আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শয়তানের রাজা চিন্তিত !

অযথা ঝগড়া বিবাদ ভাল লাগে না। শিক্ষা বলতে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়। সু শিক্ষা চাই সর্বত্র।



রাত তখন ১১ টা। শয়তান রাজ্যের প্রধান কয়েকজন উপদেষ্টা নিয়ে সাধারন শয়তানদের আবাসস্থল ঘুরে দেখছেন।

বেশীর ভাগ কক্ষ খালি থাকলেও কয়েকটি কক্ষে কয়েকজনকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে গর্জে উঠে শয়তানের রাজা। হুংকার দিয়ে বলে, মন্ত্রী রাত হল এত, ঘুমায় এরা কত। কে আছিস ওদের কর আটক, ধরে নিয়ে খোল ফটক। কাল দুপুর গড়িয়ে বিকেলে, ওদের বিচার হবে দে বলে।

পরের দিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল ছুঁই ছুঁই করছে।

একটি বিশাল মাঠে শত শত শয়তান একত্রিত হয়েছে। এক পাশে কয়েকজনকে বেঁধে রাখা হয়েছে। রাজকীয় একটি চেয়ারে বসে আছে শয়তান প্রধান। তার পরনে আজ গোলাপী রঙ্গের সুতি কাপড়ের সাফারি।
বেশ রাগের সাথে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এই বন্দী শয়তানের দল, কাজের সময় ঘুমিয়ে ছিলে কেন- বল।

তোমরা যদি থাক ঘুমিয়ে, মানুষকে কু মন্ত্র দেবে কে গিয়ে?
বন্দী শয়তানরা রাজার হুংকারে চুপসে গেছে। তারা কোন কথা বলল না। আর তারা জানে কথা বলে লাভ নেই। কেননা শয়তানের রাজ্যে রাজা যা বলে তাই আইন। এখানে অন্যদের কোন মত নেই।



রাজা আবার বলে উঠল শোন বন্দীরা, তোমাদেরকে শাস্তি হবে উচ্চতক, খুঁজে বের করিব তন্ত্রমন্ত্রক। বোতলে ভরিবে তারা , বায়ু থেকে দূরে থাকিবে তোমরা।
এবার কেঁদে উঠল বন্দীরা। তার আঁকুতি করে বলে উঠল- রাজা মশাই করিব আপনাকে সন্তুষ্ট, দিবেন না এই কষ্ট। তাদের কান্না দেখে স্বজনরা কেঁদে উঠল।


এ দেখে কিছুটা বিব্রতবোধ করল শয়তান প্রধান। কিছুক্ষন ভেবে তিনি বলে উঠলেন, আমি কিছুটা গোয়াঁড় ,তাই তোমাদেরকে দিব ক্রসফায়ার।

এবার আরো জোরে কাঁদতে শুরু করলো বন্দী ও তাদের স্বজনরা। তা দেখে শয়তান প্রধান তার এক উপদেষ্টার সাথে কথা বলল। তিনি চুপিচাপি বললেন, রাজা মশাই প্রয়োজন কি বলার, হয়ে যাবে গুম, ডাকেন কিলার।

রাজা মাথা নাড়লেন। হু উত্তম বুদ্ধি।
এরই মধ্যে সাধারন শয়তানদের মাঝে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। রাজা ধমক দিলেও গুঞ্জন পুরোপুরি থামল না। একজন হাত তুল কথা বলার অনুমতি চাইল।

রাজা প্রশ্ন করল তুমি কে হে ?
হাত উত্তলনকারী বলল, আমি শয়তান অধিকার ফোরামের নেতা, আমার আছে কতক কথা। শয়তান প্রধান বলল- বেশ বল যথা।
ওই নেতা বলল, রাজা মশাই করেন বিচার , মান যেন হয় ইন্টার ন্যাশনাল।
রাজা বলল, পরিস্কার করিয়া বল, ইংরেজি কইয়া কর কেন ভ্যাজাল।
নেতা বলল, আটকদের মনে আছে ব্যাথা, আপনি শুনুন তাদের কথা।


শয়তান প্রধান বলল, আহা বেশ বেশ বেশ। বন্দীদের দিকে তাকিয়ে বলল, অনুমতি দিলাম, শুনাও তোমাদের কথা অশেষ।

এবার বন্দীদের একজন বলল, রাজা মশাই সেদিন রাতে ছিল না কোন কাম, তাই সকলে মিলিয়া ঘুমালাম।
রাজা ক্ষেপে গেলেন। কি কহিলা কথা, পাইলাম মনে ব্যথা।

কাম নাই শয়তানের, তবে কি মানুষ হয়ে গেল সব সত্যের ?
বন্দী বলল, বাংলাদেশে আমাদের ডিউটি, দেশটা খুব বিউটি।

রাজা বলল, বল পুরোটা , কর কেন কুটিকুটি ? তুমি কাছে আসিয়া বহ, সব কথা একাধারে কহ।

বন্দী শয়তানটি কাছে গিয়ে তাদের রাজাকে যা বলল তার সারমর্ম হল, বাংলাদেশের এতদিন তারা খুব ভাল করেই ডিউটি করছিল। সব কাজেই শয়তানের উপস্থিতি ছিল। যেমন সরকারি অফিসে ঘুষ, খাদ্যে ভেজাল, বড় বড় রাজনীতিকদের কালো বিড়াল বানানো, বিদেশে দেশের টাকা পাচার এসব শয়তানি চলছেই।

এর মধ্যে ওই দেশে এখন কিছু মানুষ শয়তান হয়ে গেছে। তারা দেশটাকে শয়তানের আখড়ায় পরিণত করেছে। ওরা যানবাহনে , মানুষের শরীরে আগুন দিচ্ছে। রেল লাইন তুলে ফেলছে। ককটেল নিক্ষেপ করে মানুষ মারছে।

ওদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু, নারী, বৃদ্ধ কিংবা যুবক। এ নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল পরষ্পরকে দোষারোপ করছে। এতে পরিস্কার যে, তাদের মধ্যেও কেউ মিথ্যা কথা বলছে। অর্থাৎ সব ক্ষেত্রে শয়তান সফল। এসব দেখে বাংলাদেশের শয়তানের ইনচার্জ মত পরিবর্তন করে অধিকাংশ শয়তানকে বিশ্রামে পাঠিয়েছে।

তবে রাজা যখন বিচারের আয়োজন করেছে তখন শয়তানের ওই ইনচার্জ তার অবস্থান পরিবর্তন করে রাজার পক্ষ নিয়েছে। শয়তানরা তাদের রাজাকে জানাল , বাংলাদেশের এক পার্টির প্রধান নাকি ক্ষনে ক্ষনে মত পাল্টায়



সব শুনে রাজা বলল, কিছু মানুষ হয়ে গেছে শয়তান, রবে কি আর ওই দেশ ফুল স্থান ? তবে আমি চিন্তিত অলস হয়ে যাচ্ছ তোমরা, এতে করে শয়তানি থেকে সরে যাব আমরা।
কিছুক্ষন চুপ থেকে খানিক বাদে রাজা বলল, বিচার এখানেই ক্ষান্ত, আমি বড় ক্লান্ত। নেক্সট আই থিংক, বের করব নতুন লিংক।

( বি.দ্র.- শয়তান গ্রীক শব্দ।

ইসলাম ধর্মে শয়তানকে ইবলিশ বলা হয়। মহান আল¬াহ ও মানুষের মাঝে বিদ্যমান সম্পর্কের ফাটল ধরাতে বিরামহীন কাজ করে শয়তান। )




 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।