প্রতিটি জিনিসের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য বোঝার ক্ষমতা মানুষের নেই , যদি কোনো মানুষের থেকে থাকে তবে সে মহামানব নয়ত মহাবেকুব ।
বাংলাদেশকে ছোট রাষ্ট্র পেয়ে ভারতীয় বিএসএফ রা ফেলানীকে গুলি করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে কাঁটাতারের বেড়ায় । ফেলানী হত্যার বিচার করেনি ভারত । ফেলানি হত্যা মামলায় সহায়তা করতে পারেনি কোনো মানবাধিকার সংস্থা ও । অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের কূটনীতিক দেবযানীকে হাতকড়া পড়িয়ে উলঙ্গ করে গোটা পৃথিবীর কাছে বেইজ্জতি করলো নিউইয়র্ক পুলিশ ।
এটা থেকে কি বোঝা যায় ? এই নয় কি যে , ছোট রাষ্ট্রগুলোর প্রতি বড় রাষ্ট্রের এক প্রকার অঘোষিত অধিকার থাকবেই ? হোক সেটা অনধিকার চর্চা ।
পাকিস্তান দূতাবাস
ঘেরাও করল গণজারণমঞ্চ । ভাল
কথা । পাকিস্তান কেন বাংলাদেশের কোনো বিষয়ে নাক গলাতে যাবে । প্রতিবাদ করা অবশ্যয় যুক্তিসঙ্গত ।
কিন্তু প্রতিদিন
সীমান্তে মানুষগুলোকে গুলি করে মারছে ভারতীয়
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ , এতদিনে তো দেখলাম না কোনো প্রতিবাদ ? কোনো দিন কোন উত্তপ্ত রক্তের তরুন প্রতিবাদী দল
বললো না ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও
করা হবে ?
আমরা যারা দ্বিতীয় প্রজম্মের মুক্তিযোদ্ধা ! তারাও তো
প্রতিবাদ করলাম না ।
গণজারণমঞ্চের কর্মসূচি দেখলাম না । সীমান্তের
মানুষগুলো কি আমাদের মত বাংলাদেশী না ? তারা কি 'এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার পাঁচশ সত্তর' বর্গকিলোমিটারের বাইরে ?
ইমরান ভাই - লাকি আপারা তো প্রতিবাদ
করলো না । তারা তো চিল্লায়ে স্লোগান দিল না 'ফেলানি হত্যার বিচার চাই , বিচার চাই । '
খুঁজে দেখলে হয়ত দেখা যাবে যে বিজয় দিবসেও ভারতীয়
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের
হাতে অপহরণ হয়েছে কোনো না কোনো বাংলাদেশী ।
আমরা কি ভারতকে ভয় পাই ? নাকি যুদ্ধে আমাদের সহায়তা করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে তাদের কাছে বেঁচে দিয়েছি বাংলাদেশের স্বাধীনতা কে ! আমরা কি সত্যিই স্বাধীন ? নাকি পরাধীনতার অদৃশ্য শিকলে এখনও বন্দী আমরা ?
'স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন । ' কথাটার মানে বুঝতাম না ছোটবেলায় , এখন বুঝি । রাজাকার বলতে আমরা শুধু পাকিস্তানের দালালদেরকেই চিনি । তাহলে ভারতের দালালদের কি নামে ডাকব আমরা ? শুভেচ্ছা দূত , নাকি বিশিষ্ট কূটনৈতিক সদস্য ? অন্যান্য দেশ আমাদের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে নাক গলানোর সাহস পায় কোথা থেকে ? আমরা ছোট বলে কি সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত যোগ্যতা আমাদের নেই ? আমি তো বলব , দেশ সেদিন ই পূর্নাঙ্গ স্বাধীন হবে যেদিন পাকিস্তানি রাজাকার এবং ভারতীয় প্রভাব মুক্ত হবে এ দেশ , যেদিন বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষীরা বিএসএফদের দিকে আঙ্গুল তুলে বলতে পারবে যে 'আর একটা লাশ পড়লে প্রত্যেক বিন্দু রক্ত কণার হিসেব দিতে হবে । '
ফেলানীদের মত আরো বহু সীমান্তবাসী বিএসএফের নির্মমতার , বর্বরতার শিকার হয় ।
কারোর কারোর লাশ ফেলানীর মত কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকে প্রিয়জনদের অপেক্ষায় আর কারোর কারোর লাশ অবহেলায় পড়ে থাকে সীমান্ত মধ্যবর্তী অঞ্চলে অথবা বিএসএফের বেঁড়াজালের আড়ালে । আকাশে শকুন ওড়ে , পঁচে গলে গন্ধ বের হয় বিকৃত লাশের । কিন্তু সেই গন্ধ আমাদের মত 'রাজাকারের ফাঁসি চাই , ফাঁসি চাই' স্লোগানধারীদের নাক পর্যন্ত পৌছায় না , কানে এসে পৌছায় না শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পূর্বে বেঁচে থাকার আকুতি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।