ্যোগ নিয়েছেন?
ফাহমিদা: বাবার গানগুলো নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম প্রকাশের ইচ্ছা অনেকদিনের। কিন্তু এ অ্যালবামের জন্য স্পন্সর হিসেবে কাউকে পাচ্ছি না। স্পনসর পেলেই অ্যালবামের কাজ পুরোদমে শুরু করব।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.