থেমে যাবো বলে তো পথ চলা শুরু করিনি।
নিউ ইয়র্কে ভারতীয় কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানী খোবরাগাদেকে (৩৯) নিয়ে যে কাহিনী তা বিস্তারিত না জেনেই আমাদের অনেকেই ভারতকে খুব বাহবা দিয়েছেন। কিন্তু আমার কাছে প্রথম থেকেই মনে হয়েছে, এর পেছনে অন্য কোন কারণ আছে। আর তা জানা গেল খুব সহসাই।
এই ঘটনার মূলে আছে উক্ত কূটনীতিক এবং উনার গৃহকর্মী সংগীতা।
নীচের ঘটনাক্রম পড়লেই সব পরিস্কার বোঝা যাবে।
দেবযানী মামলা প্রসঙ্গে ম্যানহাটানের অ্যাটর্নি প্রীত ভারারা জানান, সংগীতা ও তাঁর পরিবারের মুখ বন্ধ রাখতে ভারত আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ ছাড়া তাদের ভারতে ফিরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে যখন তাঁর বিষয়ে একটি মামলা চলছে তখন ভারত তাঁকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বাদীর নিরাপত্তা বিধান করা তাদের দায়িত্ব।
এ বিষয়টি মার্কিন ও ভিনদেশি সব নাগরিকের বেলায় প্রযোজ্য।
গত ২৩ জুন সবজি কেনার কথা বলে দেবযানীর বাড়ি থেকে বের হন সংগীতা। এরপর আর ফেরেননি।
পরদিন (২৪ জুন) দেবযানী বিষয়টি লিখিত আকারে নিউ ইয়র্কের পররাষ্ট্র মিশনকে জানান।
২৫ জুন তিনি বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানান এবং সংগীতাকে খুঁজে বের করার অনুরোধ করেন।
এরপরে গত ১ জুলাই সংগীতার আইনজীবী পরিচয়ে এক নারী দেবযানীকে ফোন করেন। ওই নারী বলেন, কয়েকটি শর্ত মানলে তাঁর মক্কেল (সংগীতা) আদালতে যাবেন না; প্রথমত, যদি দেবযানী সংগীতাকে চাকরিচ্যুত করেন এবং তাঁর সরকারি ভিসাকে সাধারণ ভিসায় পরিবর্তন করে দেন। পাশাপাশি সংগীতাকে দিনে ১৯ ঘণ্টা কাজ করানো হয়েছে। বাড়তি সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
পরদিন [২ জুলাই] সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেবযানী বিষয়টি জানান।
৫ জুলাই সংগীতার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এনে নিউ ইয়র্ক পুলিশে তিনি অভিযোগ করেন।
১৫ থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে দেবযানীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন সংগীতা।
৩০ জুলাই ওই অভিযোগের একটি কপি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই সময় বলা হয়, সংগীতা স্থানীয় পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
২০ সেপ্টেম্বর দিল্লি হাইকোর্ট আদেশ দেন, ভারতের বাইরে কোনো আদালতে সংগীতা ও তাঁর পরিবার দেবযানীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে পারবে না। এর আগে ভারত সংগীতার লিখিত অভিযোগের কপি চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি দেয়।
২১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র এ কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করে।
১৯ নভেম্বরে সংগীতার বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দিল্লি কোর্ট।
৬ ডিসেম্বর ওই আদেশ মার্কিন দূতাবাসে পাঠানো হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
১২ ডিসেম্বর ভিসা জালিয়াতি ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে দেবযানীকে গ্রেপ্তার করে মার্কিন পুলিশ।
১৭ ডিসেম্বর মুচলেকা দিয়ে জামিন পান দেবযানী।
এরই মধ্যে মার্কিন কর্তৃপক্ষ গত ১০ ডিসেম্বর সংগীতার পরিবারকে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যায়। তারা বলছে, সংগীতার পরিবারের মুখ বন্ধ রাখতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত।
তবে ভারত বলছে, তাদের নাগরিককে এভাবে নিয়ে যাওয়ার অধিকার কোনো দেশের নেই।
সূত্র
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।